আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে আলাদা কর্মসূচির পালনের ঘোষণা দিয়েছে গণফোরামের দুই অংশ। দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কালাম হোসেনের নেতৃত্বধীন গণফোরাম এইদিন সকালে প্রেসক্লাবের হলরুমে তাদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির মিটিং আহ্বান করেছেন। আর ওইদিন প্রেসক্লাবের বাইরে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছি দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশটি।
কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের আহ্বায়ক কমিটি সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ বর্তমান কমিটির নেতারা একত্রে মিলিত হবেন।’
শনিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আরামবাগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের। সভা থেকে আগামী ১৭ অক্টোবর নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেন তারা।
সভায় শেষে মোস্তফা মহসীন বলেন, ‘গুলশানের বাড়িতে বসে, হোটেলে বসে বসে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হলে রাজপথে থাকতে হবে, পার্টি অফিসে আসতে হবে, সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে।’তিনি বলেন, ‘বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া দলের ক্ষমতায় ছিলেন। এই দুই বছরে গণফোরামের কী উন্নতি সাধন হয়েছে? গণফোরাম ১৪ দলের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল। এরপর ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বড় আন্দোলনে ছিল, বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিল। কিন্তু দুই বছরে তিনি নেতৃত্বে গণফোরামকে মাঠে দেখা যায়নি। জনগণের পাশে দেখা যায়নি। গণফোরাম সবসময় যে কোনও দুর্যোগে মানুষের পাশে থেকেছে, কিন্তু কিবরিয়া তো থাকে নাই। তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি।’
গণফোরাম ভাঙছে কিনা জানতে চাইলে মোস্তফা মহসীন বলেন, ‘আমি তা মনে করি না। গণফোরামের শুরু ১৯৯৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রায় পাঁচ হাজার কাউন্সিলরদের নিয়ে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে গণফোরাম গঠিত হয়। তাই কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতেই গণফোরামের নতুন নেতৃত্ব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি আমাদের শীর্ষনেতা। তবে সংগঠন যে উদ্দেশ্য, আদর্শ নিয়ে তৈরি হয়েছিল, সেজন্য তার কাছে আমরা নিরপেক্ষ থাকার দাবি করি। যারা মাঠে আছে, মাঠের কর্মী, জনগণের কাছাকাছি তাদের নিয়ে তিনি কাজ করবেন আশাকরি।’
গণফোরামের নেতা কে হবে জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ‘গণতন্ত্রের চর্চা প্রথমে সংগঠন থেকে করতে হবে। কাউন্সিলর, জেলা প্রতিনিধি, মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা গণফোরামের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। কোনও ঘরে, চেম্বারে বা গুলশানের কোনও বাসায় বসে নেতা নির্বাচন হবে না।’
বর্ধিত সভায় গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামীম, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।