টানাপোড়েন মেটাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন বার কাউন্সিল নেতারা
- Update Time : ০৪:৩৮:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
- / 155
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারকের সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পর সেটি হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে কিছুটা শান্ত হয়েছে। এবার বার কাউন্সিলের নেতারা বলেছেন, তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা বারে যাবেন।
সে লক্ষ্যে আগামী ২৮ জানুয়ারি বর্ধিত সাধারণ সভা ডেকেছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। ওই সভায় আইনজীবী নেতাদের ডাকা হয়েছে।
বিচারকের বিরুদ্ধে স্লোগানের অভিযোগের তলবে ২১ আইনজীবী হাজিরের পর সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এমন তথ্য জানানো হয়।
আদালতে বার কাউন্সিলের কমপ্লায়েন্ট অ্যান্ড ভিজিলেন্স কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীদের সঙ্গে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধান করা হবে।
এ সময় আইনজীবীদের পক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির। এরপর আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন। ওই দিন আইনজীবীদের হাজির থাকতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বার কাউন্সিলের সদস্য আমাদের সভার কথা জানিয়েছেন। আমাদের মিটিংয়ের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাব। সেখানে আইনজীবীদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি কাম ডাউন করব। এজন্য সময় দিতে পারেন। এরপর আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন।’
আদালতে সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, ‘আগামী ২৮ জানুয়ারি বার কাউন্সিল একটি বর্ধিত সভা ডেকেছে। এতে জেলা বারের নেতাদের ডাকা হয়েছে। বার কাউন্সিল কমিটির সবাই সেখানে থাকবেন। আমরা মেসেজটা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাচ্ছি। আশা করি এ ধরনের ঘটনার সমাধান হবে।’
এর আগে, গত ১০ জানুয়ারি তাদের তলব করে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
২১ আইনজীবী হলেন—মিনহাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক হাদি, নিজামুদ্দিন খান রানা, আনিছুর রহমান মঞ্জু, মো. জুম্মন চৌধুরী, রাশেদ মিয়া হাজারী, জাহের আলী, মো. আ. আজিজ খান, দেওয়ান ইফতেখার রেজা রাসেল, মো. ছদর উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান রনি, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আরিফুল হক মাসুদ, মীর মোহাম্মদ রাইসুল আহম্মেদ, মহিবুর রহমান, মো. জাকারিয়া আহমেদ, মো. মোবারক উল্লা, মো. ফারুক আহমেদ ও সফিক আহমেদ।
গত ২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ‘এজলাসে আদালতের বিচারক ও কর্মচারীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং অশালীন আচরণের জন্য আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা’ শীর্ষক একটি চিঠি পাঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক।
ওই চিঠি প্রধান বিচারপতি বরাবরে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
সে অনুসারে এ বেঞ্চে নথি উপস্থাপন করা হয়। এরপর ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে সভাপতি তানভীর ভূঁঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) মো. আক্কাস আলী ও জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন।
১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। পরে ১৭ জানুয়ারি তিন আইনজীবী হাজিরের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর মধ্যে গত ৫ ও ৮ জানুয়ারি এজলাস চলাকালে কয়েকজন আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ শারমিন নিগারের বিরুদ্ধে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেন। এতে বিচারকাজ বিঘ্নিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিকার চেয়ে জেলা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর ৯ জানুয়ারি একটি চিঠি পাঠানো হয়।
তারপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেন।