অর্থ ডিজিটাল রূপান্তরে বাড়বে রেমিট্যান্স, কমবে হুন্ডি: ড. আতিউর

  • Update Time : ০৪:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
  • / 152

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর হলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দ্বিগুণ হতো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। একই সঙ্গে হুন্ডির ব্যবসায়ও কমে আসতো বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা গ্রহণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারটি যৌথ আয়োজন করে স্কলারস বাংলাদেশ সোসাইটি, ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড ও টিয়ার ওয়ান সলিউশন লিমিটেড।

ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার। কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর হলে প্রবাসীদের আয় বেড়ে চার বিলিয়ন ডলার হতো। এটা না হলেও তিন বিলিয়ন ডলার হতো রেমিট্যান্স।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। যুগের সঙ্গে টিকতে হলেও আমাদের ডিজিটালের পথে যেতে হবে। কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তরের ক্ষেত্রে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তারা এখন কয়েক সেকেন্ডে টাকা প্রান্তিক পর্যায়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

সাবেক এ গভর্নর বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএস মাধ্যমে প্রতিদিন ৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং ইন্টার-অপারেবল সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকরা আরও বেশি সুবিধা পাবে। এজন্য লেনদেন বর্ডারলেস হতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এখন মানুষের হাতের নাগাল এসেছে। একজন রিকশাওয়ালাও দিনে দুই বার তার বাড়িতে টাকা পাঠায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বড় অবদান রয়েছে।

উন্নয়ন সমন্বয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপারসন ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সেন্টাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) কার্ক্রম একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছে এটা সমস্যা নয়। সেন্টাল ব্যাংক কাজ করে এখন ক্যাশলেস পেমেন্টের দিকে যাচ্ছে। এটা ভালো দিক। এরই মধ্যে মতিঝিল এলাকায় ক্যাশলেস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিকাশ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল এস কাদির বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় জায়গাটা হলো বিশ্বাসের। বিকাশ গ্রাহকের টাকা সুরক্ষিত রাখে। বিকাশের টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয় প্রতিদিন এর তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানো হয়। বিকাশের ৭৩ শতাংশ অর্থ সরকারের ট্রেজারি বন্ডের বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাকি অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপোজিট করা আছে। এটা ডিজিটালাইজেশনের কারণে হয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমাজিং ক্রেডিট বেটিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদ। মূলপ্রবন্ধে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ছয় বছরে পণ্য আমদানি রপ্তানি খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। ডিজিটালাইজেশন হলে এ পাচার রোধ সম্ভব হবে।

এছাড়া প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইটি প্রফেশনাল ইন অস্ট্রেলিয়া ড. মিজানুর রহমান, মেলবোরর্নের স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ল সিকিউ ইউনিভার্সিটির মাসুদ ঈসা, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং উন্নয়ন সামান্যর ইমেরিটাস ফেলো খন্দকার শাখাওয়াত আলী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম। সেশনটি পরিচালনা করেন স্কলারস বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ-প্রতিষ্ঠা দিলারা আফরোজ খান রূপা।

Please Share This Post in Your Social Media


অর্থ ডিজিটাল রূপান্তরে বাড়বে রেমিট্যান্স, কমবে হুন্ডি: ড. আতিউর

Update Time : ০৪:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর হলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দ্বিগুণ হতো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। একই সঙ্গে হুন্ডির ব্যবসায়ও কমে আসতো বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা গ্রহণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারটি যৌথ আয়োজন করে স্কলারস বাংলাদেশ সোসাইটি, ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড ও টিয়ার ওয়ান সলিউশন লিমিটেড।

ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার। কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর হলে প্রবাসীদের আয় বেড়ে চার বিলিয়ন ডলার হতো। এটা না হলেও তিন বিলিয়ন ডলার হতো রেমিট্যান্স।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। যুগের সঙ্গে টিকতে হলেও আমাদের ডিজিটালের পথে যেতে হবে। কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তরের ক্ষেত্রে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তারা এখন কয়েক সেকেন্ডে টাকা প্রান্তিক পর্যায়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

সাবেক এ গভর্নর বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএস মাধ্যমে প্রতিদিন ৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং ইন্টার-অপারেবল সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকরা আরও বেশি সুবিধা পাবে। এজন্য লেনদেন বর্ডারলেস হতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এখন মানুষের হাতের নাগাল এসেছে। একজন রিকশাওয়ালাও দিনে দুই বার তার বাড়িতে টাকা পাঠায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বড় অবদান রয়েছে।

উন্নয়ন সমন্বয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপারসন ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সেন্টাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) কার্ক্রম একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছে এটা সমস্যা নয়। সেন্টাল ব্যাংক কাজ করে এখন ক্যাশলেস পেমেন্টের দিকে যাচ্ছে। এটা ভালো দিক। এরই মধ্যে মতিঝিল এলাকায় ক্যাশলেস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিকাশ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল এস কাদির বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় জায়গাটা হলো বিশ্বাসের। বিকাশ গ্রাহকের টাকা সুরক্ষিত রাখে। বিকাশের টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয় প্রতিদিন এর তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানো হয়। বিকাশের ৭৩ শতাংশ অর্থ সরকারের ট্রেজারি বন্ডের বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাকি অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপোজিট করা আছে। এটা ডিজিটালাইজেশনের কারণে হয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমাজিং ক্রেডিট বেটিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদ। মূলপ্রবন্ধে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ছয় বছরে পণ্য আমদানি রপ্তানি খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। ডিজিটালাইজেশন হলে এ পাচার রোধ সম্ভব হবে।

এছাড়া প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইটি প্রফেশনাল ইন অস্ট্রেলিয়া ড. মিজানুর রহমান, মেলবোরর্নের স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ল সিকিউ ইউনিভার্সিটির মাসুদ ঈসা, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং উন্নয়ন সামান্যর ইমেরিটাস ফেলো খন্দকার শাখাওয়াত আলী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম। সেশনটি পরিচালনা করেন স্কলারস বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ-প্রতিষ্ঠা দিলারা আফরোজ খান রূপা।