সুইডেনে কোরআন অবমাননায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা

  • Update Time : ০৩:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 125

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সুইডেনে কোরআন অবমাননায় ব্যাপক সহিংসতা ও বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ইরাকের নাগরিক সালমান মোমিকা পবিত্র কোরআনে অবমাননা করার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে দেশটির পুলিশ।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীরা মালমো শহরে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ সময়ে প্রায় শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ করে। তাদের মধ্যে ১০ জনকে জনগণের ভোগান্তিতে ফেলার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভার্নহেমস্টরগেট নামক এলাকায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে পবিত্র কোরআনে আগুন দেন সালমান। এর আগেও তিনি একাধিকবার কোরআনে আগুন দিয়েছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডের কারণে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রোববারের ঘটনার ফলে সুইডেনে বিক্ষোভ করে মুসলিমরা।

শহরের কর্মকর্তারা জানান, বিক্ষোভ চলাকালে তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ ও বৈদ্যুতিক স্কুটার ছোড়া হয়েছে। এ ছাড়া মালমো শহরের কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ এলাকাটি এমনিতে অভিবাসী-অধ্যুষিত অঞ্চল এবং অতীতেও এখানে ক্ষোভের নজির রয়েছে।

মালমো শহরের পুলিশ কমান্ডার পেট্রা স্টেনকুলা স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, এই ধরনের যেকোনো ঘটনা মানুষের মধ্যে তীব্র আবেগ জাগিয়ে তোলে। তবে রোববার বিকেলের মতো বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা সহ্য করার সুযোগ নেই। এ ধরনের সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এর আগে পবিত্র কোরআন পোড়ানো বন্ধ করতে আইন সংশোধনের কথা জানিয়েছিল সুইডেন সরকার। তবে আইন সংশোধন হলেও যেকোনো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি দেবে পুলিশ বলে জানানো হয়।

সুইডেনের বিচারমন্ত্রী গানার স্ট্রম জানান, দেশের আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে শিগগিরই একটি কমিশন নিয়োগ দেওয়া হবে। সুইডেনের বিতর্কিত বাকস্বাধীনতা আইনের কারণে দেশটিতে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ধর্ম অবমাননার ঘটনা ঘটছে। এতদিন এই আইন পরিবর্তনের বিষয়টি নাকচ করে আসছিল সরকার।

গানার স্ট্রম বলেন, সম্প্রতি দেশে টানা বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে সুইডেনের বিরুদ্ধে হুমকি আসছে। ফলে সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তাকে আমরা কোনোভাবেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না।

সম্প্রতি সুইডেনে বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সমগ্র বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে। এমনকি বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির উদ্যোগে জাতিসংঘে সুইডেনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়।

তবে সরকারের এমন উদ্যোগকে ভালোভাবে নেয়নি সুইডেনের বেশ কয়েকটি দল। তারা বলছে, ইসলামপন্থিদের সামনে সরকার নতজানু হয়ে পড়েছে

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সুইডেনে কোরআন অবমাননায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা

Update Time : ০৩:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সুইডেনে কোরআন অবমাননায় ব্যাপক সহিংসতা ও বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ইরাকের নাগরিক সালমান মোমিকা পবিত্র কোরআনে অবমাননা করার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে দেশটির পুলিশ।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীরা মালমো শহরে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ সময়ে প্রায় শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ করে। তাদের মধ্যে ১০ জনকে জনগণের ভোগান্তিতে ফেলার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভার্নহেমস্টরগেট নামক এলাকায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে পবিত্র কোরআনে আগুন দেন সালমান। এর আগেও তিনি একাধিকবার কোরআনে আগুন দিয়েছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডের কারণে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রোববারের ঘটনার ফলে সুইডেনে বিক্ষোভ করে মুসলিমরা।

শহরের কর্মকর্তারা জানান, বিক্ষোভ চলাকালে তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ ও বৈদ্যুতিক স্কুটার ছোড়া হয়েছে। এ ছাড়া মালমো শহরের কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ এলাকাটি এমনিতে অভিবাসী-অধ্যুষিত অঞ্চল এবং অতীতেও এখানে ক্ষোভের নজির রয়েছে।

মালমো শহরের পুলিশ কমান্ডার পেট্রা স্টেনকুলা স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, এই ধরনের যেকোনো ঘটনা মানুষের মধ্যে তীব্র আবেগ জাগিয়ে তোলে। তবে রোববার বিকেলের মতো বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা সহ্য করার সুযোগ নেই। এ ধরনের সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এর আগে পবিত্র কোরআন পোড়ানো বন্ধ করতে আইন সংশোধনের কথা জানিয়েছিল সুইডেন সরকার। তবে আইন সংশোধন হলেও যেকোনো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি দেবে পুলিশ বলে জানানো হয়।

সুইডেনের বিচারমন্ত্রী গানার স্ট্রম জানান, দেশের আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে শিগগিরই একটি কমিশন নিয়োগ দেওয়া হবে। সুইডেনের বিতর্কিত বাকস্বাধীনতা আইনের কারণে দেশটিতে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ধর্ম অবমাননার ঘটনা ঘটছে। এতদিন এই আইন পরিবর্তনের বিষয়টি নাকচ করে আসছিল সরকার।

গানার স্ট্রম বলেন, সম্প্রতি দেশে টানা বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে সুইডেনের বিরুদ্ধে হুমকি আসছে। ফলে সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তাকে আমরা কোনোভাবেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না।

সম্প্রতি সুইডেনে বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সমগ্র বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে। এমনকি বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির উদ্যোগে জাতিসংঘে সুইডেনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়।

তবে সরকারের এমন উদ্যোগকে ভালোভাবে নেয়নি সুইডেনের বেশ কয়েকটি দল। তারা বলছে, ইসলামপন্থিদের সামনে সরকার নতজানু হয়ে পড়েছে