ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২০০ কোটি ডলার

  • Update Time : ১০:০২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 89

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগের পরেও সংকট আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে দেশে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী,ডিসেম্বরের পুরো মাসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজারের রেমিট্যান্স বা প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। যা গত নভেম্বর মাসের চেয়ে প্রায় ৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত নভেম্বরে এসেছিল ১৯৩ কোটি ডলার। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

ডিসেম্বরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

আলোচিত সময়ে কোন রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৮টি। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধিন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, বিদেশি খাতের ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।

এদিকে ডলার বাজারের অস্থিরতা ও বৈদেশিক এ মুদ্রার অভাবে এলসি খুলতে পারছে না অনেক ব্যাংক। আমদানিতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। পুরনো আমদানির দায় মেটাতেও নাভিশ্বাস ব্যাংকগুলোর। সংকট নিরসনে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরী পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের পরিমাণও কমছে।

তবে এসব অভাব-অনটনের মাঝেও নগদ ডলারের বেচা-বিক্রি চলছে খোলা বাজারে। মানুষের হাতে থাকা নগদ ডলার ফেরাতে নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিনব কৌশলী। টাকার বিপরীতে কমানো হয়েছে ডলারের দর। তবুও কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না।

অভাব-অভিযোগের মাঝেই আসে আইএমএফ লোনের দ্বিতীয় কিস্তি আর এডিবির লোনে রিজার্ভও বেড়েছে কিছুটা। তবে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ইতিবাচক ছিল। যদিও মাসের শুরুর ধারাবাহিকতা থেকে শেষ দিকে এসে কিছুটা কমে যায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২০০ কোটি ডলার

Update Time : ১০:০২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগের পরেও সংকট আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে দেশে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী,ডিসেম্বরের পুরো মাসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজারের রেমিট্যান্স বা প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। যা গত নভেম্বর মাসের চেয়ে প্রায় ৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত নভেম্বরে এসেছিল ১৯৩ কোটি ডলার। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

ডিসেম্বরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

আলোচিত সময়ে কোন রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৮টি। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধিন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, বিদেশি খাতের ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।

এদিকে ডলার বাজারের অস্থিরতা ও বৈদেশিক এ মুদ্রার অভাবে এলসি খুলতে পারছে না অনেক ব্যাংক। আমদানিতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। পুরনো আমদানির দায় মেটাতেও নাভিশ্বাস ব্যাংকগুলোর। সংকট নিরসনে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরী পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের পরিমাণও কমছে।

তবে এসব অভাব-অনটনের মাঝেও নগদ ডলারের বেচা-বিক্রি চলছে খোলা বাজারে। মানুষের হাতে থাকা নগদ ডলার ফেরাতে নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিনব কৌশলী। টাকার বিপরীতে কমানো হয়েছে ডলারের দর। তবুও কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না।

অভাব-অভিযোগের মাঝেই আসে আইএমএফ লোনের দ্বিতীয় কিস্তি আর এডিবির লোনে রিজার্ভও বেড়েছে কিছুটা। তবে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ইতিবাচক ছিল। যদিও মাসের শুরুর ধারাবাহিকতা থেকে শেষ দিকে এসে কিছুটা কমে যায়।