মরক্কোয় নিহত ২৮০০ ছাড়াল, জীবিতদের উদ্ধারের আশা ক্ষীণ

  • Update Time : ০৯:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 110

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে নিখোঁজ জীবিতদের সন্ধানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে দিন যত গড়াচ্ছে জীবিতদের উদ্ধারের আশা ততই ক্ষীণ হচ্ছে। খবর আলজাজিরা।

মরক্কোয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৮৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের পাশাপাশি বেড়েছে আহতের সংখ্যাও। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ২ হাজার ৫৬২ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয় মরক্কো। এ ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহতের পাশাপাশি অ্যাটলাস পর্বতমালার আশপাশে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন এবং ইট ও মাটির তৈরি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ দুর্যোগে তিন লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল অ্যাটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। এ জায়গাটি দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মারাকেশ শহরই।

ভূমিকম্পের পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মরক্কোর প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের মধ্যে স্পেনের উদ্ধারদল ইউনাইটেড ফায়ারফাইটারস উইদাউট বর্ডারসও রয়েছে। সংস্থাটির ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইমি এন’টালার এক প্রত্যন্ত গ্রামে ধ্বংসস্তূপের ওপর উদ্ধারকাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরও।

ইউনাইটেড ফায়ারফাইটারস উইদাউট বর্ডারসের উদ্ধারকর্মী আন্তোনিও নোগালেস বলেন, ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ভয়াবহ। এই গ্রামের একটি বাড়িঘর দাঁড়িয়ে নেই। সব মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

তিনি বলেন, তবে আগামী দিনে আমরা কয়েক মানুষকে হলেও উদ্ধার করতে পারব। ধসে পড়া বাড়িঘরের নিচে এখনো অনেক মানুষ থাকতে পারে। সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থাও থাকতে পারে। আমি যেমনটা বলি, আমরা কখনই আশা ছাড়ি না।

এদিকে শুরুর দিকে ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মানুষ সাড়াদানে দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও সোমবারে উদ্ধার প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে সরকার। বিভিন্ন এলাকায় তাঁবু নির্মাণ করা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে এসব তাঁবুতে চতুর্থ রাতযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভূমিকম্পে সব হারানো মানুষজন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মরক্কোয় নিহত ২৮০০ ছাড়াল, জীবিতদের উদ্ধারের আশা ক্ষীণ

Update Time : ০৯:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে নিখোঁজ জীবিতদের সন্ধানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে দিন যত গড়াচ্ছে জীবিতদের উদ্ধারের আশা ততই ক্ষীণ হচ্ছে। খবর আলজাজিরা।

মরক্কোয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৮৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের পাশাপাশি বেড়েছে আহতের সংখ্যাও। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ২ হাজার ৫৬২ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয় মরক্কো। এ ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহতের পাশাপাশি অ্যাটলাস পর্বতমালার আশপাশে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন এবং ইট ও মাটির তৈরি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ দুর্যোগে তিন লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল অ্যাটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। এ জায়গাটি দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মারাকেশ শহরই।

ভূমিকম্পের পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মরক্কোর প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের মধ্যে স্পেনের উদ্ধারদল ইউনাইটেড ফায়ারফাইটারস উইদাউট বর্ডারসও রয়েছে। সংস্থাটির ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইমি এন’টালার এক প্রত্যন্ত গ্রামে ধ্বংসস্তূপের ওপর উদ্ধারকাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরও।

ইউনাইটেড ফায়ারফাইটারস উইদাউট বর্ডারসের উদ্ধারকর্মী আন্তোনিও নোগালেস বলেন, ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ভয়াবহ। এই গ্রামের একটি বাড়িঘর দাঁড়িয়ে নেই। সব মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

তিনি বলেন, তবে আগামী দিনে আমরা কয়েক মানুষকে হলেও উদ্ধার করতে পারব। ধসে পড়া বাড়িঘরের নিচে এখনো অনেক মানুষ থাকতে পারে। সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থাও থাকতে পারে। আমি যেমনটা বলি, আমরা কখনই আশা ছাড়ি না।

এদিকে শুরুর দিকে ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মানুষ সাড়াদানে দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও সোমবারে উদ্ধার প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে সরকার। বিভিন্ন এলাকায় তাঁবু নির্মাণ করা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে এসব তাঁবুতে চতুর্থ রাতযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভূমিকম্পে সব হারানো মানুষজন।