অচল হাইতির প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাতে বারবিকিউর লড়াই

  • Update Time : ০১:০৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
  • / 139

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এ গ্যাং এবং নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াইয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো অচল হাইতি। কারণ দেশটির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে কয়েকটি সশস্ত্র গ্যাং। পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং একটি কারাগারের কাছে ভারি বন্দুকযুদ্ধ চলছে।

হাইতির গ্যাং নেতা জিমি চেরিজিয়ার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি হেনরিকে অপসারণের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

বারবিকিউ নামেও পরিচিত এই গ্যাং নেতা বলেন, যুদ্ধ যতদিন দরকার ততদিন চলবে। আমরা এরিয়েল হেনরির সাথে লড়াই চালিয়ে যাব। জামানত সংক্রান্ত ক্ষতি এড়াতে, বাচ্চাদের বাড়িতে রাখুন।

LankaBangla securites single page
সাবেক এলিট পুলিশ কর্মকর্তা চেরিজিয়ের জি-নাইন অ্যান্ড ফ্যামিলি অ্যান্ড অ্যালাইজ নামে একটি গ্যাং ফেডারেশন পরিচালনা করেন। ২০২২ সালে দেশের বৃহত্তম তেল টার্মিনাল অবরুদ্ধ করে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল করে দিয়েছিলেন। জাতিসংঘ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার ওপর।

এবারের সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। শুক্রবার একদল পুলিশ কর্মকর্তা তাদের চার সহকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের দাবিতে ব্যবস্থাপনা অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান।

লড়াই শুরু হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী হেনরি দেশের বাইরে ছিলেন। আন্তর্জাতিক পুলিশিং এবং শান্তিরক্ষী মোতায়েনে সমর্থন জোরদার করার চেষ্টার অংশ হিসাবে কেনিয়ায় অবস্থান করছিলেন হেনরি।

রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এর রাস্তায় পোড়া বাস এবং ব্যারিকেডের সংখ্যা বেড়েছে। সহিংসতা এড়াতে আরো বেশি সংখ্যক মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই সহিংসতায় একাধিক গ্যাং “ভিভরে এনসেম্বল” (“একসঙ্গে বসবাস”) স্লোগানে একজোট হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাইতির বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নানা সশস্ত্র গ্যাং। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এক কোটি ১০ লাখ মানুষের এই দেশে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র নয় হাজার।

হেনরি কেনিয়া সফরে যাওয়ার পর সহিংসতার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। শুক্রবার (১ মার্চ) দুই দেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। নাইরোবি আশা করছে, এর ফলে একটি আন্তর্জাতিক পুলিশিং এবং শান্তিরক্ষা মিশনে নেতৃত্ব দেয়ার অংশ হিসাবে হাইতিতে এক হাজার পুলিশ কর্মকর্তা পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কেনিয়ার আদালতের আর আপত্তি থাকবে না।

জাতিসংঘ কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন দেশকে এমন অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী হেনরির দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে “সশস্ত্র দস্যুদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে” ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে। সরকার সংঘাত সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

নতুন লড়াইয়ের ফলে দেশটিতে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, হাইতির প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা তীব্র ক্ষুধায় ভুগছেন।

২০২১ সালের গ্রীষ্মে সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়েস খুব হওয়ার পর নির্বাচন আয়োজনে দেরি করার পেছনে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে দায়ী করে আসছে হেনরির সরকার।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


অচল হাইতির প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাতে বারবিকিউর লড়াই

Update Time : ০১:০৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এ গ্যাং এবং নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াইয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো অচল হাইতি। কারণ দেশটির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে কয়েকটি সশস্ত্র গ্যাং। পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং একটি কারাগারের কাছে ভারি বন্দুকযুদ্ধ চলছে।

হাইতির গ্যাং নেতা জিমি চেরিজিয়ার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি হেনরিকে অপসারণের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

বারবিকিউ নামেও পরিচিত এই গ্যাং নেতা বলেন, যুদ্ধ যতদিন দরকার ততদিন চলবে। আমরা এরিয়েল হেনরির সাথে লড়াই চালিয়ে যাব। জামানত সংক্রান্ত ক্ষতি এড়াতে, বাচ্চাদের বাড়িতে রাখুন।

LankaBangla securites single page
সাবেক এলিট পুলিশ কর্মকর্তা চেরিজিয়ের জি-নাইন অ্যান্ড ফ্যামিলি অ্যান্ড অ্যালাইজ নামে একটি গ্যাং ফেডারেশন পরিচালনা করেন। ২০২২ সালে দেশের বৃহত্তম তেল টার্মিনাল অবরুদ্ধ করে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল করে দিয়েছিলেন। জাতিসংঘ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার ওপর।

এবারের সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। শুক্রবার একদল পুলিশ কর্মকর্তা তাদের চার সহকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের দাবিতে ব্যবস্থাপনা অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান।

লড়াই শুরু হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী হেনরি দেশের বাইরে ছিলেন। আন্তর্জাতিক পুলিশিং এবং শান্তিরক্ষী মোতায়েনে সমর্থন জোরদার করার চেষ্টার অংশ হিসাবে কেনিয়ায় অবস্থান করছিলেন হেনরি।

রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এর রাস্তায় পোড়া বাস এবং ব্যারিকেডের সংখ্যা বেড়েছে। সহিংসতা এড়াতে আরো বেশি সংখ্যক মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই সহিংসতায় একাধিক গ্যাং “ভিভরে এনসেম্বল” (“একসঙ্গে বসবাস”) স্লোগানে একজোট হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাইতির বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নানা সশস্ত্র গ্যাং। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এক কোটি ১০ লাখ মানুষের এই দেশে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র নয় হাজার।

হেনরি কেনিয়া সফরে যাওয়ার পর সহিংসতার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। শুক্রবার (১ মার্চ) দুই দেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। নাইরোবি আশা করছে, এর ফলে একটি আন্তর্জাতিক পুলিশিং এবং শান্তিরক্ষা মিশনে নেতৃত্ব দেয়ার অংশ হিসাবে হাইতিতে এক হাজার পুলিশ কর্মকর্তা পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কেনিয়ার আদালতের আর আপত্তি থাকবে না।

জাতিসংঘ কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন দেশকে এমন অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী হেনরির দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে “সশস্ত্র দস্যুদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে” ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে। সরকার সংঘাত সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

নতুন লড়াইয়ের ফলে দেশটিতে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, হাইতির প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা তীব্র ক্ষুধায় ভুগছেন।

২০২১ সালের গ্রীষ্মে সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়েস খুব হওয়ার পর নির্বাচন আয়োজনে দেরি করার পেছনে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে দায়ী করে আসছে হেনরির সরকার।