প্রথমবার ২ কোটি টন উৎপাদন ছাড়ালো বোরো

  • Update Time : ০৮:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০২০
  • / 177

করোনা প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সংকট, বোরো মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের শঙ্কা এবং ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বোরোর উৎপাদন ছাড়িয়েছে দুই কোটি টন।

দেশের আবাদী জমির প্রায় ৭৫ শতাংশ জমিতেই হচ্ছে ধানের আবাদ। গত অর্থ বছরে ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ হেক্টর জমিতে। সেখানে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর। মোট চালের উৎপাদন চার কোটি টন ছুঁই ছুঁই। সেই চালের আবার অর্ধেক যোগান দিচ্ছে বোরো। এভাবেই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যতম প্রধান শস্যে পরিণত হয়েছে বোরো ধান।

জানা গেছে, গত বছরে দেশে বোরো চালের উত্পাদন ছিলো ১ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টন। তবে চলতি বছরে দেশের দুই সংস্থা ‘ব্রি’ এবং ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)’ তাদের প্রাথমিক হিসাব চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে ব্রি-র তথ্যে দেশে বোরো চালের উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার টন।

অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে চালের উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টন। ফলে ব্রি-র হিসাবে চালের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং ডিএইর হিসেবে বৃদ্ধির হারা প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

রোববার (৯ আগস্ট) ‘কভিড-১৯ যুগে খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশ কি শিঘ্রই খাদ্য সংকটে পড়ছে?’ শীর্ষক ওয়েবিনার ভিত্তিক ভার্চুয়াল সেমিনার আয়োজন করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে- ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘২০১০ সালে যেখানে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চতুর্থ। বর্তমানে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক। যদিও ইউএসডিএ ধানের উৎপাদন নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল যে, গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ০.২৮ ভাগ কমে যাবে, কিন্তু বাস্তবে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ সালে ৩৮.৭ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে।

ব্রির জরিপ থেকে দেখা গেছে, ফলন, আবাদকৃত এলাকা, উৎপাদন ও চালের অভ্যন্তরীণ মজুদ পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের তুলনায় এবছর সকল কৃষিঅঞ্চলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ বৃদ্ধির হার সারাদেশে গড়ে শতকরা ৮.৪ ভাগ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) ৬৪ জেলার ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, ধানের ফলন গড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ব্রি’র ১ হাজার ৪৮টি কৃষকের মাঠে ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সারাদেশে ধানের ফলন গড়ে ২.৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুত্রঃবাংলার উন্নয়ন

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


প্রথমবার ২ কোটি টন উৎপাদন ছাড়ালো বোরো

Update Time : ০৮:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০২০

করোনা প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সংকট, বোরো মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের শঙ্কা এবং ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বোরোর উৎপাদন ছাড়িয়েছে দুই কোটি টন।

দেশের আবাদী জমির প্রায় ৭৫ শতাংশ জমিতেই হচ্ছে ধানের আবাদ। গত অর্থ বছরে ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ হেক্টর জমিতে। সেখানে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর। মোট চালের উৎপাদন চার কোটি টন ছুঁই ছুঁই। সেই চালের আবার অর্ধেক যোগান দিচ্ছে বোরো। এভাবেই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যতম প্রধান শস্যে পরিণত হয়েছে বোরো ধান।

জানা গেছে, গত বছরে দেশে বোরো চালের উত্পাদন ছিলো ১ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টন। তবে চলতি বছরে দেশের দুই সংস্থা ‘ব্রি’ এবং ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)’ তাদের প্রাথমিক হিসাব চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে ব্রি-র তথ্যে দেশে বোরো চালের উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার টন।

অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে চালের উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টন। ফলে ব্রি-র হিসাবে চালের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং ডিএইর হিসেবে বৃদ্ধির হারা প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

রোববার (৯ আগস্ট) ‘কভিড-১৯ যুগে খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশ কি শিঘ্রই খাদ্য সংকটে পড়ছে?’ শীর্ষক ওয়েবিনার ভিত্তিক ভার্চুয়াল সেমিনার আয়োজন করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে- ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘২০১০ সালে যেখানে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চতুর্থ। বর্তমানে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক। যদিও ইউএসডিএ ধানের উৎপাদন নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল যে, গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ০.২৮ ভাগ কমে যাবে, কিন্তু বাস্তবে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ সালে ৩৮.৭ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে।

ব্রির জরিপ থেকে দেখা গেছে, ফলন, আবাদকৃত এলাকা, উৎপাদন ও চালের অভ্যন্তরীণ মজুদ পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের তুলনায় এবছর সকল কৃষিঅঞ্চলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ বৃদ্ধির হার সারাদেশে গড়ে শতকরা ৮.৪ ভাগ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) ৬৪ জেলার ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, ধানের ফলন গড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ব্রি’র ১ হাজার ৪৮টি কৃষকের মাঠে ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সারাদেশে ধানের ফলন গড়ে ২.৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুত্রঃবাংলার উন্নয়ন