রাণীনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে স্কুল শিক্ষার্থীর অনশন, অত:পর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে

  • Update Time : ০৬:৩৬:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • / 102

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) এর বাড়িতে দুইদিন অনশন করেছে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার। অনশনের দুইদিন পর গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ওই দুই শিক্ষার্থীকে আদালতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মিরাট ইউপির আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামে। এ ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তবে আদালতে কোন আইনজীবির মাধ্যমে এই বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।

জানা যায়, উপজেলার আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) এর সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে আতাইকুলা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারের (১৫) ফেসবুকের মাধ্যমে ৬ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের জের ধরে মঙ্গলবার মেয়ে সাদিয়া বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন। বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানলেও মেয়েকে নিতে তারা অস্বীকার করে। ঘটনার দুইদিনেও যখন মেয়ের পরিবারের লোকজন মেয়েকে নিতে না আসলে ছেলের পরিবার গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার (৪ মে) নওগাঁ আদালতে নিয়ে গিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেন।

শিক্ষার্থী সাদিয়া জানায়, আব্দুল্লাহকে সে ভালোবাসে। কিন্তু আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বিয়ে পরিবার মেনে নিবে না জানতে পেরে সে ছেলের বাড়িতে চলে আছে। সে ছেলেকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু তার বিয়ে করার বয়স হয়নি তাহলে সে কেমন করে আব্দুল্লাহকে বিয়ে করবে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি তিনি।

ছেলের মা জেসমিন বলেন, মেয়ের পরিবারকে মেয়েকে বুঝিয়ে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। যখন দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা মেয়েকে নিতে অস্বীকার করেন। তখন উপায় না পেয়ে গ্রামের মাতব্বরদের পরামর্শে আদালতের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ করে ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে ও ছেলের বিয়ের বয়স হয়নি তাহলে তারা কিভাবে বিয়েটি আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন করলেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

আতাইকুলা গ্রামের মাতব্বর হামিদুল বলেন, ছেলের পরিবারের দাবির ভিত্তিতে সমস্যাটি আমরা গ্রামে বসেই সমাধান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মেয়ের পরিবারের আগ্রহ না থাকায় সমাধান করা যায়নি। তাই ছেলের পরিবারকে আদালতের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, যদি এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাণীনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে স্কুল শিক্ষার্থীর অনশন, অত:পর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে

Update Time : ০৬:৩৬:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) এর বাড়িতে দুইদিন অনশন করেছে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার। অনশনের দুইদিন পর গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ওই দুই শিক্ষার্থীকে আদালতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মিরাট ইউপির আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামে। এ ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তবে আদালতে কোন আইনজীবির মাধ্যমে এই বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।

জানা যায়, উপজেলার আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) এর সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে আতাইকুলা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারের (১৫) ফেসবুকের মাধ্যমে ৬ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের জের ধরে মঙ্গলবার মেয়ে সাদিয়া বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন। বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানলেও মেয়েকে নিতে তারা অস্বীকার করে। ঘটনার দুইদিনেও যখন মেয়ের পরিবারের লোকজন মেয়েকে নিতে না আসলে ছেলের পরিবার গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার (৪ মে) নওগাঁ আদালতে নিয়ে গিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেন।

শিক্ষার্থী সাদিয়া জানায়, আব্দুল্লাহকে সে ভালোবাসে। কিন্তু আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বিয়ে পরিবার মেনে নিবে না জানতে পেরে সে ছেলের বাড়িতে চলে আছে। সে ছেলেকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু তার বিয়ে করার বয়স হয়নি তাহলে সে কেমন করে আব্দুল্লাহকে বিয়ে করবে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি তিনি।

ছেলের মা জেসমিন বলেন, মেয়ের পরিবারকে মেয়েকে বুঝিয়ে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। যখন দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা মেয়েকে নিতে অস্বীকার করেন। তখন উপায় না পেয়ে গ্রামের মাতব্বরদের পরামর্শে আদালতের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ করে ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে ও ছেলের বিয়ের বয়স হয়নি তাহলে তারা কিভাবে বিয়েটি আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন করলেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

আতাইকুলা গ্রামের মাতব্বর হামিদুল বলেন, ছেলের পরিবারের দাবির ভিত্তিতে সমস্যাটি আমরা গ্রামে বসেই সমাধান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মেয়ের পরিবারের আগ্রহ না থাকায় সমাধান করা যায়নি। তাই ছেলের পরিবারকে আদালতের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, যদি এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।