বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে বেনাপোলে দোয়া অনুষ্ঠিত

  • Update Time : ০৩:৩৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • / 67

মো. সাহিদুল ইসলাম শাহীনঃ-কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় “বাহাদুরপুর সোনামূখী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়” প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। ঐ স্কুলের নবীণ এবং প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সকল শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।

শনিবার(১৭ আগষ্ট) বেলা ১২টায় অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক-মোস্তাফিজুর রহমান টিংকু’র নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন ঐ স্কুলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক-রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-শার্শা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান-আসাদুজ্জামান(সাগর)।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-মাওলানা মো.ইউসুফ আলী(সহঃ শিক্ষক,বেনাপোল মহিলা আলিম মাদ্রাসা),মাওলানা মো.মুস্তাকিন হুসাইন(ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া),বিদ্যোৎসাহী মো.রেজাউল করিম(বুজতলা বাসিন্দা)। শিক্ষার্থী-মো.তুহিন হোসেন,মো.দেলোয়ার হোসেন,শিমুল হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেষে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট দাড়িয়ে নিরবতা পালণ করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের আত্মৎসর্গের কথা উপস্থাপণ করেন-মোস্তাফিজুর রহমান টিংকু।

মাসাধিক ব্যাপি ছাত্র আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের স্মরণ করে প্রধান অতিথি-আসাদুজ্জামান সাগর বলেন-“কুড়ি দিন ব্যাপক সহিংসতায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু এবং প্রবল গণআন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ অগাস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যায়।
সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন এবং প্রতিটি মৃত্যু তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ছাত্রদের বিক্ষোভ শুরু হয় সরকারী চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে, কিন্তু সরকার সহিংসতা দিয়ে ছাত্রদের দমন করার চেষ্টা করলে সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলনে যোগ দেয়। সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনে স্বৈরচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে”।

অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন -মো.শাহাবুদ্দীন(প্রাক্তন শিক্ষার্থী,অত্র বিদ্যালয়)।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে চার দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি দেয়। ২ থেকে ৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করে। দীর্ঘ আন্দোলণ শেষে
৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সরকার পদত্যাগের এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করেন। এক দফা ঘোষণার সময় শহীদ মিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য সমন্বয়করা। তারা হলেন- সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও আবদুল কাদের। শুরুতে ৬ই আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন “লং মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচি ঘোষণা করে। তবে এই পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্বনয়করা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে এনে ৫ই আগস্ট ঘোষণা করে। আন্দোলনকে ঘিরে ৫ আগস্ট অনেক জেলায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, এতে ৯৮ জন সাধারন মানুষ ও পুলিশ নিহত হয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ১ দফা দাবির প্রেক্ষিতে সম্মিলিত ছাত্র-জনতার এক গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করেন এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন। তার ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে বেনাপোলে দোয়া অনুষ্ঠিত

Update Time : ০৩:৩৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

মো. সাহিদুল ইসলাম শাহীনঃ-কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় “বাহাদুরপুর সোনামূখী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়” প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। ঐ স্কুলের নবীণ এবং প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সকল শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।

শনিবার(১৭ আগষ্ট) বেলা ১২টায় অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক-মোস্তাফিজুর রহমান টিংকু’র নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন ঐ স্কুলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক-রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-শার্শা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান-আসাদুজ্জামান(সাগর)।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-মাওলানা মো.ইউসুফ আলী(সহঃ শিক্ষক,বেনাপোল মহিলা আলিম মাদ্রাসা),মাওলানা মো.মুস্তাকিন হুসাইন(ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া),বিদ্যোৎসাহী মো.রেজাউল করিম(বুজতলা বাসিন্দা)। শিক্ষার্থী-মো.তুহিন হোসেন,মো.দেলোয়ার হোসেন,শিমুল হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেষে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট দাড়িয়ে নিরবতা পালণ করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের আত্মৎসর্গের কথা উপস্থাপণ করেন-মোস্তাফিজুর রহমান টিংকু।

মাসাধিক ব্যাপি ছাত্র আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের স্মরণ করে প্রধান অতিথি-আসাদুজ্জামান সাগর বলেন-“কুড়ি দিন ব্যাপক সহিংসতায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু এবং প্রবল গণআন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ অগাস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যায়।
সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন এবং প্রতিটি মৃত্যু তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ছাত্রদের বিক্ষোভ শুরু হয় সরকারী চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে, কিন্তু সরকার সহিংসতা দিয়ে ছাত্রদের দমন করার চেষ্টা করলে সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলনে যোগ দেয়। সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনে স্বৈরচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে”।

অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন -মো.শাহাবুদ্দীন(প্রাক্তন শিক্ষার্থী,অত্র বিদ্যালয়)।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে চার দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি দেয়। ২ থেকে ৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করে। দীর্ঘ আন্দোলণ শেষে
৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সরকার পদত্যাগের এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করেন। এক দফা ঘোষণার সময় শহীদ মিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য সমন্বয়করা। তারা হলেন- সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও আবদুল কাদের। শুরুতে ৬ই আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন “লং মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচি ঘোষণা করে। তবে এই পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্বনয়করা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে এনে ৫ই আগস্ট ঘোষণা করে। আন্দোলনকে ঘিরে ৫ আগস্ট অনেক জেলায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, এতে ৯৮ জন সাধারন মানুষ ও পুলিশ নিহত হয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ১ দফা দাবির প্রেক্ষিতে সম্মিলিত ছাত্র-জনতার এক গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করেন এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন। তার ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটে।