এশিয়ার উপর বাড়তি মনোযোগ পুতিনের

  • Update Time : ১০:৫২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / 226

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব জোরদার করছে এশিয়ার দেশগুলো। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে পর্যটক থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি সব খাতেই মস্কোর অংশীদারত্ব চাইছে চীন, ভারত, ইরান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার। অন্যদিকে রাশিয়ারও বাড়তি মনোযোগ এশিয়ার দিকে।

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর জেরে পৃথিবীজুড়ে নানা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে রাশিয়া। রুশ অর্থনীতি পুরোপুরি গুড়িয়ে দিতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে অনুসরণ করে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বিভিন্ন দেশ।

তবে ব্যতিক্রম এশিয়াতে। সিঙ্গাপুর, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া এশিয়ার অন্য কোন দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। উল্টো পশ্চিমা চাপ উপেক্ষা করে মস্কোর সাথে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে। করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় অকপটে লুফে নিচ্ছে পুতিনের দেয়া আকর্ষণীয় বাণিজ্য চুক্তিগুলোকে।

এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি ভারত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নির্ভর করতো যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যের ওপর। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানির দাম বাড়ায় বর্তমানে কম দামে রাশিয়া থেকে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনছে ভারত। এছাড়া কয়লার আমদানির পাশাপাশি বাড়াচ্ছে অংশীদারিত্ব ব্যবসা।

২০২৩ সালে রাশিয়ার সাথে ১ হাজার কোটি ডলার বাণিজ্য করার লক্ষ্যে একমত হয়েছে থাইল্যান্ড। গাড়ি, খাদ্য, সার, জ্বালানি কেনাবেচা ছাড়াও প্রযুক্তিখাতে একসঙ্গে কাজ করবে দেশ দুটি। এছাড়া করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছে রাশিয়া থেকে। চলতি বছর ১০ লাখ রুশ পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্য রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির।

এশিয়ার সম্ভাবনাময় একটি দেশ ভিয়েতনাম। ইউক্রেন সংকটে উভয়পক্ষের সাথেই সুসম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে দেশটি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভিয়েতনামে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। যুক্ত হচ্ছে নানা অংশীদারি ব্যবসায়। অপরদিকে রাশিয়া থেকেও দিব্যি তেল গ্যাস এবং সামরিক সরঞ্জাম কিনছে দেশটি। গত জুলাইয়েও ভিয়েতনাম সফরের যান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এছাড়া রুশ জ্বালানি কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার। সম্প্রতি মস্কো সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন মিয়ানমার জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের বিকল্প বাজার হিসেবে এশিয়ার চেয়ে ভাল কোন বিকল্প নেই রাশিয়ার। পাশাপাশি ব্যবসায়িক সুবিধার বিনিময়ে কূটনৈতিক সমর্থন জেতার লক্ষ্যে এশিয়াতে বাড়তি মনোযোগ দিয়েছেন পুতিন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


এশিয়ার উপর বাড়তি মনোযোগ পুতিনের

Update Time : ১০:৫২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব জোরদার করছে এশিয়ার দেশগুলো। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে পর্যটক থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি সব খাতেই মস্কোর অংশীদারত্ব চাইছে চীন, ভারত, ইরান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার। অন্যদিকে রাশিয়ারও বাড়তি মনোযোগ এশিয়ার দিকে।

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর জেরে পৃথিবীজুড়ে নানা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে রাশিয়া। রুশ অর্থনীতি পুরোপুরি গুড়িয়ে দিতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে অনুসরণ করে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বিভিন্ন দেশ।

তবে ব্যতিক্রম এশিয়াতে। সিঙ্গাপুর, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া এশিয়ার অন্য কোন দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। উল্টো পশ্চিমা চাপ উপেক্ষা করে মস্কোর সাথে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে। করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় অকপটে লুফে নিচ্ছে পুতিনের দেয়া আকর্ষণীয় বাণিজ্য চুক্তিগুলোকে।

এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি ভারত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নির্ভর করতো যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যের ওপর। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানির দাম বাড়ায় বর্তমানে কম দামে রাশিয়া থেকে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনছে ভারত। এছাড়া কয়লার আমদানির পাশাপাশি বাড়াচ্ছে অংশীদারিত্ব ব্যবসা।

২০২৩ সালে রাশিয়ার সাথে ১ হাজার কোটি ডলার বাণিজ্য করার লক্ষ্যে একমত হয়েছে থাইল্যান্ড। গাড়ি, খাদ্য, সার, জ্বালানি কেনাবেচা ছাড়াও প্রযুক্তিখাতে একসঙ্গে কাজ করবে দেশ দুটি। এছাড়া করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছে রাশিয়া থেকে। চলতি বছর ১০ লাখ রুশ পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্য রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির।

এশিয়ার সম্ভাবনাময় একটি দেশ ভিয়েতনাম। ইউক্রেন সংকটে উভয়পক্ষের সাথেই সুসম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে দেশটি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভিয়েতনামে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। যুক্ত হচ্ছে নানা অংশীদারি ব্যবসায়। অপরদিকে রাশিয়া থেকেও দিব্যি তেল গ্যাস এবং সামরিক সরঞ্জাম কিনছে দেশটি। গত জুলাইয়েও ভিয়েতনাম সফরের যান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এছাড়া রুশ জ্বালানি কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার। সম্প্রতি মস্কো সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন মিয়ানমার জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের বিকল্প বাজার হিসেবে এশিয়ার চেয়ে ভাল কোন বিকল্প নেই রাশিয়ার। পাশাপাশি ব্যবসায়িক সুবিধার বিনিময়ে কূটনৈতিক সমর্থন জেতার লক্ষ্যে এশিয়াতে বাড়তি মনোযোগ দিয়েছেন পুতিন।