বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারীদেরও মুখোশ উন্মোচন প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী
- Update Time : ০৭:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০
- / 144
শাওন চন্দ্র দাসঃ
কমিশন গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারীদেরও মুখোশ উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
‘আজ থেকে শত শত বছর পরের বাঙালি প্রজন্মের ইতিহাস জানার স্বার্থে, সত্য জানার স্বার্থে এখনই প্রয়োজন একটি কমিশন গঠন করে এই হত্যাকাণ্ডের পটভূমি যারা রচনা করেছিল, ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিল, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা, তাহলেই ইতিহাস সঠিকভাবে রচিত হবে, অন্যথায় ইতিহাসের এই সত্যগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবে না’, বলেন ড. হাছান।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ক্লিনিক ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস-২০২০ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে তথ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘আলোকচিত্র, ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকারের সভাপতিত্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব কামরুন নাহার এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষে আমাদের প্রত্যয় হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর যে সমস্ত পলাতক খুনি এখন পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে আছে, তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত এনে বিচারের রায় কার্যকর করা। একইসাথে আমি মনে করি, যারা সম্মুখে থেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল, শুধুমাত্র তারাই অপরাধী তা নয়। সত্য এবং ন্যায়ের স্বার্থে ষড়যন্ত্রকারীদেরও মুখোশ উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।জিয়াউর রহমান-সহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিল, ষড়যন্ত্রকারী ছিল, তাদের মুখোশ জনগণের সামনে উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, মুজিব শতবর্ষে এই কাজটি করা আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন।’ কারণ, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অন্যায়ের প্রতিকার করতে হবে। সে জন্যই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হয়েছে, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু যখন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে সমৃদ্ধির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যে বছর হত্যা করা হয়, সে বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যেটি আমরা ৪ দশকেরও বেশি সময় পরে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছি। সে বছর বাংলাদেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল। আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশে সাড়ে ১১ বছর আগে মাথাপিছু আয় ছিল ৬শ’ ডলার, সেটি এখন ২ হাজার ডলারের বেশি।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানান। তথ্যসচিব কামরুন নাহার জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকীতে সকলকে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশের জন্য কাজে ব্রতী হতে আহ্বান জানান।
তথ্যমন্ত্রী এ সময় ধারাবাহিকভাবে এ হৃদয়গ্রাহী আয়োজনের জন্য তথ্য অধিদফতরকে ধন্যবাদ জানান এবং অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহিন ইসলাম, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার বিধান চন্দ্র কর্মকার, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া এবং তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।