জাতীয় পার্টির ৯৬৮ নেতাকর্মীর গণপদত্যাগ

  • Update Time : ০৬:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 69

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে দলটি থেকে গণপদত্যাগ করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের ৯৬৮ জন নেতাকর্মী।

পদত্যাগকালে নেতাকর্মীরা বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বৈরাচার নন, স্বৈরাচার জিএম কাদের। তার অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গণহারে পদত্যাগে তাদের (কাদের-চুন্নু) লজ্জা হওয়া উচিত ছিলো। যাদের বিবেক বা লজ্জা নেই তারা মানুষ নয়, পশু।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে অনুষ্ঠিত গণপদত্যাগ ও সংবাদ সম্মেলনে এই গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন নেতাকর্মীরা। এসময় মোহাম্মদপুর, আদাবর, পল্লবী, হাতিরঝিল, মিরপুর, দারুসসালাম, শেরেবাংলা, বাড্ডা, রূপনগর থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৯৬৮ নেতাকর্মী জিএম কাদেরের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গণপদত্যাগ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা নিশ্চয়ই দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন পূর্বাপর জাতীয় পার্টির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন। পার্টিতে বর্তমানে যিনি চেয়ারম্যান পদে অধষ্ঠিত আছেন-সেই জিএম কাদের এক বছর আগে থেকেই বলে আসছেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে। সেইভাবে তিনি বক্তৃতা বিবৃতি এসেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে গরম গরম কথা বলে নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টাও করেছেন। আমরাও তার প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের আগে আমরা বুঝতে পারলাম তিনি গোপনে সরকারে সঙ্গে আঁতাত করে নিজের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাবার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতা ও কর্মী সমর্থকরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে পার্টিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি ওঠে। পার্টির এই দুরাবস্থার মধ্যেও চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতার নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করে পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতৃবৃন্দকে একের পর এক অব্যাহতি দিয়ে চলেছেন। তিনি পল্লীবন্ধু এরশাদের নাম নিশানা মুছে দেয়ার হীন চক্রান্ত করে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান জি এম কাদের পার্টির নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের ভাষা বুঝতে না পেরে প্রতিহিংসাবশত পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরীকে পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এছাড়াও কয়েকজন নেতাকে মৌখিকভাবে অব্যাহতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা এরশাদপ্রেমিক নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যন্ত সংগঠনে অবস্থান করে এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণপদত্যাগের ঘোষণা করছি এবং এই গণপদত্যাগ অব্যাহত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাপা থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাহিন আরা সুলতানা রিমা, হাতিরঝিল থানা জাপা সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম, মোহাম্মদপুর থানা সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকুল, রূপনগর থানা সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ খান, শেরেবাংলা থানা সভাপতি আশরাফুল হক শিবলী, আদাবর থানা সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল, পল্লবী থানা সভাপতি আসাদ খান সামী, ছাত্র সমাজের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানা যুব সংহতির সভাপতি আমজাদ হোসেনসহ বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এসময় সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরী, আমানত হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা খুরশিদ আলম খুশুসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আশরাফুল ইসলাম শিবলী তার বক্তব্যে বলেন, জিএম কাদের পার্টিকে প্রাইভেট কোম্পানিতে রূপান্তরিত করেছে। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন তার কাছে নেই, মূল্যায়ন করা হয় চাটুকারদের। সেন্টুর মত নিবেদিত প্রাণকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদে জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করছি।

হাতিরঝিল থানা সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, ৮২ সাল থেকে এ দল করে আসছি। পল্লীবন্ধু এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টিকে জিএম কাদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি বিকশিত হওয়া সম্ভব নয়।

মোহাম্মদপুর থানা সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকুল বলেন, যে ইমাম নামাজে ভুল করে তার নেতৃত্বে নামাজ পড়া যায় না। তেমনি জিএম কাদেরের মতো একটি লোকের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি করা সম্ভব নয়, গুডবাই জাতীয় পার্টি।

পল্লবী থানা সভাপতি আসাদ খান সামী বলেন, উনি (জিএম কাদের) নিজেকে জনবন্ধু দাবি করেন। উনিতো কর্মীবন্ধুই হতে পারেননি। জনবন্ধু হন কীভাবে। আপনি (কাদের) কী আমাদের অব্যাহতি দেবেন? আগামীদিনে আমরাই আপনাকে অব্যাহতি দেব।

সাহিন আরা সুলতানা রিমা তার বক্তব্যে বলেন, এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টির সবচেয়ে অযোগ্য নেতৃত্ব হচ্ছেন জিএম কাদের। আজকে কর্মীরা গণপদত্যাগ করছেন, অথচ তার কোনো লজ্জা নেই। থাকবে কী করে, দলতো তিনি বানাননি। বানিয়েছেন প্রয়াত পল্লীবন্ধু এরশাদ। যার লজ্জা বা বিবেক নেই সেতো মানুষ নয়, পশু।

সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে মুদির দোকান মনে করেন। সারাদিন বনানীর দোকানে বসেন। আর তার সিন্ডিকেট দিনভর দোকানদারী করে সন্ধ্যার সময় জিএম কাদেরকে লেনদেনের হিসেব দেন। সারাদেশের সঙ্গে জিএম কাদেরের কোনো যোগাযোগ নেই। পার্টিকে তিনি ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা দলের এই বিপর্যয়ের জন্য জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবি করছি। আমরা পল্লীবন্ধু এরশাদের আদর্শ নিয়ে এগুবো। কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না। দলটা আপনার না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


জাতীয় পার্টির ৯৬৮ নেতাকর্মীর গণপদত্যাগ

Update Time : ০৬:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে দলটি থেকে গণপদত্যাগ করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের ৯৬৮ জন নেতাকর্মী।

পদত্যাগকালে নেতাকর্মীরা বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বৈরাচার নন, স্বৈরাচার জিএম কাদের। তার অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গণহারে পদত্যাগে তাদের (কাদের-চুন্নু) লজ্জা হওয়া উচিত ছিলো। যাদের বিবেক বা লজ্জা নেই তারা মানুষ নয়, পশু।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে অনুষ্ঠিত গণপদত্যাগ ও সংবাদ সম্মেলনে এই গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন নেতাকর্মীরা। এসময় মোহাম্মদপুর, আদাবর, পল্লবী, হাতিরঝিল, মিরপুর, দারুসসালাম, শেরেবাংলা, বাড্ডা, রূপনগর থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৯৬৮ নেতাকর্মী জিএম কাদেরের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গণপদত্যাগ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা নিশ্চয়ই দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন পূর্বাপর জাতীয় পার্টির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন। পার্টিতে বর্তমানে যিনি চেয়ারম্যান পদে অধষ্ঠিত আছেন-সেই জিএম কাদের এক বছর আগে থেকেই বলে আসছেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে। সেইভাবে তিনি বক্তৃতা বিবৃতি এসেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে গরম গরম কথা বলে নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টাও করেছেন। আমরাও তার প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের আগে আমরা বুঝতে পারলাম তিনি গোপনে সরকারে সঙ্গে আঁতাত করে নিজের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাবার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতা ও কর্মী সমর্থকরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে পার্টিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি ওঠে। পার্টির এই দুরাবস্থার মধ্যেও চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতার নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করে পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতৃবৃন্দকে একের পর এক অব্যাহতি দিয়ে চলেছেন। তিনি পল্লীবন্ধু এরশাদের নাম নিশানা মুছে দেয়ার হীন চক্রান্ত করে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান জি এম কাদের পার্টির নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের ভাষা বুঝতে না পেরে প্রতিহিংসাবশত পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরীকে পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এছাড়াও কয়েকজন নেতাকে মৌখিকভাবে অব্যাহতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা এরশাদপ্রেমিক নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যন্ত সংগঠনে অবস্থান করে এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণপদত্যাগের ঘোষণা করছি এবং এই গণপদত্যাগ অব্যাহত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাপা থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাহিন আরা সুলতানা রিমা, হাতিরঝিল থানা জাপা সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম, মোহাম্মদপুর থানা সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকুল, রূপনগর থানা সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ খান, শেরেবাংলা থানা সভাপতি আশরাফুল হক শিবলী, আদাবর থানা সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল, পল্লবী থানা সভাপতি আসাদ খান সামী, ছাত্র সমাজের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানা যুব সংহতির সভাপতি আমজাদ হোসেনসহ বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এসময় সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরী, আমানত হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা খুরশিদ আলম খুশুসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আশরাফুল ইসলাম শিবলী তার বক্তব্যে বলেন, জিএম কাদের পার্টিকে প্রাইভেট কোম্পানিতে রূপান্তরিত করেছে। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন তার কাছে নেই, মূল্যায়ন করা হয় চাটুকারদের। সেন্টুর মত নিবেদিত প্রাণকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদে জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করছি।

হাতিরঝিল থানা সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, ৮২ সাল থেকে এ দল করে আসছি। পল্লীবন্ধু এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টিকে জিএম কাদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি বিকশিত হওয়া সম্ভব নয়।

মোহাম্মদপুর থানা সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকুল বলেন, যে ইমাম নামাজে ভুল করে তার নেতৃত্বে নামাজ পড়া যায় না। তেমনি জিএম কাদেরের মতো একটি লোকের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি করা সম্ভব নয়, গুডবাই জাতীয় পার্টি।

পল্লবী থানা সভাপতি আসাদ খান সামী বলেন, উনি (জিএম কাদের) নিজেকে জনবন্ধু দাবি করেন। উনিতো কর্মীবন্ধুই হতে পারেননি। জনবন্ধু হন কীভাবে। আপনি (কাদের) কী আমাদের অব্যাহতি দেবেন? আগামীদিনে আমরাই আপনাকে অব্যাহতি দেব।

সাহিন আরা সুলতানা রিমা তার বক্তব্যে বলেন, এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টির সবচেয়ে অযোগ্য নেতৃত্ব হচ্ছেন জিএম কাদের। আজকে কর্মীরা গণপদত্যাগ করছেন, অথচ তার কোনো লজ্জা নেই। থাকবে কী করে, দলতো তিনি বানাননি। বানিয়েছেন প্রয়াত পল্লীবন্ধু এরশাদ। যার লজ্জা বা বিবেক নেই সেতো মানুষ নয়, পশু।

সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে মুদির দোকান মনে করেন। সারাদিন বনানীর দোকানে বসেন। আর তার সিন্ডিকেট দিনভর দোকানদারী করে সন্ধ্যার সময় জিএম কাদেরকে লেনদেনের হিসেব দেন। সারাদেশের সঙ্গে জিএম কাদেরের কোনো যোগাযোগ নেই। পার্টিকে তিনি ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা দলের এই বিপর্যয়ের জন্য জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবি করছি। আমরা পল্লীবন্ধু এরশাদের আদর্শ নিয়ে এগুবো। কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না। দলটা আপনার না।