ঢাকা-ওয়াশিংটন বৈঠক আজ
- Update Time : ১১:১৭:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 147
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তির (টিকফা) সপ্তম কাউন্সিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইবে বাংলাদেশ। বর্তমানে ২৩২ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সর্বোচ্চ শুল্ক দিচ্ছে বাংলাদেশ।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে সকাল থেকে শুরু হবে টিকফার সপ্তম কাউন্সিল বৈঠক।
এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্বে থাকবেন ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ (ইউএসটিআর) দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার ভারপ্রাপ্ত সহকারী ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
২০১৩ সালে অভিন্ন উদ্দেশ্যে দুই দেশের মধ্যে টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরই মধ্যে চুক্তির এক দশক পার হতে চলেছে। এর আওতায় ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এই সময়ে ছয়টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এসব বৈঠক থেকে এখনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কোনো প্রাপ্তি ঘটেনি। অর্থাৎ অর্জন প্রায় শূন্য। মেলেনি জিএসপি সুবিধা। উল্টো ২৩২ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সর্বোচ্চ শুল্ক দিচ্ছে বাংলাদেশ।
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া’র পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ
টিকফা চুক্তি-পরবর্তী গত এক দশক সরকারকে নানা প্রেসক্রিপশন তথা শর্ত পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সামলাতে হয়েছে। বিশেষ করে রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ইস্যুতে তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ রক্ষা, শ্রম অধিকার নিশ্চিত এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে এখনো মার্কিনিদের নানা বাক্যবাণ শুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দাবির মুখে অতি সম্প্রতি সে দেশ থেকে আমদানি করা তুলা বাংলাদেশে কোনো ফিউমিগেশন বা পুনঃপরীক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আসন্ন টিফা ফোরামের বৈঠককে কেন্দ্র করে এমন সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ সিদ্ধান্তটিও মার্কিনিদের স্বার্থসংরক্ষণমূলক। এর ফলে দেশটি থেকে বাংলাদেশে তুলা আমদানি বাড়লেও এতে মার্কিন ব্যবসার সমৃদ্ধি ঘটবে।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে এবারের টিকফা ফোরামের আলোচনার জন্য তৈরি করা চূড়ান্ত এজেন্ডা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সপ্তম বৈঠকেও মার্কিনিদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী শর্ত পূরণের অগ্রগতি ব্যাখ্যা করতে হবে। শুনতে হবে আরও অগ্রগতির সবকও। যদিও গত এক দশকে বাংলাদেশ শ্রম অধিকার উন্নয়ন এবং কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করে তৈরি পোশাকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ ও সবুজ শিল্পের স্বীকৃতি পেয়েছে। খোদ মার্কিন প্রতিষ্ঠান থেকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
তার নমুনা মিলেছে ইউএসটিআরের নির্ধারিত এজেন্ডাতে। এতে দেখা গেছে, মার্কিনিরা টিকফা ফোরামের আলোচনায় এবার ছয় এজেন্ডা ধরে ১৮ ইস্যুতে যেসব প্রস্তাব করবে তার বেশিরভাগই তাদের ব্যবসা প্রসার এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট আইনকানুন সংস্কার, পরিবর্তন ও উন্নয়নধর্মী; যা এদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর পথ আরও সুগম করবে। শুধু শ্রম ইস্যুতেই ইউএসটিআর পাঁচ সুনির্দিষ্ট বিষয় জোরালোভাবে পর্যালোচনায় আনবে। ক্ষেত্রবিশেষে একই সঙ্গে এর ব্যাখ্যাও চাইবে। তবে উল্লিখিত তথ্যমতে, এ-বিষয়ক আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে বাংলাদেশে শ্রমিক ইউনিয়নবিরোধী অপতৎপরতা বা শ্রমিকবিরোধী সহিংসতার বিষয়ে। এ ছাড়া ইউনিয়ন গঠন বা অনুমোদনের ক্ষেত্রে বৈষম্য হচ্ছে—অন্যান্য ক্ষেত্রেও অন্যায্য শ্রম অনুশীলন হচ্ছে—এমন অভিযোগ রয়েছে তাদের কাছে, এসবের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে এবারের আলোচনায়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম আইনসহ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এসইজেড) এবং ইপিজেড শ্রম আইন সংশোধনের খুঁটিনাটি, শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধন, শ্রম পরিদর্শন ও বাস্তবায়ন ইস্যুগুলো তারা সুচারুভাবে পর্যালোচনা করবেন।
এ ছাড়া ডিজিটাল বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনায় খসড়া ডাটা সুরক্ষা আইন এবং ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের খসড়া প্রবিধান ইস্যুতে জোর দেবেন ইউএসটিআর প্রতিনিধিরা।