পুলিশের পদোন্নতি পরীক্ষায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমূল পরিবর্তন
- Update Time :
০৭:৪৪:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০২০
- / 253
নিজস্ব প্রতিবেদক:
.
পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় কোনো বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতার কারণে অযোগ্য লোক পদোন্নতি পেলে যোগ্য লোক কাজে উৎসাহ হারায়, সেবার মান কমে যায়। অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের জন্য ব্রিটিশ আমল থেকে চলমান বিদ্যমান পদোন্নতি পরীক্ষায় বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল।
.
প্রচলিত এ পদ্ধতিতে ইউনিট ভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হতো। ইউনিট অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যক শূন্য পদের বিপরীতে পরীক্ষার মাধ্যমে ইউনিট ভিত্তিক পদোন্নতি দেওয়া হতো।
.
নানা কারণে কোনো ইউনিটে কম, কোন ইউনিটে বেশি সংখ্যক শূন্যপদ থাকতো। কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে বা বদলি জনিত কারণে অবসর গ্রহণের ফলে নতুন নতুন পদ শূন্য হতো, নতুন ইউনিট সৃষ্টির কারণেও হতো পার্থক্য। প্রার্থীর সংখ্যা হেরফেরের কারণে পদোন্নতির সুযোগ সবার জন্য সমান ছিল না। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড় ভাবে কাজ করা, অবৈধ আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি প্রভাবকের কারণে পদোন্নতিতে সুবিচার বঞ্চিত হওয়ার সুযোগ ছিল। এসব নানা কারণে পুলিশের অধস্তন সদস্যদের মধ্যে ছিল হতাশা ও অভিযোগ।
.
বুধবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
.
তিনি জানান, বাংলাদেশ পুলিশ এসব বিষয় ভাবনায় নিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এর নির্দেশে অভ্যন্তরীণ সেবা সহজ ও প্রাতিষ্ঠানিক পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে উত্তরণের উপায় হিসেবে নতুন একটি পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে অধস্তন কর্মকর্তা ও সদস্যদের পদোন্নতি পরীক্ষা হবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত। এরই মধ্যে সব ইউনিটের পদোন্নতি পরীক্ষার্থীরা এবার প্রথমবারের মতো সারাদেশে একই সময়ে, একই প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছেন। এবারই প্রথম নৈব্যত্তিক প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
.
এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। উভয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক পাঠানো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতি ইউনিটে উপস্থিত থেকে পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভূমিকা রেখেছেন ও রাখবেন।
.
পরীক্ষার উত্তরপত্র পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। মানুষ নয়, কম্পিউটারের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে পুলিশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুলোতে। স্বচ্ছতা, যোগ্যতা ও মেধার যথাযথ মূল্যায়নের জন্য সর্বক্ষেত্রেই উপস্থিত থাকবেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।ন্যায্যতা ও সমমানের মূল্যায়ন নিশ্চিতের জন্য সবশেষে ইন্টারভিউ/ভাইবা গ্রহণ করা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে।
.
কেন্দ্রীয় ভাবে ফলাফলের তালিকা প্রস্তুত করে তা থেকে শূন্য পদ পূরণ করা হবে। এর ফলে মেধার মূল্যায়ন ও ন্যায় বিচারের পথ সুগম হবে। পদোন্নতিতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সঠিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হবে। গতানুগতিক পদ্ধতির বিপরীতে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক এ পদোন্নতি প্রক্রিয়া প্রচলনের ফলে নাগরিক সেবায় বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা অধিকতর মনোযোগের সঙ্গে সেবা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
.
গত শুক্রবার (২ অক্টোবর) নতুন পদ্ধতিতে সারাদেশে একযোগে নৈব্যত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলাফল বুধবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ পুলিশের কেন্দ্রীয় ওয়েব সাইট এবং ফেইবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।
Tag :
Please Share This Post in Your Social Media