উদ্বোধনের অপেক্ষায় ‘মীরসরাই-নোয়াখালী সড়ক’

  • Update Time : ১২:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মার্চ ২০২২
  • / 223

কমল পাটোয়ারি, মীরসরাই, (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতাঃ

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে উন্নয়নের নবযাত্রায় যোগ হবে চট্টগ্রামের মীরসরাই-নোয়াখালী সড়ক। মাত্র একটি সেতুর নির্মান কাজ অবশিষ্ট থাকলেও আগামী নভেম্বর মাসেই এই সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুই এলাকার মানুষের যাতায়াত।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে অচিরেই যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় বহুল প্রত্যাশিত সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরারগঞ্জ সড়ক নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষের দিকে । গত জুন মাসেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবার কথা থাকলে ও ফেনী নদীর উপর দিয়ে দীর্ঘকায় একটি সেতুর নির্মান কাজ চলমান এখনো।

তাই সড়কটির শুরু ও শেষের প্রায় সকল কাজ শেষ হলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিতে পারছে না সড়ক বিভাগ । তবে সড়ক ও জনপথের ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ করিম বলেন, নির্মাণাধীন ওই সড়কের সোনাপুর (নোয়াখালী), সোনাগাজী (ফেনী) ও জোরারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অংশের কাজ শেষ হয়েছে।
এখন শুধু মুহুরী রেগুলেটরের পার্শ্বেই বিকল্প সেতু নির্মান কাজ চলছে। সেতুটি নির্মান শেষ হলে এই অঞ্চলের মানুষের কানেকটিভিটির নতুন দীগন্ত উম্মোচিত হবে। তিনি বলেন এই প্রকল্পে ১৮৬ কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্ধ থাকলেও ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন এ অঞ্চলে লাখ লাখ যাত্রী নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে চৌমুহনী-ফেনী হয়ে সড়কপথে চট্টগ্রাম যাতায়াতে ৫/৬ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়। অন্যদিকে সোনাপুর জোরারগঞ্জ সড়ক চালু হলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে মাত্র দুই ঘণ্টায় যোগাযোগ সম্ভব হবে।

২০১৮ সালের জুনে বহুল প্রত্যাশিত এই সড়কটি চালুর প্রত্যাশা পূরণ না হলে ও আগামী নভেম্বরে চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীগন। সড়কটি চালু হলে এর দুই পার্শ্বে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠবে। মহাসড়কের কারণে জীবনযাত্রার মান্নোয়নের সম্ভব্যতায় ইতোমধ্যে সড়কের পাশে জমির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিভিন্ন শিল্পোদ্যোক্তা সম্ভাব্য স্থানগুলো পরিদর্শন করেন বলেও প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। জানা গেছে, ষাটের দশকে জানমাল রক্ষাকল্পে সোনাপুর-সোনাগাজী জোরারগঞ্জ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এটিকে আপৎকালীন বিকল্প সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। অবশেষে এবার সড়কটি পরিপূর্ণতা লাভ করতে যাচ্ছে। প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৫৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট সড়কটির দুই পার্শ্বে শিল্পদ্যোক্তাদের আনাগোনা ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী মাত্র দুই আড়াই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সড়কটি নির্মাণের শুরু থেকে সোনাপুর থেকে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের দুই পার্শ্বের হাজার হাজার মানুষের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। সড়কটি চালু হবার পাশাপাশি প্রায় চার লক্ষাধিক অধিবাসীর বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তবে সচেতন একাধিক ব্যক্তি বলেন দীর্ঘদিনের ফাইলবন্ধি এ সড়কটির বাস্তবায়ন হবে, তা এ এলাকার মানুষ মনেই করেনি। সর্বশেষ বর্তমান সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর আন্তরিক উদ্যোগেই প্রতিকূলতা মাড়িয়ে পুরো সড়ক ও সড়কের সেতুর উন্নয়ন কাজ করে কয়েক জেলার মানুষের ব্যাপক কল্যান বয়ে আনলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


উদ্বোধনের অপেক্ষায় ‘মীরসরাই-নোয়াখালী সড়ক’

Update Time : ১২:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মার্চ ২০২২

কমল পাটোয়ারি, মীরসরাই, (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতাঃ

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে উন্নয়নের নবযাত্রায় যোগ হবে চট্টগ্রামের মীরসরাই-নোয়াখালী সড়ক। মাত্র একটি সেতুর নির্মান কাজ অবশিষ্ট থাকলেও আগামী নভেম্বর মাসেই এই সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুই এলাকার মানুষের যাতায়াত।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে অচিরেই যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় বহুল প্রত্যাশিত সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরারগঞ্জ সড়ক নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষের দিকে । গত জুন মাসেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবার কথা থাকলে ও ফেনী নদীর উপর দিয়ে দীর্ঘকায় একটি সেতুর নির্মান কাজ চলমান এখনো।

তাই সড়কটির শুরু ও শেষের প্রায় সকল কাজ শেষ হলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিতে পারছে না সড়ক বিভাগ । তবে সড়ক ও জনপথের ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ করিম বলেন, নির্মাণাধীন ওই সড়কের সোনাপুর (নোয়াখালী), সোনাগাজী (ফেনী) ও জোরারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অংশের কাজ শেষ হয়েছে।
এখন শুধু মুহুরী রেগুলেটরের পার্শ্বেই বিকল্প সেতু নির্মান কাজ চলছে। সেতুটি নির্মান শেষ হলে এই অঞ্চলের মানুষের কানেকটিভিটির নতুন দীগন্ত উম্মোচিত হবে। তিনি বলেন এই প্রকল্পে ১৮৬ কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্ধ থাকলেও ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন এ অঞ্চলে লাখ লাখ যাত্রী নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে চৌমুহনী-ফেনী হয়ে সড়কপথে চট্টগ্রাম যাতায়াতে ৫/৬ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়। অন্যদিকে সোনাপুর জোরারগঞ্জ সড়ক চালু হলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে মাত্র দুই ঘণ্টায় যোগাযোগ সম্ভব হবে।

২০১৮ সালের জুনে বহুল প্রত্যাশিত এই সড়কটি চালুর প্রত্যাশা পূরণ না হলে ও আগামী নভেম্বরে চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীগন। সড়কটি চালু হলে এর দুই পার্শ্বে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠবে। মহাসড়কের কারণে জীবনযাত্রার মান্নোয়নের সম্ভব্যতায় ইতোমধ্যে সড়কের পাশে জমির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিভিন্ন শিল্পোদ্যোক্তা সম্ভাব্য স্থানগুলো পরিদর্শন করেন বলেও প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। জানা গেছে, ষাটের দশকে জানমাল রক্ষাকল্পে সোনাপুর-সোনাগাজী জোরারগঞ্জ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এটিকে আপৎকালীন বিকল্প সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। অবশেষে এবার সড়কটি পরিপূর্ণতা লাভ করতে যাচ্ছে। প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৫৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট সড়কটির দুই পার্শ্বে শিল্পদ্যোক্তাদের আনাগোনা ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী মাত্র দুই আড়াই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সড়কটি নির্মাণের শুরু থেকে সোনাপুর থেকে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের দুই পার্শ্বের হাজার হাজার মানুষের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। সড়কটি চালু হবার পাশাপাশি প্রায় চার লক্ষাধিক অধিবাসীর বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তবে সচেতন একাধিক ব্যক্তি বলেন দীর্ঘদিনের ফাইলবন্ধি এ সড়কটির বাস্তবায়ন হবে, তা এ এলাকার মানুষ মনেই করেনি। সর্বশেষ বর্তমান সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর আন্তরিক উদ্যোগেই প্রতিকূলতা মাড়িয়ে পুরো সড়ক ও সড়কের সেতুর উন্নয়ন কাজ করে কয়েক জেলার মানুষের ব্যাপক কল্যান বয়ে আনলেন।