পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে ২৫০০ কেজির স্যাটেলাইট

  • Update Time : ০২:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 160

নিউজ ডেস্কঃ 

প্রায় চার দশক মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্যাটেলাইট।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবসরে যাওয়া এই স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি থাকলেও তার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

নাসার মতে, ২ হাজার ৪৫০ কেজির (৫ হাজার ৪০০ পাউণ্ড) স্যাটেলাইটের বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অবস্থাতেই পুড়ে যাওয়ার কথা। অবশিষ্ট কিছু অংশ থাকবে, যা পৃথিবীতে এসে পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি বলছে, এর ধ্বংসাবশেষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা ৯ হাজার ৪০০ ভাগের ১ ভাগ।

তবে স্যাটেলাইটের খণ্ডিত অংশগুলো কোথায় এসে পড়বে, সে সম্পর্কে জানায়নি মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। আর এসব স্যাটেলাইট পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে নামিয়ে আনার কোনো প্রযুক্তি নেই।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সায়েন্স স্যাটেলাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রবিবার রাতে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। মহাকাশ থেকে ছিটকে পৃথিবীতে পতিত হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ১৭ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

তবে স্যাটেলাইট পতিত হওয়ার সময়সীমার সঙ্গে একমত নন ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যারোস্পেস করপোরেশন। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে আফ্রিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে যাবে স্যাটেলাইটটি। এ ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটির জন্য ১৩ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইটটিকে (ইআরবিএস) ‘স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার’-এ করে ৫ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়।

স্যাটেলাইটটিকে কোনো অটোমেটিক প্রযুক্তিতে স্থাপন করা হয়নি। মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী নভোচারী স্যালি রাইড রিমোট কন্ট্রোলচালিত শাটল রোবটের হাত ব্যবহার করে লো আর্থ কক্ষপথে স্যাটেলাইটটি ছেড়েছিলেন।

চ্যালেঞ্জারের সেই একই মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হিসেবে ক্যাথরিন সুলিভান স্পেসওয়াক করেছিলেন। এ ছাড়া ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২ নারী মহাকাশচারী একত্রে মহাকাশে যান।

‘বল অ্যারোস্পেস’-এর তৈরি ইআরবিএস স্যাটেলাইটের প্রত্যাশিত কর্মদিবস ছিল ২ বছর। পরে টানা ২১ বছর সার্ভিস দেওয়ার পরে ১৪ অক্টোবর ২০০৫ সালে এটিকে অবসরে পাঠানো হয়।

অবসরের আগপর্যন্ত সফলতার সঙ্গে ইআরবিএস ওজোন স্তর ও অন্যান্য বায়ুমণ্ডলীয় বিষয়াদি পরিমাপ করে আর্থ স্টেশনে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর শক্তির উৎস হিসেবে সূর্যের ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণাতে ব্যবহৃত হয়েছিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে ২৫০০ কেজির স্যাটেলাইট

Update Time : ০২:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

নিউজ ডেস্কঃ 

প্রায় চার দশক মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্যাটেলাইট।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবসরে যাওয়া এই স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি থাকলেও তার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

নাসার মতে, ২ হাজার ৪৫০ কেজির (৫ হাজার ৪০০ পাউণ্ড) স্যাটেলাইটের বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অবস্থাতেই পুড়ে যাওয়ার কথা। অবশিষ্ট কিছু অংশ থাকবে, যা পৃথিবীতে এসে পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি বলছে, এর ধ্বংসাবশেষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা ৯ হাজার ৪০০ ভাগের ১ ভাগ।

তবে স্যাটেলাইটের খণ্ডিত অংশগুলো কোথায় এসে পড়বে, সে সম্পর্কে জানায়নি মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। আর এসব স্যাটেলাইট পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে নামিয়ে আনার কোনো প্রযুক্তি নেই।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সায়েন্স স্যাটেলাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রবিবার রাতে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। মহাকাশ থেকে ছিটকে পৃথিবীতে পতিত হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ১৭ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

তবে স্যাটেলাইট পতিত হওয়ার সময়সীমার সঙ্গে একমত নন ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যারোস্পেস করপোরেশন। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে আফ্রিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে যাবে স্যাটেলাইটটি। এ ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটির জন্য ১৩ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইটটিকে (ইআরবিএস) ‘স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার’-এ করে ৫ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়।

স্যাটেলাইটটিকে কোনো অটোমেটিক প্রযুক্তিতে স্থাপন করা হয়নি। মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী নভোচারী স্যালি রাইড রিমোট কন্ট্রোলচালিত শাটল রোবটের হাত ব্যবহার করে লো আর্থ কক্ষপথে স্যাটেলাইটটি ছেড়েছিলেন।

চ্যালেঞ্জারের সেই একই মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হিসেবে ক্যাথরিন সুলিভান স্পেসওয়াক করেছিলেন। এ ছাড়া ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২ নারী মহাকাশচারী একত্রে মহাকাশে যান।

‘বল অ্যারোস্পেস’-এর তৈরি ইআরবিএস স্যাটেলাইটের প্রত্যাশিত কর্মদিবস ছিল ২ বছর। পরে টানা ২১ বছর সার্ভিস দেওয়ার পরে ১৪ অক্টোবর ২০০৫ সালে এটিকে অবসরে পাঠানো হয়।

অবসরের আগপর্যন্ত সফলতার সঙ্গে ইআরবিএস ওজোন স্তর ও অন্যান্য বায়ুমণ্ডলীয় বিষয়াদি পরিমাপ করে আর্থ স্টেশনে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর শক্তির উৎস হিসেবে সূর্যের ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণাতে ব্যবহৃত হয়েছিল।