কমল-মমতার সংগ্রামী জীবনের গল্প 

  • Update Time : ০৭:৪২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১
  • / 129
এস ইসলাম, নাটোর:
“কোনদিনও কোন কালেও পুরুষের তরবারী একলা হয়নিকো জয়ী শক্তি দিয়েছে প্রেরণা দিয়েছে বিজয় লক্ষী নারী। রাজা করিছে রাজ্য শাসন রাজারে শাসিছে রানী, রানীর শাসনে ধুয়ে মুছে যাবে রাজ্যের যত গ্লানি” কবি নজরুলের এ কবিতার প্রতিচ্ছবি যেন কমল – মমতা  দম্পতি।
.
পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা কমল সরকার (৪৫) নাটোরের লালপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ভবেস সরকারের ছেলে।বাবা ভবেস সরকারের দারিদ্রতার কারনে কমলের ভাগ্যে লেখা পড়া জোটেনি জন্মের পর হতে পরের জমিতে কাজ করত।

.
কিন্তু ২০০৫ সালে তার পায়ে ইনফেকশনের কারণে দুপা কেটে বাদ দিতে হয়। তারপর থেকে জীবন সংগ্রামে স্বামী-স্ত্রী লড়ছে একসাথে। স্থানীয় নওপাড়া বাজারে ১৭ বছর যাবত পিঁয়াজি, পিঠা বিক্রি করে চলছে তাদের সংসার। তার কোন পুত্র সন্তান নাই কন্যা সন্তান ওসহ ধর্মিনি মমতাকে নিয়ে করোনা কালীন সময় থেকে চরম দূর্দশার মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করে যাচ্ছে তারা।
.
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নওপাড়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ দোকান খুলে  পিঁয়াজি, ঝালমুড়ি  পিঠা বিক্রি করছে কমল সরকার। পাশেই সেগুলো তৈরি করে দিচ্ছে স্ত্রী মমতা রানী। মা-বাবার কাজে সাহায্য করছে তাদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে লাকী।
.
স্ত্রী মমতা রানী জানান, স্বামীর পা হারানোর পর থেকে দীর্ঘ দিন ধরে এই ব্যবসা করে আসছে‌ আমি সদি সর্বদা তার পাশে। বড় মেয়েকে অর্থ সংকটের বেশি লেখাপড়া শিখাতে পারেনি কোন মতে বিয়ে দিতে হয়েছে। ছোট মেয়েটা  ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। স্বল্প পুঁজির ব্যবসা, তার ওপর শারীরিক অসুস্থতাও বয়সের ভারে  মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বৃত্তবান‌ ব্যাক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সহযোগিতা চান কমল-মমতা দম্পতি।
.
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মাহামুদুর রহমান পলাশ বলেন, কমল সরকার আগে ঝালমুড়ি বিক্রি করত, পা কাটার পরেও ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারে ভাসমান দোকান দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা  পিয়াজি ঝাল মুড়ি বিক্রি করে কোনমতে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। ব্যবসার পুঁজি অল্প হওয়ার কারণে ব্যবসায় ভালো করতে পারে না তারা। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাকে সহায়তা করলে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারবে।খেয়ে পরে কোন রকম বেচে থাকতে পারবে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কমল-মমতার সংগ্রামী জীবনের গল্প 

Update Time : ০৭:৪২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১
এস ইসলাম, নাটোর:
“কোনদিনও কোন কালেও পুরুষের তরবারী একলা হয়নিকো জয়ী শক্তি দিয়েছে প্রেরণা দিয়েছে বিজয় লক্ষী নারী। রাজা করিছে রাজ্য শাসন রাজারে শাসিছে রানী, রানীর শাসনে ধুয়ে মুছে যাবে রাজ্যের যত গ্লানি” কবি নজরুলের এ কবিতার প্রতিচ্ছবি যেন কমল – মমতা  দম্পতি।
.
পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা কমল সরকার (৪৫) নাটোরের লালপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ভবেস সরকারের ছেলে।বাবা ভবেস সরকারের দারিদ্রতার কারনে কমলের ভাগ্যে লেখা পড়া জোটেনি জন্মের পর হতে পরের জমিতে কাজ করত।

.
কিন্তু ২০০৫ সালে তার পায়ে ইনফেকশনের কারণে দুপা কেটে বাদ দিতে হয়। তারপর থেকে জীবন সংগ্রামে স্বামী-স্ত্রী লড়ছে একসাথে। স্থানীয় নওপাড়া বাজারে ১৭ বছর যাবত পিঁয়াজি, পিঠা বিক্রি করে চলছে তাদের সংসার। তার কোন পুত্র সন্তান নাই কন্যা সন্তান ওসহ ধর্মিনি মমতাকে নিয়ে করোনা কালীন সময় থেকে চরম দূর্দশার মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করে যাচ্ছে তারা।
.
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নওপাড়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ দোকান খুলে  পিঁয়াজি, ঝালমুড়ি  পিঠা বিক্রি করছে কমল সরকার। পাশেই সেগুলো তৈরি করে দিচ্ছে স্ত্রী মমতা রানী। মা-বাবার কাজে সাহায্য করছে তাদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে লাকী।
.
স্ত্রী মমতা রানী জানান, স্বামীর পা হারানোর পর থেকে দীর্ঘ দিন ধরে এই ব্যবসা করে আসছে‌ আমি সদি সর্বদা তার পাশে। বড় মেয়েকে অর্থ সংকটের বেশি লেখাপড়া শিখাতে পারেনি কোন মতে বিয়ে দিতে হয়েছে। ছোট মেয়েটা  ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। স্বল্প পুঁজির ব্যবসা, তার ওপর শারীরিক অসুস্থতাও বয়সের ভারে  মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বৃত্তবান‌ ব্যাক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সহযোগিতা চান কমল-মমতা দম্পতি।
.
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মাহামুদুর রহমান পলাশ বলেন, কমল সরকার আগে ঝালমুড়ি বিক্রি করত, পা কাটার পরেও ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারে ভাসমান দোকান দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা  পিয়াজি ঝাল মুড়ি বিক্রি করে কোনমতে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। ব্যবসার পুঁজি অল্প হওয়ার কারণে ব্যবসায় ভালো করতে পারে না তারা। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাকে সহায়তা করলে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারবে।খেয়ে পরে কোন রকম বেচে থাকতে পারবে।