আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

  • Update Time : ০২:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 160

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি সন্ধ্যায়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকার কথা রয়েছে জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদেরও।

সাম্প্রতিক তদন্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো জান্তা সরকারের নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ। অভিযোগ প্রমাণ হলে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারেন মিং অং হ্লাইংসহ সেনাবাহিনীর পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাও।

এদিকে, এই শুনানিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সুবিচার লাভের ‘গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন বিশ্ল্বেষকেরা।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

মামলার প্রথম গণশুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমারের তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি। সেসময় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন সুচি।

হাইব্রিড শুনানি এমন একটি পদ্ধতিতে হয়, যেখানে বাদী–বিবাদী পক্ষ শারীরিক ও ভার্চ্যুয়াল উভয় পদ্ধতিতে অংশ নিয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই বিশেষ পদ্ধতিতে শুনানির আয়োজন করা হয়েছে।

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির পক্ষে ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি করে গাম্বিয়া। দেশটির তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাটি করেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন তিনি।

আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় প্রয়োজন। তাই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় গাম্বিয়া মূল বিচার শুরুর আগে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের জন্য আইসিজের কাছে আবেদন করে। এ বিষয়ে ওই বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়। শুনানিতে গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমার স্ববিরোধী সাফাই দেয়।

২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভাঙার অভিযোগ আনা হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ওই সময় হত্যাকাণ্ড, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ ও শিশু।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

Update Time : ০২:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি সন্ধ্যায়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকার কথা রয়েছে জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদেরও।

সাম্প্রতিক তদন্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো জান্তা সরকারের নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ। অভিযোগ প্রমাণ হলে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারেন মিং অং হ্লাইংসহ সেনাবাহিনীর পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাও।

এদিকে, এই শুনানিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সুবিচার লাভের ‘গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন বিশ্ল্বেষকেরা।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

মামলার প্রথম গণশুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমারের তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি। সেসময় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন সুচি।

হাইব্রিড শুনানি এমন একটি পদ্ধতিতে হয়, যেখানে বাদী–বিবাদী পক্ষ শারীরিক ও ভার্চ্যুয়াল উভয় পদ্ধতিতে অংশ নিয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই বিশেষ পদ্ধতিতে শুনানির আয়োজন করা হয়েছে।

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির পক্ষে ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি করে গাম্বিয়া। দেশটির তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাটি করেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন তিনি।

আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় প্রয়োজন। তাই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় গাম্বিয়া মূল বিচার শুরুর আগে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের জন্য আইসিজের কাছে আবেদন করে। এ বিষয়ে ওই বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়। শুনানিতে গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমার স্ববিরোধী সাফাই দেয়।

২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভাঙার অভিযোগ আনা হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ওই সময় হত্যাকাণ্ড, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ ও শিশু।