ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করছে রাশিয়া

  • Update Time : ১২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
  • / 152

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই বছরের পাইলট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করছে রাশিয়া। এই প্রথমবারের মতো দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদন দিলো।

রাশিয়ায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা আনুমানিক প্রায় আড়াই কোটি। দেশটিতে বেশ কিছু ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও ছিলো না ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

বুধবার আলজাজিরা জানায়, গত ৪ আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইসলামি ব্যাংকিং এর ‘সম্ভাব্যতা’ মূল্যায়ন করার জন্য একটি আইনে স্বাক্ষর করেন।

পাইলট প্রোগ্রামটি চারটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজাতন্ত্রে অনুষ্ঠিত হবে- তাতারস্তান, বাশকোর্তোস্তান, চেচনিয়া এবং দাগেস্তান। এসব এলাকায় ইতোমধ্যে ইসলামিক অর্থায়নে সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।

যদি প্রোগ্রামটি সফল প্রমাণিত হয়, তবে দেশের বাকি অংশে নতুন নিয়ম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা সবেরব্যাংক এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওলেগ গণেভের মতে, ইসলামি ব্যাংকিং সেক্টরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে সাত দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এক্সপার্টস ইন ইসলামিক ফাইন্যান্সের নির্বাহী সম্পাদক কালিমুলিনা বলেন, ক্রমবর্ধমান বাজারের নিয়ন্ত্রণ এবং বিনিয়োগকারী ও ক্লায়েন্টদের সুরক্ষা প্রয়োজন। কিন্তু ইসলামিক ফাইন্যান্স মার্কেট বন্ধকি অর্থায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাগুলো ব্যবহার করতে পারে না, কারণ সেগুলো সবই সুদ বহনকারী ঋণের উপর ভিত্তি করে, যা শরীয়তের পরিপন্থি।

তিনি জানান, এই বাধাগুলো গৃহীত আইনে বন্ধকী অর্থের জন্য আংশিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, পরীক্ষাটি ইসলামিক ফাইন্যান্স ডেভেলপমেন্টের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করার অনুমতি দেবে ।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভিজিটর ডায়ানা গালিভার মতে, ইসলামিক ব্যাংকিং হলো ‘একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উদ্যোগ’, যা ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকে রাশিয়ায় আলোচনা করা হয়ে আসছে।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর রাশিয়ান ব্যাঙ্কগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়ে। এরপর রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর অ্যাসোসিয়েশন রাশিয়ান ফেডারেশনে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দেয়ার এবং শরিয়া ব্যাঙ্কগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক সেক্টরের উপর পশ্চিমা চাপ ইসলামিক ব্যাংকিং চালুর প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করছে রাশিয়া

Update Time : ১২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই বছরের পাইলট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করছে রাশিয়া। এই প্রথমবারের মতো দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদন দিলো।

রাশিয়ায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা আনুমানিক প্রায় আড়াই কোটি। দেশটিতে বেশ কিছু ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও ছিলো না ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

বুধবার আলজাজিরা জানায়, গত ৪ আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইসলামি ব্যাংকিং এর ‘সম্ভাব্যতা’ মূল্যায়ন করার জন্য একটি আইনে স্বাক্ষর করেন।

পাইলট প্রোগ্রামটি চারটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজাতন্ত্রে অনুষ্ঠিত হবে- তাতারস্তান, বাশকোর্তোস্তান, চেচনিয়া এবং দাগেস্তান। এসব এলাকায় ইতোমধ্যে ইসলামিক অর্থায়নে সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।

যদি প্রোগ্রামটি সফল প্রমাণিত হয়, তবে দেশের বাকি অংশে নতুন নিয়ম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা সবেরব্যাংক এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওলেগ গণেভের মতে, ইসলামি ব্যাংকিং সেক্টরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে সাত দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এক্সপার্টস ইন ইসলামিক ফাইন্যান্সের নির্বাহী সম্পাদক কালিমুলিনা বলেন, ক্রমবর্ধমান বাজারের নিয়ন্ত্রণ এবং বিনিয়োগকারী ও ক্লায়েন্টদের সুরক্ষা প্রয়োজন। কিন্তু ইসলামিক ফাইন্যান্স মার্কেট বন্ধকি অর্থায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাগুলো ব্যবহার করতে পারে না, কারণ সেগুলো সবই সুদ বহনকারী ঋণের উপর ভিত্তি করে, যা শরীয়তের পরিপন্থি।

তিনি জানান, এই বাধাগুলো গৃহীত আইনে বন্ধকী অর্থের জন্য আংশিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, পরীক্ষাটি ইসলামিক ফাইন্যান্স ডেভেলপমেন্টের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করার অনুমতি দেবে ।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভিজিটর ডায়ানা গালিভার মতে, ইসলামিক ব্যাংকিং হলো ‘একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উদ্যোগ’, যা ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকে রাশিয়ায় আলোচনা করা হয়ে আসছে।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর রাশিয়ান ব্যাঙ্কগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়ে। এরপর রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর অ্যাসোসিয়েশন রাশিয়ান ফেডারেশনে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দেয়ার এবং শরিয়া ব্যাঙ্কগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক সেক্টরের উপর পশ্চিমা চাপ ইসলামিক ব্যাংকিং চালুর প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করেছে।