রাণীনগরে খারিজ বাতিলের আবেদন করে মিলছে না প্রতিকার, হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী

  • Update Time : ০৭:১৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪
  • / 31

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে একটি খারিজ (নামজারী) বাতিলের আবেদন করে মিলছে না কোন প্রতিকার। এতে করে চড়ম হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী। প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে, ধরনা দিচ্ছেন উপজেলা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে।

বলছিলাম রাণীনগর উপজেলার গোনা গ্রামের ভুক্তভোগী মো. মজিদ রাজ ও মো. মিলন আলী রাজের কথা। তাদের অভিযোগ- দায়িত্বরত ভূমি কর্মকর্তা অভিযুক্তের সাথে যোগসাজসে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খারিজটি বাতিল না করে আবেদন নথিযাত (তদন্ত বন্ধ) করেছেন।

ভুক্তভোগী মিলন আলী রাজ জানান, রাণীনগর উপজেলার গোনা গ্রামের গাজিম উদ্দীন রাজ দিং এবং সমশের আলী রাজ দিংয়ের নামে গোনা মৌজায় আনা হিস্যায় ৬৩৩ নং আরএস খতিয়ান প্রস্তুত হয়। ওই খতিয়ানের হিস্যা মোতাবেক সমসের আলী রাজ এবং অন্যান্য ওয়ারিশগন খতিয়ানের অন্যান্য দাগ ভোগদখল করে আসছেন। সম্প্রতি আমরা ওয়ারিশগনের পক্ষ থেকে উপজেলার গোনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সম্পত্তির খাজনা দিতে গিয়ে জানতে পারি গোনা উত্তরপাড়া গ্রামের মো. মান্নান সরদারসহ কয়েকজনের নামে আমাদের ৬২ শতক সম্পত্তি খারিজ (নামজারী) হয়ে গেছে। যাহার কেস নং-১১৪৩/৯০-৯১ ও প্রস্তাবিত খতিয়ান নং-১৭২১ প্রস্তুুত হয়েছে।

তিনি জানান, খারিজের বিষয়টি আমরা জানার পর তাদের খারিজ আবেদনে জমা দেওয়া দু’টি দলিল সংগ্রহ করি। দু’টি দলিলের মধ্যে ১৯৬৮ সালের ১৪৩৮৩ নম্বর একটি দলিল। এই দলিল যাচাই করার জন্য আমরা রাজশাহী থেকে দলিলটির নকল উত্তোলন করে দেখি নকলের সঙ্গে তাদের দলিলের কোন মিল নেই। দলিলটির দাতা ও গ্রহীতা এবং উপজেলা, গ্রাম আলাদা। তাদের খারিজ আবেদনে জমা করা ১৪৩৮৩ নম্বর দলিল ভূয়া (তৈরি করা)। এরপর আমরা মান্নান সরদার দিংদের নামে হওয়া খারিজ বাতিলের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করি। যাহার বিবিধ কেস নং-১১২/২৩-২৪। এরপর সঠিকভাবে কোন তদন্ত বা শুনানি না করেই উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগসাজসে নিষ্পত্তি না করে আমাদের খারিজ বাতিলের আবেদন রহস্যজনকভাবে নথিযাত করেন।

মিলন আলী রাজ আরও জানান, ওই খারিজ বাতিলের আবেদন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি এবং ধরনা দিচ্ছি। এরপরে কোন প্রতিকার মিলছে না। এ ঘটনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে বরিবার আবারও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযোগে বিষয়ে জানতে মো. মান্নান সরদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, আমি এই উপজেলায় যোগদানের আগের ঘটনাটি এটি। আমি বিষয়টি জানার পর তাদের আবেদনের নথি দেখেছি। সেখানে আবেদন নথিযাত করা আছে। তারা (বাদী পক্ষ) যদি আপিল করেন তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসিল্যান্ড বরাবর পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাণীনগরে খারিজ বাতিলের আবেদন করে মিলছে না প্রতিকার, হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী

Update Time : ০৭:১৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে একটি খারিজ (নামজারী) বাতিলের আবেদন করে মিলছে না কোন প্রতিকার। এতে করে চড়ম হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী। প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে, ধরনা দিচ্ছেন উপজেলা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে।

বলছিলাম রাণীনগর উপজেলার গোনা গ্রামের ভুক্তভোগী মো. মজিদ রাজ ও মো. মিলন আলী রাজের কথা। তাদের অভিযোগ- দায়িত্বরত ভূমি কর্মকর্তা অভিযুক্তের সাথে যোগসাজসে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খারিজটি বাতিল না করে আবেদন নথিযাত (তদন্ত বন্ধ) করেছেন।

ভুক্তভোগী মিলন আলী রাজ জানান, রাণীনগর উপজেলার গোনা গ্রামের গাজিম উদ্দীন রাজ দিং এবং সমশের আলী রাজ দিংয়ের নামে গোনা মৌজায় আনা হিস্যায় ৬৩৩ নং আরএস খতিয়ান প্রস্তুত হয়। ওই খতিয়ানের হিস্যা মোতাবেক সমসের আলী রাজ এবং অন্যান্য ওয়ারিশগন খতিয়ানের অন্যান্য দাগ ভোগদখল করে আসছেন। সম্প্রতি আমরা ওয়ারিশগনের পক্ষ থেকে উপজেলার গোনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সম্পত্তির খাজনা দিতে গিয়ে জানতে পারি গোনা উত্তরপাড়া গ্রামের মো. মান্নান সরদারসহ কয়েকজনের নামে আমাদের ৬২ শতক সম্পত্তি খারিজ (নামজারী) হয়ে গেছে। যাহার কেস নং-১১৪৩/৯০-৯১ ও প্রস্তাবিত খতিয়ান নং-১৭২১ প্রস্তুুত হয়েছে।

তিনি জানান, খারিজের বিষয়টি আমরা জানার পর তাদের খারিজ আবেদনে জমা দেওয়া দু’টি দলিল সংগ্রহ করি। দু’টি দলিলের মধ্যে ১৯৬৮ সালের ১৪৩৮৩ নম্বর একটি দলিল। এই দলিল যাচাই করার জন্য আমরা রাজশাহী থেকে দলিলটির নকল উত্তোলন করে দেখি নকলের সঙ্গে তাদের দলিলের কোন মিল নেই। দলিলটির দাতা ও গ্রহীতা এবং উপজেলা, গ্রাম আলাদা। তাদের খারিজ আবেদনে জমা করা ১৪৩৮৩ নম্বর দলিল ভূয়া (তৈরি করা)। এরপর আমরা মান্নান সরদার দিংদের নামে হওয়া খারিজ বাতিলের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করি। যাহার বিবিধ কেস নং-১১২/২৩-২৪। এরপর সঠিকভাবে কোন তদন্ত বা শুনানি না করেই উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগসাজসে নিষ্পত্তি না করে আমাদের খারিজ বাতিলের আবেদন রহস্যজনকভাবে নথিযাত করেন।

মিলন আলী রাজ আরও জানান, ওই খারিজ বাতিলের আবেদন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি এবং ধরনা দিচ্ছি। এরপরে কোন প্রতিকার মিলছে না। এ ঘটনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে বরিবার আবারও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযোগে বিষয়ে জানতে মো. মান্নান সরদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, আমি এই উপজেলায় যোগদানের আগের ঘটনাটি এটি। আমি বিষয়টি জানার পর তাদের আবেদনের নথি দেখেছি। সেখানে আবেদন নথিযাত করা আছে। তারা (বাদী পক্ষ) যদি আপিল করেন তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসিল্যান্ড বরাবর পাঠানো হয়েছে।