বুধবার ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কা, ঐক্যের ডাক প্রেসিডেন্টের

  • Update Time : ১১:৩১:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 122

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে। এমনকি বুধবারই এই হামলা শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও। এই পরিস্থিতিতে বুধবারকে (১৬ ফেব্রুয়ারি) ‘ঐক্য দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

রাশিয়ার সম্ভাব্য এই হামলার মুখে বুধবার বাড়িতে বাড়িতে জাতীয় পতাকা ওড়াতে এবং জাতীয় সংগীত গাইতে ইউক্রেনীয়দের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন- বুধবারই দেশে রুশ হামলা হবে এমন ধারণা করছেন না প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তবে নির্দিষ্ট এই দিনটিতে হামলা হতে পারে বলে পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর সংবাদের সমালোচনা করে ঐক্য দিবসের ঘোষণা দেন তিনি।

সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা বলছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি হামলা হবে। আমরা এটিকে ঐক্যের দিন হিসেবে পালন করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার রাশিয়ার সামরিক আক্রমণ শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে তারা আবারও আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আর তাই, এই দিনে আমরা আমাদের জাতীয় পতাকা ওড়াবো, হলুদ এবং নীল রংয়ের ব্যানার পরবো এবং পুরো বিশ্বের সামনে আমাদের ঐক্য তুলে ধরবো।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, রাশিয়া অনেকদিন ধরে তার দেশকে হুমকি দিলেও যেকোনো মুহূর্তে মস্কোর হামলার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে প্রকাশ করছে পশ্চিমা মিত্ররা। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। হামলার আশঙ্কায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ারও নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন। বহু দেশ তাদের কূটনীতিক ও পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিচ্ছে।

বুধবার ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে জ্যাক সুলিভান বলেছিলেন, ‘আমরা কোনো দিনের কথা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কিন্তু আমরা বলে আসছি যে, আমরা এমন এক অবস্থায় রয়েছি, যখন যেকোনো দিন ইউক্রেনে রাশিয়ার বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু হতে পারে। এটি এমনকি অলিম্পিক শেষ হওয়ার আগে সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে।’

অন্যদিকে বুধবারই ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সম্ভাবনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবিও। ‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে রোববার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রুশ হামলার বিষয়ে সামনে আসা রিপোর্টগুলো নিশ্চিত করার মতো অবস্থানে আমি নেই।’

তবে রাশিয়া যেকোনো দিন ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে বলে উল্লেখ করেন জন কিরবি। তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আমরা তথ্য পাচ্ছি। আবার এসব তথ্যের সবগুলোই গোয়েন্দা সংস্থার এক্সক্লুসিভ তথ্য নয়। সোজা দৃষ্টিতে যা দেখা যায়, সেসব তথ্যও এর মধ্যে রয়েছে। ইউক্রেন সীমান্তে বর্তমানে এক লাখেরও বেশি রুশ সেনা অবস্থান করছে।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বুধবার ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কা, ঐক্যের ডাক প্রেসিডেন্টের

Update Time : ১১:৩১:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে। এমনকি বুধবারই এই হামলা শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও। এই পরিস্থিতিতে বুধবারকে (১৬ ফেব্রুয়ারি) ‘ঐক্য দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

রাশিয়ার সম্ভাব্য এই হামলার মুখে বুধবার বাড়িতে বাড়িতে জাতীয় পতাকা ওড়াতে এবং জাতীয় সংগীত গাইতে ইউক্রেনীয়দের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন- বুধবারই দেশে রুশ হামলা হবে এমন ধারণা করছেন না প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তবে নির্দিষ্ট এই দিনটিতে হামলা হতে পারে বলে পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর সংবাদের সমালোচনা করে ঐক্য দিবসের ঘোষণা দেন তিনি।

সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা বলছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি হামলা হবে। আমরা এটিকে ঐক্যের দিন হিসেবে পালন করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার রাশিয়ার সামরিক আক্রমণ শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে তারা আবারও আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আর তাই, এই দিনে আমরা আমাদের জাতীয় পতাকা ওড়াবো, হলুদ এবং নীল রংয়ের ব্যানার পরবো এবং পুরো বিশ্বের সামনে আমাদের ঐক্য তুলে ধরবো।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, রাশিয়া অনেকদিন ধরে তার দেশকে হুমকি দিলেও যেকোনো মুহূর্তে মস্কোর হামলার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে প্রকাশ করছে পশ্চিমা মিত্ররা। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। হামলার আশঙ্কায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ারও নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন। বহু দেশ তাদের কূটনীতিক ও পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিচ্ছে।

বুধবার ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে জ্যাক সুলিভান বলেছিলেন, ‘আমরা কোনো দিনের কথা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কিন্তু আমরা বলে আসছি যে, আমরা এমন এক অবস্থায় রয়েছি, যখন যেকোনো দিন ইউক্রেনে রাশিয়ার বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু হতে পারে। এটি এমনকি অলিম্পিক শেষ হওয়ার আগে সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে।’

অন্যদিকে বুধবারই ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সম্ভাবনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবিও। ‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে রোববার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রুশ হামলার বিষয়ে সামনে আসা রিপোর্টগুলো নিশ্চিত করার মতো অবস্থানে আমি নেই।’

তবে রাশিয়া যেকোনো দিন ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে বলে উল্লেখ করেন জন কিরবি। তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আমরা তথ্য পাচ্ছি। আবার এসব তথ্যের সবগুলোই গোয়েন্দা সংস্থার এক্সক্লুসিভ তথ্য নয়। সোজা দৃষ্টিতে যা দেখা যায়, সেসব তথ্যও এর মধ্যে রয়েছে। ইউক্রেন সীমান্তে বর্তমানে এক লাখেরও বেশি রুশ সেনা অবস্থান করছে।’