সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই

  • Update Time : ০৯:১৩:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / 350
বিডিসমাচার ডেস্ক:

দেশের খ্যাতিমান কলাম লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ (৭৪) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন আবুল মকসুদ।

স্কয়ার হাসপাতালের ইনফরমেশন ডেস্ক কর্মকর্তা মারিয়া সরকার জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৯ মিনিটে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আবুল মকসুদকে ধানমন্ডির বাসা থেকে স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তিনি পথেই মারা গেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের এলাচিপুরে সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও সালেহা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া আবুল মকসুদ ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন। পরে তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন।

১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে সৈয়দ আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায় যোগ দেন তিনি। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন। তবে জাতীয় দৈনিকগুলোতে সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে কলাম লেখা চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি।

চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল মকসুদের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ষাটের দশকে কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে। জীবনের শেষ পর্যন্ত সৃজনশীলতার এসব ক্ষেত্রে তিনি সরব ছিলেন।

তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে—কবিতা: বিকেলবেলা (১৯৮১), দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা (১৯৮৭), সৈয়দ আবুল মকসুদের কবিতা (২০১২); প্রবন্ধ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা (১৯৮৮), গান্ধী, নেহেরু ও নোয়াখালী (২০০৮), ঢাকার বুদ্ধদেব বসু (২০১১), রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন, প্রভৃতি (২০১২); জীবনী: মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬), সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য (২০১১), ভাসানী কাহিনী (২০১৩), স্মৃতিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ (২০১৪); ভ্রমণকাহিনি: জার্নাল অব জার্মানি, ভ্রমণ সমগ্র।

সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ঋষিজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই

Update Time : ০৯:১৩:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
বিডিসমাচার ডেস্ক:

দেশের খ্যাতিমান কলাম লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ (৭৪) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন আবুল মকসুদ।

স্কয়ার হাসপাতালের ইনফরমেশন ডেস্ক কর্মকর্তা মারিয়া সরকার জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৯ মিনিটে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আবুল মকসুদকে ধানমন্ডির বাসা থেকে স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তিনি পথেই মারা গেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের এলাচিপুরে সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও সালেহা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া আবুল মকসুদ ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন। পরে তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন।

১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে সৈয়দ আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায় যোগ দেন তিনি। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন। তবে জাতীয় দৈনিকগুলোতে সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে কলাম লেখা চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি।

চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল মকসুদের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ষাটের দশকে কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে। জীবনের শেষ পর্যন্ত সৃজনশীলতার এসব ক্ষেত্রে তিনি সরব ছিলেন।

তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে—কবিতা: বিকেলবেলা (১৯৮১), দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা (১৯৮৭), সৈয়দ আবুল মকসুদের কবিতা (২০১২); প্রবন্ধ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা (১৯৮৮), গান্ধী, নেহেরু ও নোয়াখালী (২০০৮), ঢাকার বুদ্ধদেব বসু (২০১১), রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন, প্রভৃতি (২০১২); জীবনী: মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬), সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য (২০১১), ভাসানী কাহিনী (২০১৩), স্মৃতিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ (২০১৪); ভ্রমণকাহিনি: জার্নাল অব জার্মানি, ভ্রমণ সমগ্র।

সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ঋষিজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।