কানাডায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল আলোচনা

  • Update Time : ০৮:১৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • / 144

‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন: কোথায় আমাদের অবস্থান?’ এ নিয়ে এক আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কানাডার ক্যালগেরিতে।

ক্যালগারীর টম বেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অরডিনেটর এবং “আর এক্স মীমস” এর পরিচালক আহমেদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে জুমের মাধ্যমে উক্ত আলোচনায় কানাডা, বাংলাদেশ, নেপাল ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বিশিষ্ট গবেষকরা এতে অংশ নেন।

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ডা: শাহনাজ পারভীন, নেপালের ডা: শ্যাম প্রাসাদ লোহানী, ডা: এস এন এম আবদুররহমান, ডীন ফার্মেসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রফেসার সাইদুর রহমান ও গ্লোব বায়োটেক রিসার্চ এর সিইও ডা: কাকন নাগ।

সেসময় সাম্প্রতিক বিশ্বে করোনা নিয়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়, বিশ্ববাসীর মধ্যে জনসচেতনতা, সংক্রমণে কার্যকরী ভূমিকা এবং ভ্যাকসিনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এছাড়াও আলোচনায় উঠে আসে ভ্যাকসিন আগামী ২/৩ মাসে কোন কোন দেশে আগে ও পরে পাওয়া যাবে, এবং এর মূল্যই বা কত হবে?

অন্যদিকে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন সবার কাছে এই ভ্যাকসিন পৌঁছাতে হয়ত ২/৩ বছর সময় লেগে যেতে পারে। আলোচনায় আরো উঠে আসে বাংলাদেশে বিশ্ব মানের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের প্রসঙ্গ।

চলমান বিশ্ব এখন অপেক্ষায় কখন সেই কোভিড- ১৯ এর ভ্যাকসিন এনে দিবে আমাদের স্বস্তি। আশার আলো আর প্রাণের আলো মিলিত হয়ে আমরা সবাই আবার ফিরে যাব সোনালী সেই দিনে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে সবচেয়ে আলোচিত ও অগ্রগামী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাকে। কতটা ফলপ্রসু হবেন তারা? এ প্রশ্ন এখন বিশ্ববাসীর মুখে মুখে।গবেষকদের একাংশ বলছে, সেপ্টেম্বরে ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাঁরা শতভাগ নিশ্চিত।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের টিকার ইতিবাচক খবরের মধ্যে চমকপ্রদ খবর দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তারা এক মাসের মধ্যে করোনার টিকা আনার ব্যাপারে আশাবাদী।

মস্কোভিত্তিক ইংরেজি ভাষার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মস্কো টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা আগামী মাসেই রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এখন যেভাবে সবকিছু চলছে, এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে চলে যাবে।

অনেক দেশের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তাদের জনসংখ্যা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি না করা পর্যন্ত দৈনন্দিন জীবনস্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসতে পারে না। তাৎক্ষণিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ইতিমধ্যে চলছে, তবে ভ্যাকসিনের পূর্ণ বিকাশে সময়ের প্রয়োজন।

আয়োজক কানাডার ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর এবং ‘আর এক্স মীমস’ এর পরিচালক আহমেদ হোসেন শাহিন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের সকল গবেষকদের একটাই লক্ষ্য কিভাবে একটি সফল ভ্যাকসিন তৈরি করা যায়।

ব্যাপারটি যেমন সহজ নয় আবার অসম্ভবও নয়।অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমেরিকা, লন্ডন, চীন, রাশিয়া, ইন্ডিয়া এমন আরো অনেক দেশ ইতিমধ্যে প্রমাণ রেখেছে। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ইতিমধ্যে গ্লোব বায়োটেকের প্রি ক্লিনিকাল ট্রায়াল বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

বাংলাদেশে বিশ্বমানের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার তেরী এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা আর সহযোগিতার। আর এটা হলে বিশ্বমানের স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। আর সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের দক্ষ জনশক্তিকে কাজে লাগানো যাবে, দেশের বেকারত্ব ও হ্রাস পাবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কানাডায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল আলোচনা

Update Time : ০৮:১৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন: কোথায় আমাদের অবস্থান?’ এ নিয়ে এক আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কানাডার ক্যালগেরিতে।

ক্যালগারীর টম বেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অরডিনেটর এবং “আর এক্স মীমস” এর পরিচালক আহমেদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে জুমের মাধ্যমে উক্ত আলোচনায় কানাডা, বাংলাদেশ, নেপাল ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বিশিষ্ট গবেষকরা এতে অংশ নেন।

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ডা: শাহনাজ পারভীন, নেপালের ডা: শ্যাম প্রাসাদ লোহানী, ডা: এস এন এম আবদুররহমান, ডীন ফার্মেসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রফেসার সাইদুর রহমান ও গ্লোব বায়োটেক রিসার্চ এর সিইও ডা: কাকন নাগ।

সেসময় সাম্প্রতিক বিশ্বে করোনা নিয়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়, বিশ্ববাসীর মধ্যে জনসচেতনতা, সংক্রমণে কার্যকরী ভূমিকা এবং ভ্যাকসিনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এছাড়াও আলোচনায় উঠে আসে ভ্যাকসিন আগামী ২/৩ মাসে কোন কোন দেশে আগে ও পরে পাওয়া যাবে, এবং এর মূল্যই বা কত হবে?

অন্যদিকে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন সবার কাছে এই ভ্যাকসিন পৌঁছাতে হয়ত ২/৩ বছর সময় লেগে যেতে পারে। আলোচনায় আরো উঠে আসে বাংলাদেশে বিশ্ব মানের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের প্রসঙ্গ।

চলমান বিশ্ব এখন অপেক্ষায় কখন সেই কোভিড- ১৯ এর ভ্যাকসিন এনে দিবে আমাদের স্বস্তি। আশার আলো আর প্রাণের আলো মিলিত হয়ে আমরা সবাই আবার ফিরে যাব সোনালী সেই দিনে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে সবচেয়ে আলোচিত ও অগ্রগামী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাকে। কতটা ফলপ্রসু হবেন তারা? এ প্রশ্ন এখন বিশ্ববাসীর মুখে মুখে।গবেষকদের একাংশ বলছে, সেপ্টেম্বরে ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাঁরা শতভাগ নিশ্চিত।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের টিকার ইতিবাচক খবরের মধ্যে চমকপ্রদ খবর দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তারা এক মাসের মধ্যে করোনার টিকা আনার ব্যাপারে আশাবাদী।

মস্কোভিত্তিক ইংরেজি ভাষার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মস্কো টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা আগামী মাসেই রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এখন যেভাবে সবকিছু চলছে, এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে চলে যাবে।

অনেক দেশের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তাদের জনসংখ্যা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি না করা পর্যন্ত দৈনন্দিন জীবনস্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসতে পারে না। তাৎক্ষণিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ইতিমধ্যে চলছে, তবে ভ্যাকসিনের পূর্ণ বিকাশে সময়ের প্রয়োজন।

আয়োজক কানাডার ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর এবং ‘আর এক্স মীমস’ এর পরিচালক আহমেদ হোসেন শাহিন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের সকল গবেষকদের একটাই লক্ষ্য কিভাবে একটি সফল ভ্যাকসিন তৈরি করা যায়।

ব্যাপারটি যেমন সহজ নয় আবার অসম্ভবও নয়।অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমেরিকা, লন্ডন, চীন, রাশিয়া, ইন্ডিয়া এমন আরো অনেক দেশ ইতিমধ্যে প্রমাণ রেখেছে। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ইতিমধ্যে গ্লোব বায়োটেকের প্রি ক্লিনিকাল ট্রায়াল বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

বাংলাদেশে বিশ্বমানের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার তেরী এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা আর সহযোগিতার। আর এটা হলে বিশ্বমানের স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। আর সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের দক্ষ জনশক্তিকে কাজে লাগানো যাবে, দেশের বেকারত্ব ও হ্রাস পাবে।