পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ
- Update Time : ০৬:৩৭:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
- / 158
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ থেকে তেহরিক-ই-ইনসাফের দলীয় সদস্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মুসলিম লিগ নওয়াজ-এনের নেতা শেহবাজ শরীফ। তিনি দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে ভোটাভুটি ডেপুটি স্পিকার কাসেম সুরির নেতৃত্বে ভোটাভুটি শুরু হয় হয়।তবে ভোটাভুটি শুরুর কিছুক্ষণ পূর্বে জাতীয় পরিষদ থেকে ওয়াক-আউট করেন সদ্য ক্ষমতা হারানো তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই দলের সদস্যরা।এসময় ডেপুটি স্পিকার কাসেম সুরিও পদত্যাগ করেন।
সোমবার ভোটাভুটি শুরু হওয়ার পূর্বে আকস্মিকভাবে পার্লামেন্টে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পরে দলীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে দলীয় সদস্যদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন। তবে কয়েকজন আপত্তি জানালে সবার আগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ইমরান। তারপরই দলীয় সদস্যরা পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানায়।
গত শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। আর অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।
শেহবাজ শরীফ পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ছোট ভাই। ৭০ বছর বয়স্ক শেহবাজ বিরোধী দলনেতা হওয়ার আগে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাঞ্জাব প্রদেশের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
বিরোধী দলগুলোর যৌথ সম্মেলনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এর কো-চেয়ার আসিফ আলি জারদারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেহবাজ শরীফের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ইমরানের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব তোলার পরপরই বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এর নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জানিয়েছিলেন, অনাস্থা প্রস্তাবে জয়ী হলে তারা শেহবাজ শরীফকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন।
১৯৫১ সালে জন্ম নেওয়া পাঞ্জাব ভাষী শেহবাজ শরীফ বড় ভাই নওয়াজ শরীফের সঙ্গে ১৯৮০ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি পাঞ্জাবের অ্যাসেম্বলিতে সদস্য হিসেবে প্রথম মনোনীত হন। সেসময় তার ভাই নওয়াজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আর তার ভাই দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করেন। তখন শেহবাজ ৮ বছর সৌদি আরবে নির্বাসিত ছিলেন। পরে ২০০৭ সালে তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসেন। ২০০৮ ও ২০১৩ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বারের মতো পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
২০১৭ সালে পানামা পেপার কেলেঙ্কারিতে নওয়াজ শরীফ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হন। তখন পিএমএল-এ শেহবাজকে পার্টির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করে। এর পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন।
শেহবাজ মোট ৫টি বিয়ে করেছেন। বর্তমানে তার দুই স্ত্রী রয়েছে। বাকি তিন স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন। তার বড় সন্তান হামজা শেহবাজ পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে বিরোধী দলীয় নেতা ।
পেশাগতভাবে শরীফ একজন ব্যবসায়ী এবং যৌথভাবে ইত্তেফাক গ্রুপের মালিক। এটি একটি মাল্টি মিলিয়ন-ডলারের পিন্ডীভূত লৌহ কোম্পানি। স্নাতকের পর পারিবারিক কোম্পানি ইত্তেফাকে যোগদান করেন এবং ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন।