সুন্দরগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট

  • Update Time : ০৩:১২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২
  • / 156

এনামুল হক,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধি:

আশ্রয়ণের ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ সংকট বিশুদ্ধ পানির।প্রচণ্ড গরমে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের কষ্ট সীমাহীন।বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কুপি আর হাতপাখাই তাদের ভরসা। কেরোসিন পুড়িয়ে কুপিতে আলো জ্বালালে ঘরে দেখা মিলে আলোর।কুপির আলোয় ঘরে পড়তে বসেন ছোট্ট সোনামণিরা ও ঘরে কাজ করেন গৃহকর্ত্রীরা।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের পূর্ব রামজীবন গ্রামের আশ্রয়ণে ৫৮টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন ও ভবানিপুর গ্রামের আশ্রয়ণে ৬৪টি পরিবারের প্রায় ২৫০জন মানুষের বসবাস।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে খুশি তারা।তবে অনেকেই রয়েছেন বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে।প্রতিনিয়ত বাড়ছে তাদের ভোগান্তি।

অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া হয়।শুরুটা ভালো হলেও এখন তাদের দিন কাটছে বিদ্যুৎ ও পানির কষ্টে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমিতে সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।কিন্তু তাদের রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট।রামজীবন ইউনিয়নের ভবানিপুর(ছাগলকাটি) আশ্রয়ণে ৬৪টি পরিবারের প্রায় ২৫০ জন মানুষ বসবাস করেন।সেখানে ৬৪টি ঘরের মধ্যে ১৩টি ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ।তাদের কেউ আছেন ৪ মাস থেকে আবার কেউ আছেন ছয় মাস ধরে বসবাস করলেও ঘরে পায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ।এমনকি তাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহে ১০টি পরিবারের জন্য ১টি টিউবওয়েল থাকার কথা থাকলেও সেখানে ৬৪টি পরিবারের জন্য মাত্র ৪টি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।এমন কাঠফাটা গরমের দিনে কঠিন কষ্টে আছেন এখানকার মানুষ।কুপি আর হাতপাখাই এখন তাদের ভরসা।

অন্যদিকে ঐ ইউনিয়নের পূর্ব রামজীবন গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫৮টি পরিবার থাকলেও দশটি পরিবার পায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ।এই কাঠফাটা গরমে তাদেরও কষ্টের শেষ নাই।কুপির আলোয় তাদেরও ভরসা এখন।

জাহিনুর বেগম বলেন,মুই এক বছর থাকি এই ঘর পাইছোম তখন থাকি এ্যাটে(এখানে) থাকম।মোর পরে মেলা মানুষ ঘরত উঠছে তামরা(তারা)কারেন(বিদ্যুৎ) পাইলো।মোর ঘরত কারেন(বিদ্যুৎ)দেয়না ক্যা।এত গরমের মধ্যে কি থাকা যায়। কি করমো(করবো)হামার যাওয়ার তো আর যায়গা নাই তাই সরকার এখান(একটা)ঘর দিছে সেট্টি কষ্ট করি হলেও থাকা নাগবে।কারো মনোত দয়া হলে কারেন(বিদ্যুৎ)দিবে না হইলে না দিবে।

১৩০ নাম্বার ঘরে থাকা আমির বলেন,বয়স হইছে হামার অতোদূর থাকি কি পানি আনা যায়।হামার এট্টে(এখানে)এতগুলা (এতগুলো)মানুষের জন্য খালি ৪টা কল (টিউবওয়েল)দিছে।দিনের বেলা কষ্ট করি হলেও পানি আনা যায় কিন্তু আইতের(রাতেবেলা) নাই কারেন(বিদ্যুৎ)বয়স হইছে চোখেও ঠিকমতো দেখপের পাইনা কেমন করি পানি আনি।আর এত গরম কত যে কষ্ট করি থাকি। মন্নের কারেন(মরণের কারেন্ট/বিদ্যুৎ) কিসোক (কেন) যে নাগি দেয়না।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মারুফ বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণের ঘর যারা পাওয়ার পরে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি তাদের ঘরে বিদ্যুৎ এর সংযোগ খুব দ্রুতই পৌছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থাটাও করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সুন্দরগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট

Update Time : ০৩:১২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২

এনামুল হক,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধি:

আশ্রয়ণের ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ সংকট বিশুদ্ধ পানির।প্রচণ্ড গরমে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের কষ্ট সীমাহীন।বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কুপি আর হাতপাখাই তাদের ভরসা। কেরোসিন পুড়িয়ে কুপিতে আলো জ্বালালে ঘরে দেখা মিলে আলোর।কুপির আলোয় ঘরে পড়তে বসেন ছোট্ট সোনামণিরা ও ঘরে কাজ করেন গৃহকর্ত্রীরা।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের পূর্ব রামজীবন গ্রামের আশ্রয়ণে ৫৮টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন ও ভবানিপুর গ্রামের আশ্রয়ণে ৬৪টি পরিবারের প্রায় ২৫০জন মানুষের বসবাস।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে খুশি তারা।তবে অনেকেই রয়েছেন বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে।প্রতিনিয়ত বাড়ছে তাদের ভোগান্তি।

অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া হয়।শুরুটা ভালো হলেও এখন তাদের দিন কাটছে বিদ্যুৎ ও পানির কষ্টে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমিতে সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।কিন্তু তাদের রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট।রামজীবন ইউনিয়নের ভবানিপুর(ছাগলকাটি) আশ্রয়ণে ৬৪টি পরিবারের প্রায় ২৫০ জন মানুষ বসবাস করেন।সেখানে ৬৪টি ঘরের মধ্যে ১৩টি ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ।তাদের কেউ আছেন ৪ মাস থেকে আবার কেউ আছেন ছয় মাস ধরে বসবাস করলেও ঘরে পায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ।এমনকি তাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহে ১০টি পরিবারের জন্য ১টি টিউবওয়েল থাকার কথা থাকলেও সেখানে ৬৪টি পরিবারের জন্য মাত্র ৪টি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।এমন কাঠফাটা গরমের দিনে কঠিন কষ্টে আছেন এখানকার মানুষ।কুপি আর হাতপাখাই এখন তাদের ভরসা।

অন্যদিকে ঐ ইউনিয়নের পূর্ব রামজীবন গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫৮টি পরিবার থাকলেও দশটি পরিবার পায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ।এই কাঠফাটা গরমে তাদেরও কষ্টের শেষ নাই।কুপির আলোয় তাদেরও ভরসা এখন।

জাহিনুর বেগম বলেন,মুই এক বছর থাকি এই ঘর পাইছোম তখন থাকি এ্যাটে(এখানে) থাকম।মোর পরে মেলা মানুষ ঘরত উঠছে তামরা(তারা)কারেন(বিদ্যুৎ) পাইলো।মোর ঘরত কারেন(বিদ্যুৎ)দেয়না ক্যা।এত গরমের মধ্যে কি থাকা যায়। কি করমো(করবো)হামার যাওয়ার তো আর যায়গা নাই তাই সরকার এখান(একটা)ঘর দিছে সেট্টি কষ্ট করি হলেও থাকা নাগবে।কারো মনোত দয়া হলে কারেন(বিদ্যুৎ)দিবে না হইলে না দিবে।

১৩০ নাম্বার ঘরে থাকা আমির বলেন,বয়স হইছে হামার অতোদূর থাকি কি পানি আনা যায়।হামার এট্টে(এখানে)এতগুলা (এতগুলো)মানুষের জন্য খালি ৪টা কল (টিউবওয়েল)দিছে।দিনের বেলা কষ্ট করি হলেও পানি আনা যায় কিন্তু আইতের(রাতেবেলা) নাই কারেন(বিদ্যুৎ)বয়স হইছে চোখেও ঠিকমতো দেখপের পাইনা কেমন করি পানি আনি।আর এত গরম কত যে কষ্ট করি থাকি। মন্নের কারেন(মরণের কারেন্ট/বিদ্যুৎ) কিসোক (কেন) যে নাগি দেয়না।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মারুফ বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণের ঘর যারা পাওয়ার পরে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি তাদের ঘরে বিদ্যুৎ এর সংযোগ খুব দ্রুতই পৌছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থাটাও করা হবে।