নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে, হুমকির মুখে মাছের ঘের

  • Update Time : ০৬:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
  • / 172

কমল পাটোয়ারি,মিরসরাই প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ফেনী নদীর অংশে ইজারাবিহীন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর তীরঘেঁষা মানুষগুলো। উপজেলার ৫নং ওচমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর অংশে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। যত্রতত্র বালু উত্তোনের ফলে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোয় তীব্র ভাঙনের দেখা দিয়েছে।

এতে মাছের ঘেরসহ মানুষের বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে ।এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাজীর কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিকের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন যাবৎ বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় ২০০ একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে ভাঙনের মুখে পড়েছে।

উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর কোলঘেঁষে আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা অংশে ফেনী নদীর মোহনায় ট্রলারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। নদীর ঐ পারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয়রা কিছু বলার সাহস পান না।২০১০ সালের বালুমহল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।

এছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু নদীর যে অংশে বালু উত্তোলন হচ্ছে এর পাশে রয়েছে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের স্লুইসগেট, যা ওই বৃহত্তর অঞ্চলের চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে এলেও এর ফলে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের স্লুইসগেটিও হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, ফেনী নদীর মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা প্রতিনিয়ত সোনাগাজীর প্রভাবশালীরা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন ১৫-২০টি বোট ও কাটারের মাধ্যমে দিন-রাত মিরসরাই অংশে চুরি করে আমাদের দীঘির পাশে বালু উত্তোলন করছে। নদীর গভীরে বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় ২০০ একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।৫নং ওচমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক মাস্টার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি জেনেছি।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজায় কোনো ইজারা নেই। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে, হুমকির মুখে মাছের ঘের

Update Time : ০৬:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

কমল পাটোয়ারি,মিরসরাই প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ফেনী নদীর অংশে ইজারাবিহীন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর তীরঘেঁষা মানুষগুলো। উপজেলার ৫নং ওচমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর অংশে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। যত্রতত্র বালু উত্তোনের ফলে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোয় তীব্র ভাঙনের দেখা দিয়েছে।

এতে মাছের ঘেরসহ মানুষের বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে ।এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাজীর কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিকের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন যাবৎ বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় ২০০ একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে ভাঙনের মুখে পড়েছে।

উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর কোলঘেঁষে আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা অংশে ফেনী নদীর মোহনায় ট্রলারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। নদীর ঐ পারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয়রা কিছু বলার সাহস পান না।২০১০ সালের বালুমহল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।

এছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু নদীর যে অংশে বালু উত্তোলন হচ্ছে এর পাশে রয়েছে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের স্লুইসগেট, যা ওই বৃহত্তর অঞ্চলের চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে এলেও এর ফলে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের স্লুইসগেটিও হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, ফেনী নদীর মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা প্রতিনিয়ত সোনাগাজীর প্রভাবশালীরা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন ১৫-২০টি বোট ও কাটারের মাধ্যমে দিন-রাত মিরসরাই অংশে চুরি করে আমাদের দীঘির পাশে বালু উত্তোলন করছে। নদীর গভীরে বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় ২০০ একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।৫নং ওচমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক মাস্টার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি জেনেছি।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আজমপুর, পতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজায় কোনো ইজারা নেই। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।