বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকরা আগ বাড়িয়ে কথা বলেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • Update Time : ১১:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
  • / 131

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাংলা‌দে‌শে বি‌দে‌শি কূটনীতিকরা একটু আগ বাড়িয়ে কথা বলেন। অন্য কোনো দেশে এভাবে বলেন না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মো‌মেন।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় শে‌ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা ব‌লেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, আমাদের দেশে অনেক দিন থে‌কে এটা হ‌য়ে আসছে। এ জন্য বিভিন্ন মহল দায়ী। তবে এ সংস্কৃতি একদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। এখন সময় এসেছে, এ সংস্কৃতি থে‌কে বেরিয়ে আসার। এ সংস্কৃতি বন্ধে আমরা একটা সেমিনার করব।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে দুর্নীতি ক‌রে যেসব বাংলাদেশিরা অর্থ জমিয়েছে, তা জব্দের কথা শোনা যাচ্ছে- এ বিষ‌য়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে জবাবে মো‌মেন ব‌লেন, দুর্নীতি করে টাকা নিয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার যদি তা জব্দ করে সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ। তারা যদি দুর্নীতি বন্ধে সাহায্য করে, আমরা খুব খুশি হবো। কারণ তাদের দেশে একটি আইন আছে, বেশি টাকা নিয়ে গেলে কাজের অনুমোদন পাওয়া যায়, তাদের নাগরিক হওয়া যায়।

মো‌মেন ব‌লেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, অন্য দেশেও এ নিয়ম আছে। আর আমাদের দেশে যারা দুর্নীতি করে টাকা নিয়ে যান তা‌দের যদি জব্দ করা হয়, আমরা খুশি হবো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান ও শমসের মবিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নাঈমুল ইসলাম খান ও রাহুল রাহা এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) আব্দুর রশীদ।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার বিষ‌য় কী ছিল জান‌তে চাইলে তিনি ব‌লেন, তারা তাদের বক্তব্য ও নির্দেশনা দিয়েছেন। গণমাধ‌্যমকর্মী‌দের জন‌্যও বি‌শিষ্টজনরা নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি ব‌লেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় নি‌য়ে কথা ব‌লেন, তখন সাংবাদিকরা কখনও তা‌কে প্রশ্ন করেননি আপনি ভিয়েনা কনভেনশনের ৪১ ধারা লঙ্ঘন করছেন কি না? কিংবা তা‌দের দেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যার শিকার হওয়া নি‌য়ে কোনো প্রশ্ন করেন না। তারা যখন বলে, বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, কেউ তখন তাদের জিজ্ঞাসা করে না, আপনাদের দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কেমন? কত শতাংশ লোক ভোট দেন। আমরা শুনেছি যে ২৬ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেন না। এসব প্রশ্ন আমাদের সাংবাদিকরা করেন না।

মো‌মেন ব‌লেন, বৈঠকে থাকা বিশিষ্ট এক ব্যক্তি ব‌লে‌ছেন, কূটনীতিকদের কীভাবে প্রশ্ন করতে হয়, সাংবাদিকদের তার একটা ওরিয়েন্টেশন দরকার। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নি‌য়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে তারা আমাদের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

দিক-নির্দেশনার বিষ‌য়ে সুনির্দষ্টভাবে জান‌তে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, একটা হচ্ছে, আগামী দিনে আমরা কীভাবে কূটনীতিকদের ম্যানেজ করব। এ বিষ‌য়ে তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ১৪ কংগ্রেসম্যান চিঠি লিখেছেন। চি‌ঠি‌তে বাংলাদেশ নি‌য়ে যেসব ভুল তথ্য দেওয়া হ‌য়ে‌ছে, সেগু‌লো তু‌লে ধরা উচিত।

মার্কিন দুই কং‌গ্রেসম‌্যা‌নের বাংলা‌দেশ সফরের কারণ জান‌তে চাইলে মো‌মেন ব‌লেন, আমাদের ৫০ বছরপূর্তি উৎসবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খুব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে চান। সে কারণে একের পর এক মার্কিন সিনিয়র কর্মকর্তারা এসেছেন, আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। তারা স্বেচ্ছায় এসেছেন, আমরাও খুব খুশি।

তিনি ব‌লেন, দুজন আসছেন মূলত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি দেখার জন্য। রোহিঙ্গাদের আগে ১২ ডলার সহায়তা দেওয়া হতো এখন কমিয়ে আট ডলার করা হয়েছে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র। দুই কংগ্রেসম্যান একটি অনুমোদন কমিটির সদস্য, তারাই টাকা অনুমোদন করেন। এখন এসে দেখবেন, আরও অর্থের দরকার আছে কি না, বাড়ানোর প্রয়োজন কি না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকরা আগ বাড়িয়ে কথা বলেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Update Time : ১১:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাংলা‌দে‌শে বি‌দে‌শি কূটনীতিকরা একটু আগ বাড়িয়ে কথা বলেন। অন্য কোনো দেশে এভাবে বলেন না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মো‌মেন।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় শে‌ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা ব‌লেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, আমাদের দেশে অনেক দিন থে‌কে এটা হ‌য়ে আসছে। এ জন্য বিভিন্ন মহল দায়ী। তবে এ সংস্কৃতি একদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। এখন সময় এসেছে, এ সংস্কৃতি থে‌কে বেরিয়ে আসার। এ সংস্কৃতি বন্ধে আমরা একটা সেমিনার করব।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে দুর্নীতি ক‌রে যেসব বাংলাদেশিরা অর্থ জমিয়েছে, তা জব্দের কথা শোনা যাচ্ছে- এ বিষ‌য়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে জবাবে মো‌মেন ব‌লেন, দুর্নীতি করে টাকা নিয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার যদি তা জব্দ করে সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ। তারা যদি দুর্নীতি বন্ধে সাহায্য করে, আমরা খুব খুশি হবো। কারণ তাদের দেশে একটি আইন আছে, বেশি টাকা নিয়ে গেলে কাজের অনুমোদন পাওয়া যায়, তাদের নাগরিক হওয়া যায়।

মো‌মেন ব‌লেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, অন্য দেশেও এ নিয়ম আছে। আর আমাদের দেশে যারা দুর্নীতি করে টাকা নিয়ে যান তা‌দের যদি জব্দ করা হয়, আমরা খুশি হবো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান ও শমসের মবিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নাঈমুল ইসলাম খান ও রাহুল রাহা এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) আব্দুর রশীদ।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার বিষ‌য় কী ছিল জান‌তে চাইলে তিনি ব‌লেন, তারা তাদের বক্তব্য ও নির্দেশনা দিয়েছেন। গণমাধ‌্যমকর্মী‌দের জন‌্যও বি‌শিষ্টজনরা নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি ব‌লেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় নি‌য়ে কথা ব‌লেন, তখন সাংবাদিকরা কখনও তা‌কে প্রশ্ন করেননি আপনি ভিয়েনা কনভেনশনের ৪১ ধারা লঙ্ঘন করছেন কি না? কিংবা তা‌দের দেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যার শিকার হওয়া নি‌য়ে কোনো প্রশ্ন করেন না। তারা যখন বলে, বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, কেউ তখন তাদের জিজ্ঞাসা করে না, আপনাদের দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কেমন? কত শতাংশ লোক ভোট দেন। আমরা শুনেছি যে ২৬ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেন না। এসব প্রশ্ন আমাদের সাংবাদিকরা করেন না।

মো‌মেন ব‌লেন, বৈঠকে থাকা বিশিষ্ট এক ব্যক্তি ব‌লে‌ছেন, কূটনীতিকদের কীভাবে প্রশ্ন করতে হয়, সাংবাদিকদের তার একটা ওরিয়েন্টেশন দরকার। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নি‌য়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে তারা আমাদের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

দিক-নির্দেশনার বিষ‌য়ে সুনির্দষ্টভাবে জান‌তে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, একটা হচ্ছে, আগামী দিনে আমরা কীভাবে কূটনীতিকদের ম্যানেজ করব। এ বিষ‌য়ে তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ১৪ কংগ্রেসম্যান চিঠি লিখেছেন। চি‌ঠি‌তে বাংলাদেশ নি‌য়ে যেসব ভুল তথ্য দেওয়া হ‌য়ে‌ছে, সেগু‌লো তু‌লে ধরা উচিত।

মার্কিন দুই কং‌গ্রেসম‌্যা‌নের বাংলা‌দেশ সফরের কারণ জান‌তে চাইলে মো‌মেন ব‌লেন, আমাদের ৫০ বছরপূর্তি উৎসবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খুব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে চান। সে কারণে একের পর এক মার্কিন সিনিয়র কর্মকর্তারা এসেছেন, আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। তারা স্বেচ্ছায় এসেছেন, আমরাও খুব খুশি।

তিনি ব‌লেন, দুজন আসছেন মূলত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি দেখার জন্য। রোহিঙ্গাদের আগে ১২ ডলার সহায়তা দেওয়া হতো এখন কমিয়ে আট ডলার করা হয়েছে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র। দুই কংগ্রেসম্যান একটি অনুমোদন কমিটির সদস্য, তারাই টাকা অনুমোদন করেন। এখন এসে দেখবেন, আরও অর্থের দরকার আছে কি না, বাড়ানোর প্রয়োজন কি না।