ওড়িশায় আঘাত হেনেছে ইয়াস
- Update Time : ১১:১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মে ২০২১
- / 165
অতি প্রবল ঘূর্ণিঘঝড় ‘ইয়াস’ ভারতের ওড়িশায় আঘাত হেনেছে। রাজ্যের বালেশ্বরের কাছে ধামরা উপকূলে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বেগে এটি আছড়ে পড়ছে। ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার হতে পারে। আগামী ৩ ঘণ্টা ওড়িশাসহ ভারতের উপকূলীয় বিভিন্ন অঞ্চলে তাণ্ডব চালাবে।
আজ বুধবার (২৬ মে) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ভারতের আবহাওয়া দফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, ওড়িষার বালেশ্বরের দক্ষিণে ধামরা উপকূলে প্রবল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ছে ইয়াস। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানলেও এটির কেন্দ্র এখনও ওড়িশার ধামরা থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্ব উত্তর-পূর্ব, পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম ও বালেশ্বর থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়, গত ৬ ঘণ্টা ধরে ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার গতিবেগে এগোচ্ছে ইয়াস। বুধবার দুপুরের মধ্যে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রূপে ইয়াস ওড়িশার পারাদ্বীপ ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ ও ধামরার উত্তর দিক দিয়ে অতিক্রম করে যাবে। এটি পরে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যাবে।
তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুর পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপাড়া, জগৎসিংহপুরের মতো উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। অতি ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা পশ্চিবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
বাংলাদেশের উপকূল থেকে কিছুটা দূরে সরে গেল ইয়াস
সর্বশেষ ১৭ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আজ সকাল ৯টায় (২৬ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এর আগে ১৬ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছিল, এটি আজ সকাল ৬টায় (২৬ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোয় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলেও বিশেষ বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।