কোরআন অবমাননা: পাকিস্তানে একাধিক চার্চে আগুন

  • Update Time : ০৬:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
  • / 174

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কোরআনের অবমাননা করা হয়েছে এই অভিযোগে পাকিস্তানে একটি খ্রিস্টান অঞ্চলে আগুন দিয়েছে দেশটির মানুষ। পাকিস্তানের ফায়সলাবাদের জারানওয়ালা টাউনে এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ওই এলাকায় বেশ কিছু চার্চ এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বসবাসকারী একটি পরিবার কোরানের অবমাননা করেছে। সে কারণেই এই হামলা। বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থি মুসলিম গোষ্ঠী এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে।

পাকিস্তানের খ্রিস্টান নেতা আকমল ভাট্টি জানিয়েছেন, একটি মসজিদ থেকে এই আক্রমণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এলাকার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালান। উন্মত্ত জনতা অন্তত পাঁচটি চার্চে আগুন ধরিয়েছে। খালি বাড়িগুলিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। দামি জিনিস লুঠ করা হয়েছে। পরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় পুলিশ ডন পত্রিকাকে জানিয়েছে, এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। আক্রমণকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাদের এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কোরানের অবমাননার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে তাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পাকিস্তানের বিশপ আজাদ মারশাল লাহোর থেকে জানিয়েছেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।

পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকার জানিয়েছেন, ঘটনার ছবি দেখে তিনি শিউরে উঠেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তা বাহিনীকে এলাকা ঘিরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার আইন অত্যন্ত কড়া। এই আইনে মামলা হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে শতাধিক ব্যক্তি এই আইনে জেলে থাকলেও এখনো পর্যন্ত কারো মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এর আগেও জনতার তাণ্ডব দেখেছে পাকিস্তান। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আদালতেও এই মামলার দ্রুত শুনানি হয়। কারণ, এই মামলা ঘিরে আদালতেও উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কোরআন অবমাননা: পাকিস্তানে একাধিক চার্চে আগুন

Update Time : ০৬:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কোরআনের অবমাননা করা হয়েছে এই অভিযোগে পাকিস্তানে একটি খ্রিস্টান অঞ্চলে আগুন দিয়েছে দেশটির মানুষ। পাকিস্তানের ফায়সলাবাদের জারানওয়ালা টাউনে এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ওই এলাকায় বেশ কিছু চার্চ এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বসবাসকারী একটি পরিবার কোরানের অবমাননা করেছে। সে কারণেই এই হামলা। বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থি মুসলিম গোষ্ঠী এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে।

পাকিস্তানের খ্রিস্টান নেতা আকমল ভাট্টি জানিয়েছেন, একটি মসজিদ থেকে এই আক্রমণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এলাকার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালান। উন্মত্ত জনতা অন্তত পাঁচটি চার্চে আগুন ধরিয়েছে। খালি বাড়িগুলিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। দামি জিনিস লুঠ করা হয়েছে। পরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় পুলিশ ডন পত্রিকাকে জানিয়েছে, এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। আক্রমণকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাদের এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কোরানের অবমাননার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে তাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পাকিস্তানের বিশপ আজাদ মারশাল লাহোর থেকে জানিয়েছেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।

পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকার জানিয়েছেন, ঘটনার ছবি দেখে তিনি শিউরে উঠেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তা বাহিনীকে এলাকা ঘিরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার আইন অত্যন্ত কড়া। এই আইনে মামলা হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে শতাধিক ব্যক্তি এই আইনে জেলে থাকলেও এখনো পর্যন্ত কারো মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এর আগেও জনতার তাণ্ডব দেখেছে পাকিস্তান। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আদালতেও এই মামলার দ্রুত শুনানি হয়। কারণ, এই মামলা ঘিরে আদালতেও উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।