ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৩০

- Update Time : ০৫:২৯:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
- / 166
রোববার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কাকাইলমোড়া এলাকায় এ সংঘর্ষ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৮ আগস্ট গ্রামের এক নারীকে গণধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ এখনও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি এবং কোন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। তবে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে গত দুইদিন আগে রাজন নামে এক যুবক ফেসবুকে বিচার চেয়ে স্ট্যাটাস দেয়। ওই যুবক তার স্ট্যাটাসে এলাকার বর্তমান ইউপি সদস্য লোকমান ও তার সহযোগী তোফাজ্জলসহ আরো বেশ কয়েকজনকে দায়ী করেন। ওই যুবক সে ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থী জুলহাসের সমর্থক হওয়ায় তার ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে লোকমান ও জুলহাসের দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে ওই নারীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করলে এই নারীর ছোট ছেলেকে স্থানীয় লোকমান মেম্বারের লোকজন রাস্তায় মারধর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষে এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন খাগকান্দা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার লোকমান হোসেন ও অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন এ ওয়ার্ড থেকে আগামী ইউপি নির্বাচনে সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী জুলহাস মিয়া। সকাল নয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আবুল হোসেন ও নাঈম নামে দুইজনকে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত হলেন- শাহিন, মুঞ্জর হোসেন, আবেদ আলী, নবী হোসেন, আনার আলী, শরীফ হোসেন, বাবুল, শাজাহান,দুলাল, সোলমান, মতিন, আলমাছ, হোসেন, ছিদ্দিক, ফাহিম, আইনউদ্দিন, হারুন, মশিউর, নাহিদ, ইয়ানুছ, তারা মিয়া, সজিব, দুদু মিয়া ও লোকমান হোসেন। এছাড়া বাকী আহতদের নাম জানা যায়নি।
আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিকেলের দিকে সংঘর্ষ থামলেও এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল নয়টার দিকে উভয়পক্ষ দা, ছুরি, টেঁটা ও বল্লমসহ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একপক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গোটা এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ গেলেও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন। পরে বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। সংঘর্ষে নেতৃত্ব দানকারী লোকমান ও জুলহাস উভয়ই সরকার দলীয় সমর্থক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
সংঘর্ষের ব্যাপারে ইউপি সদস্য লোকমান হোসেন জানান, জুলহাস মিয়ার লোকজন সকালে তার পক্ষের অন্তত ১২টি বাড়িতে ও ১টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এতে তার পক্ষের অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হয়েছে।
তবে জুলহাস মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লোকমান মেম্বার এলাকার ত্রাস। সে এবং তার লোকজন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশীয় ধারালো অস্ত্র শস্ত্র তারপক্ষের লোকজনদের বাড়ি ঘরে হামলা করে আহত ও লুটপাট করেছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সময় নিউজ