ভুটানের ডোকলামে এক বছরে ৪টি গ্রাম বানালো চীন

  • Update Time : ০১:২৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১
  • / 138

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ 

ভুটান লাগোয়া চীন সীমান্তে ৪টি নতুন গ্রাম তৈরি করেছে বেইজিং। গত এক বছর ধরে এসব গ্রাম গড়ে তোলা হয়। বুধবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত এক বছর ধরে ভারত-ভুটান-চীন সীমান্ত লাগোয়া ডোকলামের কাছে ভুটানের ভূখণ্ড দখল করে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে বেইজিং। সীমান্ত লাগোয়া ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গত এক বছরের মধ্যে চারটি গ্রাম গড়ে তুলেছে শি জিনপিংয়ের দেশ। ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স @ডিট্রেসফা সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র টুইট করে এই তথ্য সামনে এনেছে।

২০১৭ সালে এই ডোকলাম নিয়েই ভারত-চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। চীন-ভুটানের বিতর্কিত ভূখণ্ডে বেইজিংয়ের এই জবরদখল ভারতের পক্ষে উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে দেশটির বিশ্লেষকরা। যদিও ৪টি নতুন গ্রাম তৈরির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভুটানের সঙ্গে চীনের সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। সেই সমস্যা মেটাতে ভুটানের ওপর চীন ক্রমাগত চাপ তৈরি করছে। এ বার সরাসরি ভূটানের ভূখণ্ডে গ্রাম তৈরি করায় চীন এবং ভারত সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে উপগ্রহ চিত্রে চারটি গ্রাম ধরা পড়লেও বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডোকলামে চারের অধিক গ্রাম তৈরি করেছে চীন। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় চীনের কেন্দ্রীয় সরকার বহুসংখ্যক সেনা মোতায়েনও করেছে।

ভুটানের যে এলাকায় চীন নির্মাণকাজ করছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই এলাকাকে ‘চিকেনস নেক’ বলা হয়। এই এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। ফলে উপগ্রহ চিত্রে যে দৃশ্য ধরা পড়েছে তা নয়াদিল্লির উদ্বেগ অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত একটি উপগ্রহ চিত্রে ডোকলাম এলাকায় চীনের একটি রাস্তা তৈরির তথ্য উঠে আসে। ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তা ভারতের সিকিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের এই কাজে সেসময় ফের বিতর্ক শুরু হয়। এর কিছু দিন আগে চীনের এক সংবাদমাধ্যমের কর্মকর্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে দাবি করেছিলেন, ভুটান লাগোয়া চীন সীমান্তে নতুন গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে শি জিনপিংয়ের সরকার। বিষয়টি নিয়ে সেসময় উদ্বেগও প্রকাশ করেছিল ভারত।

পরে দেখা যায়, সীমান্তে নয়, ভুটানের প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে চীন। সেখানেই তৈরি হয়েছে ওই নতুন গ্রাম। আর এবার হয়তো সেই গ্রামের ছবিই নতুন করে সামনে এলো।

উল্লেখ্য, ডোকলাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। ডোকলাম মালভূমি মূলত ভুটানের অংশ হলেও, তা ভারতের সিকিম রাজ্যের ঠিক পাশেই অবস্থিত।

এমনিতেই ভুটানের নিরাপত্তায় ভারতীয় সেনাবাহিনী কাজ করে থাকে। ভুটানে নয়াদিল্লির সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। ফলে ডোকলাম নিয়ে ভারত সব সময়ই সতর্ক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভুটানের ডোকলামে এক বছরে ৪টি গ্রাম বানালো চীন

Update Time : ০১:২৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ 

ভুটান লাগোয়া চীন সীমান্তে ৪টি নতুন গ্রাম তৈরি করেছে বেইজিং। গত এক বছর ধরে এসব গ্রাম গড়ে তোলা হয়। বুধবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত এক বছর ধরে ভারত-ভুটান-চীন সীমান্ত লাগোয়া ডোকলামের কাছে ভুটানের ভূখণ্ড দখল করে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে বেইজিং। সীমান্ত লাগোয়া ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গত এক বছরের মধ্যে চারটি গ্রাম গড়ে তুলেছে শি জিনপিংয়ের দেশ। ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স @ডিট্রেসফা সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র টুইট করে এই তথ্য সামনে এনেছে।

২০১৭ সালে এই ডোকলাম নিয়েই ভারত-চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। চীন-ভুটানের বিতর্কিত ভূখণ্ডে বেইজিংয়ের এই জবরদখল ভারতের পক্ষে উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে দেশটির বিশ্লেষকরা। যদিও ৪টি নতুন গ্রাম তৈরির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভুটানের সঙ্গে চীনের সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। সেই সমস্যা মেটাতে ভুটানের ওপর চীন ক্রমাগত চাপ তৈরি করছে। এ বার সরাসরি ভূটানের ভূখণ্ডে গ্রাম তৈরি করায় চীন এবং ভারত সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে উপগ্রহ চিত্রে চারটি গ্রাম ধরা পড়লেও বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডোকলামে চারের অধিক গ্রাম তৈরি করেছে চীন। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় চীনের কেন্দ্রীয় সরকার বহুসংখ্যক সেনা মোতায়েনও করেছে।

ভুটানের যে এলাকায় চীন নির্মাণকাজ করছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই এলাকাকে ‘চিকেনস নেক’ বলা হয়। এই এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। ফলে উপগ্রহ চিত্রে যে দৃশ্য ধরা পড়েছে তা নয়াদিল্লির উদ্বেগ অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত একটি উপগ্রহ চিত্রে ডোকলাম এলাকায় চীনের একটি রাস্তা তৈরির তথ্য উঠে আসে। ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তা ভারতের সিকিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের এই কাজে সেসময় ফের বিতর্ক শুরু হয়। এর কিছু দিন আগে চীনের এক সংবাদমাধ্যমের কর্মকর্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে দাবি করেছিলেন, ভুটান লাগোয়া চীন সীমান্তে নতুন গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে শি জিনপিংয়ের সরকার। বিষয়টি নিয়ে সেসময় উদ্বেগও প্রকাশ করেছিল ভারত।

পরে দেখা যায়, সীমান্তে নয়, ভুটানের প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে চীন। সেখানেই তৈরি হয়েছে ওই নতুন গ্রাম। আর এবার হয়তো সেই গ্রামের ছবিই নতুন করে সামনে এলো।

উল্লেখ্য, ডোকলাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। ডোকলাম মালভূমি মূলত ভুটানের অংশ হলেও, তা ভারতের সিকিম রাজ্যের ঠিক পাশেই অবস্থিত।

এমনিতেই ভুটানের নিরাপত্তায় ভারতীয় সেনাবাহিনী কাজ করে থাকে। ভুটানে নয়াদিল্লির সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। ফলে ডোকলাম নিয়ে ভারত সব সময়ই সতর্ক।