এবার কাদের মির্জাকে ‘টোকাই মেয়র’ বললেন নিক্সন চৌধুরী

  • Update Time : ১১:৩০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১
  • / 145

‘পাগল’ বলার পর নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ‘টোকাই মেয়র’ বলে আখ্যায়িত করলেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। সাংসদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেওয়ায় ‘তাঁর বিচার সব সংসদ সদস্যরা করবেন’ বলে উল্লেখ করেছেন নিক্সন চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সড়কের ইট বিছানোর কাজ এবং ১০০টি কম্বল বিতরণ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয় গাজীরটেক মোড় এলাকায়।

‘সত্যবচনে’ সারা দেশে আলোচিত কাদের মির্জাকে উদ্দেশ করে সভায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আপনার মতো টোকাই মেয়র মোবাইলে ফেসবুকে কথা বলে ভাইরাল হইয়েন না। নিক্সন চৌধুরী তাঁর মামা শেখ সেলিমের শক্তিতে চলে না। তাঁর নাম নেওয়ার আগে অজু কইরা নিয়েন। পাগল ঠিক করার ওষুধ জনগণের জানা আছে।’

১৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনী সভায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা সাংসদ নিক্সনকে জড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই বক্তব্যে কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, নিক্সন চৌধুরী ভোট চুরি করে সাংসদ হয়েছেন। কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই।

এ বক্তব্যের জবাবে গত রোববার ভাঙ্গায় সাংসদ নিক্সন এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা কাদেরকে পাগল আখ্যায়িত করে তাঁকে ‘পাবনা পাঠানোর জন্য’ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘পাগলকে আটকান না হলে গণধোলাই খাবেন।’ এর জবাবে মির্জা কাদের বলেন, নিক্সন চৌধুরী দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

মঙ্গলবারের সভায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘হঠাৎ গত দু–এক দিনের মধ্যে নোয়াখালীর এক পাগল আমার পিছনে লাগছে। আমি এই পাগলকে চিনিও না। পাগল প্রতিদিন আমার বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিচ্ছে। এখন শুনি তিনি নাকি মেয়র হইছেন, আমাদের এক বড় নেতার ভাই। উনি বক্তৃতা দিয়া বলেন, সব এমপি নাকি মদ খান। তিন শ এমপি মদ খায়।’ সাংসদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যত বড় নেতার ভাই আপনি হোন না কেন আপনি সংসদ সদস্যদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন আপনার বিচার সব সংসদ সদস্য করবেন।’

চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী

চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী

যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি মামার জোর দেখাই না। জনগণই আমার ক্ষমতা। পাগল ঠিক করার ওষুধ আমার জনগণের জানা আছে। তাঁরা কাজী জাফরউল্ল্যাকে (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ) ঠিক করেছে।’

নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের মামলা করেছে বলে কাদের মির্জার বক্তব্য সম্পর্কে সাংসদ নিক্সন বলেন, ‘আমি মামলা খাইছি বইলা ভয় পাই না। আমার নামে এক শ মামলা হলেও আমি ভয় পাই না। মামলা না হইলে নেতা হওয়া যায় না। আরে আমি তো চুরি করার জন্য মামলা খাই নাই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা খাইছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজাদ খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী মোল্লা, চর অযোধ্যা উচ্চবিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস এম ফরহাদ প্রমুখ। প্রথম আলো

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


এবার কাদের মির্জাকে ‘টোকাই মেয়র’ বললেন নিক্সন চৌধুরী

Update Time : ১১:৩০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১

‘পাগল’ বলার পর নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ‘টোকাই মেয়র’ বলে আখ্যায়িত করলেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। সাংসদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেওয়ায় ‘তাঁর বিচার সব সংসদ সদস্যরা করবেন’ বলে উল্লেখ করেছেন নিক্সন চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সড়কের ইট বিছানোর কাজ এবং ১০০টি কম্বল বিতরণ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয় গাজীরটেক মোড় এলাকায়।

‘সত্যবচনে’ সারা দেশে আলোচিত কাদের মির্জাকে উদ্দেশ করে সভায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আপনার মতো টোকাই মেয়র মোবাইলে ফেসবুকে কথা বলে ভাইরাল হইয়েন না। নিক্সন চৌধুরী তাঁর মামা শেখ সেলিমের শক্তিতে চলে না। তাঁর নাম নেওয়ার আগে অজু কইরা নিয়েন। পাগল ঠিক করার ওষুধ জনগণের জানা আছে।’

১৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনী সভায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা সাংসদ নিক্সনকে জড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই বক্তব্যে কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, নিক্সন চৌধুরী ভোট চুরি করে সাংসদ হয়েছেন। কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই।

এ বক্তব্যের জবাবে গত রোববার ভাঙ্গায় সাংসদ নিক্সন এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা কাদেরকে পাগল আখ্যায়িত করে তাঁকে ‘পাবনা পাঠানোর জন্য’ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘পাগলকে আটকান না হলে গণধোলাই খাবেন।’ এর জবাবে মির্জা কাদের বলেন, নিক্সন চৌধুরী দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

মঙ্গলবারের সভায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘হঠাৎ গত দু–এক দিনের মধ্যে নোয়াখালীর এক পাগল আমার পিছনে লাগছে। আমি এই পাগলকে চিনিও না। পাগল প্রতিদিন আমার বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিচ্ছে। এখন শুনি তিনি নাকি মেয়র হইছেন, আমাদের এক বড় নেতার ভাই। উনি বক্তৃতা দিয়া বলেন, সব এমপি নাকি মদ খান। তিন শ এমপি মদ খায়।’ সাংসদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যত বড় নেতার ভাই আপনি হোন না কেন আপনি সংসদ সদস্যদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন আপনার বিচার সব সংসদ সদস্য করবেন।’

চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী

চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী

যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি মামার জোর দেখাই না। জনগণই আমার ক্ষমতা। পাগল ঠিক করার ওষুধ আমার জনগণের জানা আছে। তাঁরা কাজী জাফরউল্ল্যাকে (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ) ঠিক করেছে।’

নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের মামলা করেছে বলে কাদের মির্জার বক্তব্য সম্পর্কে সাংসদ নিক্সন বলেন, ‘আমি মামলা খাইছি বইলা ভয় পাই না। আমার নামে এক শ মামলা হলেও আমি ভয় পাই না। মামলা না হইলে নেতা হওয়া যায় না। আরে আমি তো চুরি করার জন্য মামলা খাই নাই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা খাইছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজাদ খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী মোল্লা, চর অযোধ্যা উচ্চবিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস এম ফরহাদ প্রমুখ। প্রথম আলো