ব্র্যাক ব্যাংকের ১ হাজার ১১ কোটি টাকা নিট মুনাফা
- Update Time : ০১:২৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
- / 51
পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ব্র্যাক ব্যাংকের ১ হাজার ১১ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ব্যাংকটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম ৯ মাসে অর্থা প্রথম ৩ প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের সমন্বিত (কনসলিডেটেড) কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (এনপিএটি) ১ হাজার ১১ কোটি টাকা। যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একক (স্ট্যান্ডঅ্যালন) ভিত্তিতে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮২৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময় ব্যাংকটি ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখে ব্যালেন্স শিটে ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি (অ্যানুয়ালাইজড) অর্জন করেছে।
একদিকে ব্যাংকটির গ্রাহক আমানত ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে (অ্যানুয়ালাইজড) ৬১ হাজার ৬০২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে প্রদানকৃত গ্রাহক ঋণের পরিমাণ ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে (অ্যানুয়ালাইজড) ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ৫৭ হাজার ৪১৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায় এবং বিনিয়োগ ক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড আয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকটি পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় (ইয়ার-অন-ইয়ার ভিত্তিতে) সামগ্রিক আয়েও ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
ব্যবসায়ে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পোর্টফোলিও কোয়্যালিটিরও উল্লেখযোগ্য মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে, ব্যাংকটির নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) রেশিও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে থাকা ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ হতে চলতি হিসবাবছরের সেপ্টেম্বরে ২ দশমিক ৮০ শতাংশতে নেমে এসেছে।
এছাড়াও, যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ব্যাংকটির এনপিএল কাভারেজ সেপ্টেম্বরে ১৩১ শতাংশ উন্নীত করা হয়েছে। যা গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ১১৫ শতাংশ। পাশাপাশি ব্যাংকটির সুসংজ্ঞায়িত রিস্ক অ্যাপেটাইট স্টেটমেন্ট এবং প্রদানকৃত ঋণ আদায়ের চলমান প্রচেষ্টা পোর্টফোলিও কোয়্যালিটি ম্যানেজমেন্টেও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
চলতি হিসাববছরে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ:
সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০২৩ সালের একই সময়ে থাকা ২ টাকা ৯৭ পয়সা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে চলতি হিসাববছরের সেপ্টেম্বর শেষে ৪ টাকায় ৯২ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।
সমন্বিত শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে চলতি হিসবাবছরের সেপ্টেম্বর শেষে ৪৯ টাকা ৫১ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।
২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে সমন্বিত শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৩৭ টাকা ৬০ পয়সার তুলনায় বৃদ্ধি পেয়ে ৪২ টাকা ৩৮ হয়েছে।
সামগ্রিক প্রফিট্যাবিলিটির ওপর জোর দেওয়ায় সমন্বিত রিটার্ন অন ইক্যুইটি (আরওই) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ) উভয়ই বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ (যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১১ দশমিক ৯২ শতংশ) এবং ১ দশমিক ২৭ শতাংশ (যা গতবছর একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ০২ শতাংশ) হয়েছে।
যেহেতু ব্যাংকটি নিজেদের প্রবৃদ্ধিযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই ব্যাংকটির রেগুলেটরি ক্যাপিটাল বৃদ্ধির ওপর আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাবর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর ফলে ব্যাংকটির রেগুলেটরি ক্যাপিটাল চলতি হিসাববছরের সেপ্টেম্বরে ৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ৫ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা।
আর্থিক সাফল্য সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যনেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমাদের ব্যাংকের সামগ্রিক পারফরম্যান্স ক্রমবর্ধমান গ্রাহকদেরকে সেবা দেওয়া এবং গ্রাহকদের পরিবর্তনশীল আর্থিক প্রয়োজন পূরণের ব্যাপারে আমাদের সক্ষমতাকে তুলে ধরে। ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজের চেয়েও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া আমাদের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মূলে রয়েছে আমাদের প্রতি আমাদের গ্রাহকদের অবিচল আস্থা। টেকসইতাকে প্রাধান্য দিয়ে সামনের দিনগুলোতেও আমরা আমাদের এই প্রবৃদ্ধিযাত্রা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “এমন অর্জনের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ব্র্যাক ব্যাংক টিমকে– তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য, আমাদের পরিচালনা পর্ষদকে– তাঁদের ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে– চ্যালেঞ্জিং সময়েও তাঁদের দূরদর্শী রেগুলেটরি দিকনির্দেশনার জন্য। গ্রাহক এবং স্টেকহোল্ডারদের অবিচল আস্থাই আমাদের এই ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মূল হাতিয়ার এবং এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।”