নীলফামারীর ডোমারে এক ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ

  • Update Time : ০১:০৫:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩
  • / 204

মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর ডোমার উপজেলা সদরের উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন অবস্থিত ‘ডোমার জেনারেল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার”। রোববার সকালে পেটে ব্যথা নিয়ে উক্ত ক্লিনিকে আসেন ১৩ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রী। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মেয়েটির আলট্রাসনোগ্রাফি ও ইউরিন টেস্ট করান। পরীক্ষায় মেয়েটির গর্ভবতী হওয়ার ভুল রিপোর্ট দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টা হতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ক্লিনিকটি অবরোধ করে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তারা ।
অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসা পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী এক শিশু রবিবার বিকালে পেটে ব্যাথা অনুভব করলে ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাকে নিয়ে যায় পরিারের লোকজন। ওই ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি ও প্রসাব পরিক্ষা করে শিশুটি গর্ভবতী বলে রিপোর্ট দেয়। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবারের লোকজনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। অবিবাহিত এতো ছোট একটি মেয়ে কিভাবে গর্ভবর্তী হয়? রাতে তারা অন্য আরো দু’টি ক্লিনিকে গিয়ে একই পরিক্ষা করে জানতে পারে, তাদের মেয়ে গর্ভবর্তী না।
মেয়েটির বড় বোন বলেন, আমার বোন ওই রিপোর্ট শুনার পর শুধু কাঁন্না করছে। কোন খাওয়া দাওয়া করছে না। সে অস্বাভাবিক আচরণ করায় আমরা সারারাত তাকে পাহারা দিয়েছি। কিন্তু সে বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না ।
মেয়েটির নানী বলেন, পরিক্ষা নিরিক্ষার পর ডিএনসি করার জন্য ক্লিনিকের লোকজন আমার কাছে সাড়ে তিন হাজার টাকা চেয়েছে। গরিব মানুষ টাকা টাকা জোগাড় করতে না পারায় ডিএনসি করতে পারি নাই। এলাকাবাসী অনেকে আবার অন্য ক্লিনিকে পরিক্ষার করার কথা বললে, আমরা আরো দু’টি ক্লিনিকে পরিক্ষা করে উল্টো রিপোর্ট পাই। পরে জানতে পারি ওই ক্লিনিকে নাকি ডাক্তার থাকে না। নার্স ও ওয়ার্ডবয় দিয়ে পরিক্ষা ও অপারেশন করা হয়।
মেয়েটির মামা বলেণ, বিভিন্ন মানুষের মাধ্যমে মিমাংসা করার জন্য আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে। আমি ওই ক্লিনিকটি বন্ধের দাবী করছি।
ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর ইসলাম বলেন, ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা আলট্রাসনোগ্রাফি করেছে। আর প্যাথলোজি ট্যাকনোলোজিস্ট লক্ষন রায় প্রসাব পরিক্ষা করে গর্ভবতী হওয়ার রিপোর্ট দিয়েছে। হয়তো তারা ভুল রিপোর্ট দিয়েছে।
ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা বলেন, মেশিনের সমস্যার কারণে আলট্রাসনোগ্রাফির ভুল রিপোর্ট এসেছে।
টেকনোলোজিস্ট লক্ষন রায় বলেন, ওই ক্লিনিকে আমি কোন প্রসাব পরিক্ষা করি নাই। হয়তো ক্লিনিকের কেউ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত রিপোর্ট পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নীলফামারীর ডোমারে এক ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ

Update Time : ০১:০৫:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর ডোমার উপজেলা সদরের উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন অবস্থিত ‘ডোমার জেনারেল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার”। রোববার সকালে পেটে ব্যথা নিয়ে উক্ত ক্লিনিকে আসেন ১৩ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রী। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মেয়েটির আলট্রাসনোগ্রাফি ও ইউরিন টেস্ট করান। পরীক্ষায় মেয়েটির গর্ভবতী হওয়ার ভুল রিপোর্ট দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টা হতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ক্লিনিকটি অবরোধ করে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তারা ।
অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসা পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী এক শিশু রবিবার বিকালে পেটে ব্যাথা অনুভব করলে ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাকে নিয়ে যায় পরিারের লোকজন। ওই ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি ও প্রসাব পরিক্ষা করে শিশুটি গর্ভবতী বলে রিপোর্ট দেয়। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবারের লোকজনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। অবিবাহিত এতো ছোট একটি মেয়ে কিভাবে গর্ভবর্তী হয়? রাতে তারা অন্য আরো দু’টি ক্লিনিকে গিয়ে একই পরিক্ষা করে জানতে পারে, তাদের মেয়ে গর্ভবর্তী না।
মেয়েটির বড় বোন বলেন, আমার বোন ওই রিপোর্ট শুনার পর শুধু কাঁন্না করছে। কোন খাওয়া দাওয়া করছে না। সে অস্বাভাবিক আচরণ করায় আমরা সারারাত তাকে পাহারা দিয়েছি। কিন্তু সে বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না ।
মেয়েটির নানী বলেন, পরিক্ষা নিরিক্ষার পর ডিএনসি করার জন্য ক্লিনিকের লোকজন আমার কাছে সাড়ে তিন হাজার টাকা চেয়েছে। গরিব মানুষ টাকা টাকা জোগাড় করতে না পারায় ডিএনসি করতে পারি নাই। এলাকাবাসী অনেকে আবার অন্য ক্লিনিকে পরিক্ষার করার কথা বললে, আমরা আরো দু’টি ক্লিনিকে পরিক্ষা করে উল্টো রিপোর্ট পাই। পরে জানতে পারি ওই ক্লিনিকে নাকি ডাক্তার থাকে না। নার্স ও ওয়ার্ডবয় দিয়ে পরিক্ষা ও অপারেশন করা হয়।
মেয়েটির মামা বলেণ, বিভিন্ন মানুষের মাধ্যমে মিমাংসা করার জন্য আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে। আমি ওই ক্লিনিকটি বন্ধের দাবী করছি।
ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর ইসলাম বলেন, ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা আলট্রাসনোগ্রাফি করেছে। আর প্যাথলোজি ট্যাকনোলোজিস্ট লক্ষন রায় প্রসাব পরিক্ষা করে গর্ভবতী হওয়ার রিপোর্ট দিয়েছে। হয়তো তারা ভুল রিপোর্ট দিয়েছে।
ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা বলেন, মেশিনের সমস্যার কারণে আলট্রাসনোগ্রাফির ভুল রিপোর্ট এসেছে।
টেকনোলোজিস্ট লক্ষন রায় বলেন, ওই ক্লিনিকে আমি কোন প্রসাব পরিক্ষা করি নাই। হয়তো ক্লিনিকের কেউ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত রিপোর্ট পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।