কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘অল-আউট অ্যাকশন’-এ যাবে র‌্যাব

  • Update Time : ০৫:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / 71

র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশ হচ্ছে মাদকের একটি ট্রানজিট রোড। এর থেকে যদি বাঁচতে হয়, তবে আমাদের সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া মাদক এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘অল-আউট অ্যাকশন’-এ যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তিউনিসিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় শনাক্ত
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় শহীদ মিনারে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এম খুরশীদ হোসেন বলেন, আমাদের মূল কাজ হচ্ছে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। সমাজ ব্যবস্থা যেন সুন্দরভাবে পরিচালনা হতে পারে, সমাজের মানুষ যেন কোনো প্রকার হুমকির মধ্যে না থাকেন সেটি নিশ্চিত করা।

র‌্যাব ডিজি বলেন, আপনারা জানেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে এই কিশোর গ্যাং এর বিস্তার খুব বেড়ে গিয়েছিল, যেখানে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, এসব কিশোর গ্যাং এর কেউ না কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা আছেন। এরা সব সময় থাকে, অতীতেও ছিল এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা চেষ্টা করছি কিশোর গ্যাং সমূলে কিভাবে বিনাশ করা যায়, পাশাপাশি যারা এদের পরিচালনা করছে আমরা তাদেরকেও আইনের আওতায় আনবো।

এম খুরশীদ বলেন, মাদকের বিষয়ে কিছু দিন আগেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিটিং হয়েছে। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে সকল বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। মাদকের বিষয়টি এমন হয়েছে যে শুধু পুলিশ-র‌্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দিয়ে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেক বেআইনি পদক্ষেপও নিয়েছে। কিন্তু আমরা সেই পথে যাচ্ছি না, আইনের মধ্যে থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।

র‌্যাব প্রধান বলেন, দেশে যখন জঙ্গী উত্থান হয়েছিল, আমরা তখন দল মত নির্বিশেষে সামাজিকভাবে এর মোকাবিলা করলাম তখন কিন্তু জঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। সেভাবে মাদকও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশে মাদক আসতো স্থল পথে। তখন বেশি প্রচলন ছিল ফেনসিডিল ও হেরোইনের। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলো তারপরে কিন্তু বাংলাদেশে ফেনসিডিল আসা বন্ধ হয়েছে। কারণ তখন ভারতের বর্ডার এলাকাগুলোতে ফেনসিডিলের কারখানা ছিল। এরপরেই বাংলাদেশ ফেনসিডিলের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। স্থল পথে রাজশাহীর চারঘাট, বাগমারা এলাকা দিয়ে গোদাগাড়ীর ওদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর কুমিল্লা বিভিন্ন জায়গা দিয়ে মাদকগুলো আসতো। এখন শুধুমাত্র ফেনসিডিল নয় অনেক বিপজ্জনক মাদক বাংলাদেশে আসছে বিভিন্ন স্থলপথ- বর্ডার এলাকা দিয়ে, জলপথ ও আকাশপথেও আসছে।

এদিন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের লেখা ‘মাদকের সাতসতেরো: বাংলাদেশের বাস্তবতা ও সমাধানসূত্র’ এবং ‘কিশোর গ্যাং: ‘কীভাবে এলো, কীভাবে রুখব’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন র‌্যাব ডিজি।

বই দুটি নিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি এ ধরনের বই কিশোরদের কাছে পৌঁছে দেয়া যেতে পারে। পাঠ্য বইয়ে মাদকের কুফল, কিশোর গ্যাং এর কুফলের বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে অপরাধ কমে যাবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘অল-আউট অ্যাকশন’-এ যাবে র‌্যাব

Update Time : ০৫:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশ হচ্ছে মাদকের একটি ট্রানজিট রোড। এর থেকে যদি বাঁচতে হয়, তবে আমাদের সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া মাদক এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘অল-আউট অ্যাকশন’-এ যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তিউনিসিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় শনাক্ত
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় শহীদ মিনারে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এম খুরশীদ হোসেন বলেন, আমাদের মূল কাজ হচ্ছে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। সমাজ ব্যবস্থা যেন সুন্দরভাবে পরিচালনা হতে পারে, সমাজের মানুষ যেন কোনো প্রকার হুমকির মধ্যে না থাকেন সেটি নিশ্চিত করা।

র‌্যাব ডিজি বলেন, আপনারা জানেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে এই কিশোর গ্যাং এর বিস্তার খুব বেড়ে গিয়েছিল, যেখানে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, এসব কিশোর গ্যাং এর কেউ না কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা আছেন। এরা সব সময় থাকে, অতীতেও ছিল এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা চেষ্টা করছি কিশোর গ্যাং সমূলে কিভাবে বিনাশ করা যায়, পাশাপাশি যারা এদের পরিচালনা করছে আমরা তাদেরকেও আইনের আওতায় আনবো।

এম খুরশীদ বলেন, মাদকের বিষয়ে কিছু দিন আগেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিটিং হয়েছে। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে সকল বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। মাদকের বিষয়টি এমন হয়েছে যে শুধু পুলিশ-র‌্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দিয়ে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেক বেআইনি পদক্ষেপও নিয়েছে। কিন্তু আমরা সেই পথে যাচ্ছি না, আইনের মধ্যে থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।

র‌্যাব প্রধান বলেন, দেশে যখন জঙ্গী উত্থান হয়েছিল, আমরা তখন দল মত নির্বিশেষে সামাজিকভাবে এর মোকাবিলা করলাম তখন কিন্তু জঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। সেভাবে মাদকও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশে মাদক আসতো স্থল পথে। তখন বেশি প্রচলন ছিল ফেনসিডিল ও হেরোইনের। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলো তারপরে কিন্তু বাংলাদেশে ফেনসিডিল আসা বন্ধ হয়েছে। কারণ তখন ভারতের বর্ডার এলাকাগুলোতে ফেনসিডিলের কারখানা ছিল। এরপরেই বাংলাদেশ ফেনসিডিলের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। স্থল পথে রাজশাহীর চারঘাট, বাগমারা এলাকা দিয়ে গোদাগাড়ীর ওদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর কুমিল্লা বিভিন্ন জায়গা দিয়ে মাদকগুলো আসতো। এখন শুধুমাত্র ফেনসিডিল নয় অনেক বিপজ্জনক মাদক বাংলাদেশে আসছে বিভিন্ন স্থলপথ- বর্ডার এলাকা দিয়ে, জলপথ ও আকাশপথেও আসছে।

এদিন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের লেখা ‘মাদকের সাতসতেরো: বাংলাদেশের বাস্তবতা ও সমাধানসূত্র’ এবং ‘কিশোর গ্যাং: ‘কীভাবে এলো, কীভাবে রুখব’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন র‌্যাব ডিজি।

বই দুটি নিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি এ ধরনের বই কিশোরদের কাছে পৌঁছে দেয়া যেতে পারে। পাঠ্য বইয়ে মাদকের কুফল, কিশোর গ্যাং এর কুফলের বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে অপরাধ কমে যাবে।