লভ্যাংশ বিতরণে অনিয়ম, ১৪ কোম্পানির চেয়ারম্যান-এমডিকে তলব বিএসইসির

  • Update Time : ০৬:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / 58

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তলব করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সর্বশেষ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করার পরেও তা বিতরণ না করার কারণে কোম্পানিগুলোকে বিএসইসিতে তলব করা হয়েছে। আগামী রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের মিটিং রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কোম্পানিগুলো হলো— লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ভিএফএস থ্রেড ডাইং লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেড, দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড, অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, লিবরা ইনফিউশন লিমিটেড, প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেড এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ হিসাব বছরে উল্লিখিত ১৪টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করেনি। ফলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি কিছু কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করার কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উন্নীত করা হয়েছে। তবে কী কারণে কোম্পানিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে প্রদান করেনি, সভায় তার ব্যাখ্যা জানবে কমিশন। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলোকে দ্রুত লভ্যাংশ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হবে। এরপরেও যদি কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি পর্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কমিশন। এই বার্তা দিতেই ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তলব করা হয়েছে।

যেসব কোম্পানি যথাসময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করে না, সেসব কোম্পানি বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিগুলো সম্প্রতি সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান না করার কারণে পুঁজিবাজারে বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে অভিযোগগুলো কঠোর অবস্থান নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে, কোম্পানিগুলো কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আপনার কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণের পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোম্পানি সচিবকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাসঙ্গিক নথি, দাখিল ও প্রস্তাবনাসহ উপস্থিত হতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং পুঁজিবাজারের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করছি। আগামীতে অতিদ্রুত স্বল্প সময়ের মধ্যে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার করা হবে। এর ফলে আগামীতে আমরা শিগগিরই উন্নত পুঁজিবাজার দেখতে পাব বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


লভ্যাংশ বিতরণে অনিয়ম, ১৪ কোম্পানির চেয়ারম্যান-এমডিকে তলব বিএসইসির

Update Time : ০৬:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তলব করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সর্বশেষ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করার পরেও তা বিতরণ না করার কারণে কোম্পানিগুলোকে বিএসইসিতে তলব করা হয়েছে। আগামী রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের মিটিং রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কোম্পানিগুলো হলো— লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ভিএফএস থ্রেড ডাইং লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেড, দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড, অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, লিবরা ইনফিউশন লিমিটেড, প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেড এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ হিসাব বছরে উল্লিখিত ১৪টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করেনি। ফলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি কিছু কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করার কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উন্নীত করা হয়েছে। তবে কী কারণে কোম্পানিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে প্রদান করেনি, সভায় তার ব্যাখ্যা জানবে কমিশন। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলোকে দ্রুত লভ্যাংশ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হবে। এরপরেও যদি কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি পর্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কমিশন। এই বার্তা দিতেই ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তলব করা হয়েছে।

যেসব কোম্পানি যথাসময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করে না, সেসব কোম্পানি বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিগুলো সম্প্রতি সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান না করার কারণে পুঁজিবাজারে বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে অভিযোগগুলো কঠোর অবস্থান নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে, কোম্পানিগুলো কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আপনার কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণের পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোম্পানি সচিবকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাসঙ্গিক নথি, দাখিল ও প্রস্তাবনাসহ উপস্থিত হতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং পুঁজিবাজারের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করছি। আগামীতে অতিদ্রুত স্বল্প সময়ের মধ্যে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার করা হবে। এর ফলে আগামীতে আমরা শিগগিরই উন্নত পুঁজিবাজার দেখতে পাব বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।