প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি হিসেবে তৈরি হলো গাইডলাইন

  • Update Time : ০৬:১৬:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অগাস্ট ২০২০
  • / 187
বিশেষ প্রতিনিধি: 
.
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে এলে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে কার্যক্রম শুরু করবে সেজন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গাইডলাইনটি অনুমোদন পেলেই সব প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ওই গাইডলাইন মেনেই করোনা পরবর্তী দিনগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাবে।
.

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ইউনিসেফ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব ব্যাংক, ইউনেস্কো, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিষেধক সেন্টারের (সিডিসি) গাইডলাইনের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দেশনাপত্র তৈরি করা হয়েছে। যা ভবিষ্যতে বিদ্যালয় পরিচালনায় কাজে দেবে।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেভাবে পরিচালিত হবে, সেগুলোর সঙ্গে অনেকটা সমন্বয় রেখে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার পনেরো দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে অনেক বিদ্যালয় ধূলো-ময়লা জমে নোংরা হয়ে রয়েছে। আবার বন্যাকবলিত এলাকার বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সেজন্য বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়কে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে বলা হবে সংশ্লিষ্টদের। আর যেসব বিদ্যালয় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা দ্রুত মেরামত করতে বলা হচ্ছে।’

তিনি জানান, অসুস্থ শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না। যারা আসবে তারা হাত ভালো করে ধুয়ে ক্লাসে যাবে। সেজন্য স্কুলের বিভিন্ন স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও হাত ধোয়ার পানি রাখতে হবে। পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে বসার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্কুল খুলে দেওয়ার তারিখ চূড়ান্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী বিদ্যালয় রি-ওপেনিং হওয়ার পর সপ্তাহে ছয় দিন সব শিক্ষার্থীর ক্লাস থাকবে না। গুরুত্বপূর্ণ পাঠগুলো নির্বাচন করে কোন দিন কোন বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হবে তা বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবেন। গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে, আগের মতো শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে খেলাধুলা করতে পারবে না। এই সময়ে শিক্ষক কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এসব বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। পাঠদান ব্যহত হওয়ার কারণে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি হিসেবে তৈরি হলো গাইডলাইন

Update Time : ০৬:১৬:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অগাস্ট ২০২০
বিশেষ প্রতিনিধি: 
.
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে এলে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে কার্যক্রম শুরু করবে সেজন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গাইডলাইনটি অনুমোদন পেলেই সব প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ওই গাইডলাইন মেনেই করোনা পরবর্তী দিনগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাবে।
.

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ইউনিসেফ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব ব্যাংক, ইউনেস্কো, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিষেধক সেন্টারের (সিডিসি) গাইডলাইনের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দেশনাপত্র তৈরি করা হয়েছে। যা ভবিষ্যতে বিদ্যালয় পরিচালনায় কাজে দেবে।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেভাবে পরিচালিত হবে, সেগুলোর সঙ্গে অনেকটা সমন্বয় রেখে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার পনেরো দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে অনেক বিদ্যালয় ধূলো-ময়লা জমে নোংরা হয়ে রয়েছে। আবার বন্যাকবলিত এলাকার বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সেজন্য বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়কে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে বলা হবে সংশ্লিষ্টদের। আর যেসব বিদ্যালয় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা দ্রুত মেরামত করতে বলা হচ্ছে।’

তিনি জানান, অসুস্থ শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না। যারা আসবে তারা হাত ভালো করে ধুয়ে ক্লাসে যাবে। সেজন্য স্কুলের বিভিন্ন স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও হাত ধোয়ার পানি রাখতে হবে। পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে বসার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্কুল খুলে দেওয়ার তারিখ চূড়ান্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী বিদ্যালয় রি-ওপেনিং হওয়ার পর সপ্তাহে ছয় দিন সব শিক্ষার্থীর ক্লাস থাকবে না। গুরুত্বপূর্ণ পাঠগুলো নির্বাচন করে কোন দিন কোন বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হবে তা বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবেন। গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে, আগের মতো শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে খেলাধুলা করতে পারবে না। এই সময়ে শিক্ষক কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এসব বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। পাঠদান ব্যহত হওয়ার কারণে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।