তারাবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

  • Update Time : ০৫:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১
  • / 194

তারাবিহ নামাজ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা হলো- আল্লাহ তাআলা এ মাসের সিয়াম তথা (দিনের বেলা) রোজা রাখা ফরজ করেছেন আর এ মাসের কিয়াম তথা রাতের (নামাজ) নফল করে দিয়েছেন। রাতের এ তারাবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম কী? তারাবিহ নামাজের ফজিলতই বা কী?

তারাবিহ নামাজের ফজিলত
তারাবিহ নামাজ গোনাহ মাফের অন্যতম উপায়। রমজান মাসে তারাবিহ বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে বিগত জীবনের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে রাতে বিশ্বাসের সঙ্গে সাওয়াবের আশায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)

তারাবিহ নামাজের নিয়ম
দুই রাকাআত করে তারাবিহ নামাজ আদায় করতে হয়। দুই দুই রাকাআত করে প্রতি ৪ রাকাআত পরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হয়। বিশ্রামের এ সময়টিতে তাসবিহ-তাহলিল ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। অনেকে ৪ রাকাআত পর পর বহু প্রচলিত একটি দোয়া পড়ে থাকেন। আর তাহলো-
سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
উচ্চারণ : ‘সুবহানাজিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানাজিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

তারাবিহ নামাজের মোনাজাত
তারাবিহ নামাজের রাকাআত সংখ্যা নিয়ে বহু মতভেদ রয়েছে। যে যত রাকাআত নামাজই পড়ুন কেন, অনেকেই ৪ রাকাআত পরপর মোনাজাত করে থাকেন আবার অনেকে পুরো নামাজ শেষ করে মোনাজাত করে থাকেন।
মোনাজাতের ক্ষেত্রেও কুরআন-সুন্নাহর মাসনুন দোয়াগুলো পড়া যেতে পারে। তবে বহুল প্রচলিত একটি দোয়া অনেকেই পড়ে থাকেন। আর তাহলো-
اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বাররু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

তারাবিহ নামাজে অনুচিত
অনেকের মাঝেই দ্রুত কিংবা তাড়াতাড়ি তারাবিহ নামাজ পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এমনটি কোনোভাবেই উচিত নয়। বরং তারাবিহ নামাজ ধীরস্থিরভাবে পড়াই উত্তম। এতে তারাবিহ নামাজের সৌন্দর্য ও মর্যাদা প্রকাশ পায়। গোনাহ থেকে মুক্তি পায় মুমিন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খতম তারাবিহসহ ধীরস্থিরভাবে রাতের এ নামাজ ও তাহাজ্জুদ পড়ার তাওফিক দান করুন। গোনাহ থেমে মুক্তির পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media


তারাবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

Update Time : ০৫:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১

তারাবিহ নামাজ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা হলো- আল্লাহ তাআলা এ মাসের সিয়াম তথা (দিনের বেলা) রোজা রাখা ফরজ করেছেন আর এ মাসের কিয়াম তথা রাতের (নামাজ) নফল করে দিয়েছেন। রাতের এ তারাবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম কী? তারাবিহ নামাজের ফজিলতই বা কী?

তারাবিহ নামাজের ফজিলত
তারাবিহ নামাজ গোনাহ মাফের অন্যতম উপায়। রমজান মাসে তারাবিহ বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে বিগত জীবনের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে রাতে বিশ্বাসের সঙ্গে সাওয়াবের আশায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)

তারাবিহ নামাজের নিয়ম
দুই রাকাআত করে তারাবিহ নামাজ আদায় করতে হয়। দুই দুই রাকাআত করে প্রতি ৪ রাকাআত পরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হয়। বিশ্রামের এ সময়টিতে তাসবিহ-তাহলিল ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। অনেকে ৪ রাকাআত পর পর বহু প্রচলিত একটি দোয়া পড়ে থাকেন। আর তাহলো-
سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
উচ্চারণ : ‘সুবহানাজিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানাজিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

তারাবিহ নামাজের মোনাজাত
তারাবিহ নামাজের রাকাআত সংখ্যা নিয়ে বহু মতভেদ রয়েছে। যে যত রাকাআত নামাজই পড়ুন কেন, অনেকেই ৪ রাকাআত পরপর মোনাজাত করে থাকেন আবার অনেকে পুরো নামাজ শেষ করে মোনাজাত করে থাকেন।
মোনাজাতের ক্ষেত্রেও কুরআন-সুন্নাহর মাসনুন দোয়াগুলো পড়া যেতে পারে। তবে বহুল প্রচলিত একটি দোয়া অনেকেই পড়ে থাকেন। আর তাহলো-
اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বাররু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

তারাবিহ নামাজে অনুচিত
অনেকের মাঝেই দ্রুত কিংবা তাড়াতাড়ি তারাবিহ নামাজ পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এমনটি কোনোভাবেই উচিত নয়। বরং তারাবিহ নামাজ ধীরস্থিরভাবে পড়াই উত্তম। এতে তারাবিহ নামাজের সৌন্দর্য ও মর্যাদা প্রকাশ পায়। গোনাহ থেকে মুক্তি পায় মুমিন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খতম তারাবিহসহ ধীরস্থিরভাবে রাতের এ নামাজ ও তাহাজ্জুদ পড়ার তাওফিক দান করুন। গোনাহ থেমে মুক্তির পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।