করোনা বিধি তুলে দেওয়া বোকামি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

  • Update Time : ১২:২৯:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 152

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

টানা দুই বছর করোনা ভাইরাস মহামারিতে ভুগছে বিশ্ব। অদৃশ্য এ ভাইরাসের আক্রমণে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ লাখের বেশি মানুষের। প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগ অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা কূলকিনারা করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ কোভিডকে সঙ্গী করেই চলার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। তবে এমন সিদ্ধান্তকে বোকামি বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবারই বলে আসছে, ভবিষ্যতে করোনা ভাইরাস আরও ভয়ংকর রূপে উপস্থিত হতে পারে। একই সঙ্গে বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জন্য আরও কঠিন সময় আসতে পারে বলে সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বলেন, “আমার মনে হয় না, কেউ বলতে পারবেন কবে এই মহামারি শেষ হবে। অনুগ্রহ করে বলবেন না, মহামারি শেষ হয়েছে। কারণ কিছু লোকজন তেমন কাজই করে চলেছেন। করোনা বিধিনিষেধ তুলে দেয়া বোকামি হবে। অন্তত ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত এসব বিধি মেনে চলা উচিত। যেকোনো সময় নতুন ধরন আসতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে একে একে করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে অনেক প্রদেশে মাস্ক পরার নিয়মও উঠে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যও জানিয়েছে দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তারা।

এ ধরনের পদক্ষেপে মোটেও খুশি নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কেননা সংস্থাটি আবারও সংক্রমণ বাড়ার ভয় পাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র এখনও সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। দৈনিক দুই হাজারের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। গত এক মাসে করোনায় ৬০ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ যত বাড়বে নতুন ধরন আসার সম্ভাবনা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে, টিকার চতুর্থ ডোজ নিয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছে আফ্রিকা। সৌম্যা জানান, ৮৫ শতাংশ আফ্রিকান এখনও টিকা পাননি। একেই টিকাহীন, তার ওপর করোনা পরীক্ষার অপ্রতুলতা প্রকট আকার নিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ধরন তৈরির ঝুঁকি বেশি রয়েছে।

সৌম্যা আরও জানান, ধীরে ধীরে এ ভাইরাসের সঙ্গে বাঁচতে শিখতে হবে। তবে তার আগে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষা- এই দুই বিষয়েই সচেতন হতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


করোনা বিধি তুলে দেওয়া বোকামি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

Update Time : ১২:২৯:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

টানা দুই বছর করোনা ভাইরাস মহামারিতে ভুগছে বিশ্ব। অদৃশ্য এ ভাইরাসের আক্রমণে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ লাখের বেশি মানুষের। প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগ অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা কূলকিনারা করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ কোভিডকে সঙ্গী করেই চলার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। তবে এমন সিদ্ধান্তকে বোকামি বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবারই বলে আসছে, ভবিষ্যতে করোনা ভাইরাস আরও ভয়ংকর রূপে উপস্থিত হতে পারে। একই সঙ্গে বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জন্য আরও কঠিন সময় আসতে পারে বলে সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বলেন, “আমার মনে হয় না, কেউ বলতে পারবেন কবে এই মহামারি শেষ হবে। অনুগ্রহ করে বলবেন না, মহামারি শেষ হয়েছে। কারণ কিছু লোকজন তেমন কাজই করে চলেছেন। করোনা বিধিনিষেধ তুলে দেয়া বোকামি হবে। অন্তত ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত এসব বিধি মেনে চলা উচিত। যেকোনো সময় নতুন ধরন আসতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে একে একে করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে অনেক প্রদেশে মাস্ক পরার নিয়মও উঠে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যও জানিয়েছে দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তারা।

এ ধরনের পদক্ষেপে মোটেও খুশি নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কেননা সংস্থাটি আবারও সংক্রমণ বাড়ার ভয় পাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র এখনও সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। দৈনিক দুই হাজারের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। গত এক মাসে করোনায় ৬০ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ যত বাড়বে নতুন ধরন আসার সম্ভাবনা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে, টিকার চতুর্থ ডোজ নিয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছে আফ্রিকা। সৌম্যা জানান, ৮৫ শতাংশ আফ্রিকান এখনও টিকা পাননি। একেই টিকাহীন, তার ওপর করোনা পরীক্ষার অপ্রতুলতা প্রকট আকার নিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ধরন তৈরির ঝুঁকি বেশি রয়েছে।

সৌম্যা আরও জানান, ধীরে ধীরে এ ভাইরাসের সঙ্গে বাঁচতে শিখতে হবে। তবে তার আগে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষা- এই দুই বিষয়েই সচেতন হতে হবে।