ফরিদগঞ্জে মসজিদের ইমামকে ডেকে এনে ব্যাপক মারধর

  • Update Time : ০৩:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
  • / 130
স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে বিয়ে পরানোর কথা বলে মসজিদের ইমাম সাহেবকে ডেকে এনে  ব্যাপক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার(৮ জানুয়ারি) জুমার নামাজের পর ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাইকপাড়া গ্রামের চন্দ্রা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
.
জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাইকপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (৪৯)কে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতির ছোট ভাই একই গ্রামের চন্দ্রা বাড়ির জাহাঙ্গীর আলম পাঠান তার মেয়ের বিয়ে পরানোর কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে মসজিদের ইমাম সাহেব বিয়ে পড়ানোর জন্য বাড়ির সামনে গেলে জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান কয়েকজন সহযোগী নিয়ে  ইমাম সাহেবকে গালমন্দ করতে থাকে।
.
একপর্যায়ে ইমাম সাহেবকে বেধড়ক মারধর করে।পাশ থেকে কয়েকজন মুসলিম ছুটে এসে ইমাম সাহেব কে বাঁচাতে চাইলে মুস্তাফিজুর রহমান সেই মুসল্লী দের কেউ মারধর করে রক্তাক্ত যখম করে।

.
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ছুটে এসে ইমাম সাহেবকে রক্ষা করে ফরিদগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে এলাকাবাসী সাথে সাথে ট্রিপল নাইনে ফোন করে ঘটনা পুলিশকে জানান। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ উপস্থিত হয়।
.
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
আহত ইমাম সাহেব ও এক মুসল্লীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদগঞ্জ হাসপাতাল থেকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
.
এ ঘটনায় ইমাম সাহেব সহ ৬জন মুসল্লি গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে দক্ষিণ পাইকপাড়া গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, কিছুদিন পূর্বে দক্ষিন পাইকপাড়া মসজিদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে মুস্তাফিজুর রহমান সভাপতি ছিলেন।
.
কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতির পদ চলে যাওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এবং মোস্তাফিজুর রহমানসহ যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
.
মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, তারা আমার উপর হামলা করেছে, পরে আমি আত্মরক্ষা করেছি। ইমাম সাহেব আপনাকে মেরেছে কিনা এই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ইমাম সাহেব না, ইমাম সাহেবের পাশে যারা ছিল তারা আমার উপর হামলা করেছে। একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি মসজিদ কমিটিতে নাই। মসজিদ কমিটি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমার মাথা ঠিক ছিল না। যার কারণে এ ঘটনা ঘটছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
.
ঘটনাস্থলে আসে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই ফজল এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ট্রিপল নাইনে ফোন দেওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। উবয় পক্ষকে শান্ত করি এবং সেখানে গিয়ে হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমানকে খুঁজে পাইনি। ঘটনাটি আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছে, আমরা এর সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ফরিদগঞ্জে মসজিদের ইমামকে ডেকে এনে ব্যাপক মারধর

Update Time : ০৩:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে বিয়ে পরানোর কথা বলে মসজিদের ইমাম সাহেবকে ডেকে এনে  ব্যাপক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার(৮ জানুয়ারি) জুমার নামাজের পর ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাইকপাড়া গ্রামের চন্দ্রা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
.
জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাইকপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (৪৯)কে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতির ছোট ভাই একই গ্রামের চন্দ্রা বাড়ির জাহাঙ্গীর আলম পাঠান তার মেয়ের বিয়ে পরানোর কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে মসজিদের ইমাম সাহেব বিয়ে পড়ানোর জন্য বাড়ির সামনে গেলে জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান কয়েকজন সহযোগী নিয়ে  ইমাম সাহেবকে গালমন্দ করতে থাকে।
.
একপর্যায়ে ইমাম সাহেবকে বেধড়ক মারধর করে।পাশ থেকে কয়েকজন মুসলিম ছুটে এসে ইমাম সাহেব কে বাঁচাতে চাইলে মুস্তাফিজুর রহমান সেই মুসল্লী দের কেউ মারধর করে রক্তাক্ত যখম করে।

.
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ছুটে এসে ইমাম সাহেবকে রক্ষা করে ফরিদগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে এলাকাবাসী সাথে সাথে ট্রিপল নাইনে ফোন করে ঘটনা পুলিশকে জানান। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ উপস্থিত হয়।
.
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
আহত ইমাম সাহেব ও এক মুসল্লীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদগঞ্জ হাসপাতাল থেকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
.
এ ঘটনায় ইমাম সাহেব সহ ৬জন মুসল্লি গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে দক্ষিণ পাইকপাড়া গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, কিছুদিন পূর্বে দক্ষিন পাইকপাড়া মসজিদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে মুস্তাফিজুর রহমান সভাপতি ছিলেন।
.
কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতির পদ চলে যাওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এবং মোস্তাফিজুর রহমানসহ যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
.
মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, তারা আমার উপর হামলা করেছে, পরে আমি আত্মরক্ষা করেছি। ইমাম সাহেব আপনাকে মেরেছে কিনা এই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ইমাম সাহেব না, ইমাম সাহেবের পাশে যারা ছিল তারা আমার উপর হামলা করেছে। একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি মসজিদ কমিটিতে নাই। মসজিদ কমিটি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমার মাথা ঠিক ছিল না। যার কারণে এ ঘটনা ঘটছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
.
ঘটনাস্থলে আসে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই ফজল এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ট্রিপল নাইনে ফোন দেওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। উবয় পক্ষকে শান্ত করি এবং সেখানে গিয়ে হামলাকারী মোস্তাফিজুর রহমানকে খুঁজে পাইনি। ঘটনাটি আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছে, আমরা এর সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।