শেখ হাসিনা : একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী

- Update Time : ০৭:৪২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ অগাস্ট ২০২০
- / 201
শাবান মাহমুদ:
ঈদের কয়েকদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার অনুদানের চেক বিতরণ শুরু করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন। মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। ঈদের আগে হাতে গোনা দু-একটি ইউনিয়নসহ ঈদ-পরবর্তী সময়ে শুরু হয় ঢাকার বাইরে দেশব্যাপী জেলায় জেলায় সাংবাদিকদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ। পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ সার্বিক সহযোগিতা করেন। বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল এবং আমি যশোর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেখেছি সাংবাদিকদের প্রাপ্তির আনন্দ। সত্যি কথা বলতে কি, আমি দেখেছি এমন অনেক সাংবাদিক আছেন যাদের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক ১০ হাজার টাকার অনুদান লাখো টাকার মূল্যমান। সন্তানের সামান্য আবদার পূরণ, সন্তানের স্কুলের বকেয়া বেতন পরিশোধ, কমপক্ষে এক মাসের খাবার মজুদ করার অর্থ পেয়ে মফস্বলের অনেক সাংবাদিক চোখের পানি ফেলেছেন। শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদান প্রথম পর্যায়ে আমরা ভেবেছিলাম দেশব্যাপী ইউনিয়নের সদস্যসহ বিভাগীয় পর্যায়ে মূলধারার সাংবাদিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে। প্রধানমন্ত্রী দয়ার সাগর, মানবিকতায় অতুলনীয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন সারা দেশে সাংবাদিকদের মাঝে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার অনুদানের চেক নিয়ে বিএফইউজের পক্ষ থেকে জেলায় জেলায় ছুটছেন বিএফইউজের শীর্ষ নেতারা। সাংবাদিক সংগঠনগুলো উৎসব আয়োজনে গ্রহণ করছেন প্রধানমন্ত্রীর অনুদান।
সম্প্রতি ময়মনসিংহে গিয়েছিলাম আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলাসহ করোনায় বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকদের মাঝে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে। প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে যখন ত্রাণ তহবিলের একটি কার্ড তিনি এক বৃদ্ধা মহিলার হাতে তুলে দেন তখন আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় মুহূর্তেই। কার্ডগ্রহীতা মহিলার সাফ কথা- এ কার্ড তিনি পরম যতেœ সংগ্রহে রাখবেন, তাঁর ত্রাণের দরকার নেই কারণ এটি তাঁর ভাষায়- শেখের বেটির স্মৃতি। তাঁর মানে শেখ হাসিনা কেবল একজন রাষ্ট্রনায়ক কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সভানেত্রী নন, তিনি বাংলার মানুষের কাছে একটি অনুভূতির নাম।
ময়মনসিংহ থেকে ফিরে আমরা ছুটে যাই যশোরে যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ অনুষ্ঠানে এক চেকগ্রহীতা আমার শৈশবের বন্ধু। অনুষ্ঠান শেষে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, বন্ধু! আজ বুক ফুলিয়ে বাসায় ফিরব। কারণ জানতে চাইলে হাসিমুখে তার জবাব- বাড়ির মালিককে বলব আপনার বাড়ির ভাড়াটা পরশু নিয়ে যাবেন। তার আবেগমাখা কণ্ঠে কৃতজ্ঞতার উচ্চারণ- শেখ হাসিনা আমার কাছে সব সময় যেন আঁধারের আলো। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী! এখানেই আপনার সার্থকতা, নেতৃত্বের সফলতা।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী! আমরা আপনার মানবিকতায় অভিভূত হই যখন দেখি শত সীমাবদ্ধতার কথা না ভেবে মিয়ানমার থেকে জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেন। যখন দেখি পুরান ঢাকায় অগ্নিদগ্ধে হারানো মা-বাবার এতিম সন্তানদের পরম মমতায় আপনি বুকে টেনে নেন। মায়ের দায়িত্ব নিয়ে তাদের বিয়ে দিয়ে সংসার জীবনের ব্যবস্থা করেন মহা আয়োজনে। তখন আপনার সমালোচকরাও নিশ্চয়ই আপনার মানবিকতায় মুগ্ধ হয়। যখন দেখি একটি শিশু একটি সাঁকোর অভাবে স্কুলে যেতে না পারার আক্ষেপের কথা বলে, তখন আপনি সেই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। আপনার এসব মহানুভবতার কথা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ শুধু নয়, বিশ্ববাসীও মনে রাখবে অনন্তকাল। মহান সৃষ্টিকর্তা রব্বুল আলামিনের কাছে আমাদের প্রার্থনা- বাংলাদেশের প্রয়োজনে, মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে শেখ হাসিনার মতো মানবিক, সাহসী ও দক্ষ নেতৃত্বই প্রয়োজন বারবার।
লেখক : মহাসচিব, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন।