শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • Update Time : ০৭:১০:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
  • / 160

 

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান।

জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবিতে নাগরিক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের কাছে জাহানারা ইমাম দেশপ্রেম, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অনন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে আজও অবিস্মরণীয়।

১৯২৯ সালের ৩ মে মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম জুড়ূ। জাহানারা ইমামের বাবা সৈয়দ আবদুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম।

১৯৪২ সালে জাহানারা ইমাম ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৪ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ পাস করে ১৯৪৫ সালে ভর্তি হন কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। এখান থেকে বিএ পাস করেন ১৯৪৭ সালে। ১৯৬০ সালে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৪ সালে। সেখান থেকে ফিরে ১৯৬৫ সালে বাংলায় এমএ পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

ময়মনসিংহে বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বুলবুল একাডেমি কিন্ডারগার্টেন স্কুল এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেন। তিনি কিছু দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটেও খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে রুমী শহীদ হন, স্বামী শরিফ ইমামও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা জাহানারা ইমামকে সকল মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন। এক সন্তান হারিয়ে সারাদেশের সব মুক্তিযোদ্ধার জননী হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গোলাম আযম এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে ঐতিহাসিক ‘গণআদালত’। এতে শহীদ জননীর সভাপতিত্বে লাখ লাখ বিচারপ্রার্থীর উপস্থিতিতে ঘাতকদের হোতা গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়।

জাহানারা ইমামের লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Update Time : ০৭:১০:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০

 

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান।

জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবিতে নাগরিক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের কাছে জাহানারা ইমাম দেশপ্রেম, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অনন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে আজও অবিস্মরণীয়।

১৯২৯ সালের ৩ মে মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম জুড়ূ। জাহানারা ইমামের বাবা সৈয়দ আবদুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম।

১৯৪২ সালে জাহানারা ইমাম ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৪ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ পাস করে ১৯৪৫ সালে ভর্তি হন কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। এখান থেকে বিএ পাস করেন ১৯৪৭ সালে। ১৯৬০ সালে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৪ সালে। সেখান থেকে ফিরে ১৯৬৫ সালে বাংলায় এমএ পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

ময়মনসিংহে বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বুলবুল একাডেমি কিন্ডারগার্টেন স্কুল এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেন। তিনি কিছু দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটেও খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে রুমী শহীদ হন, স্বামী শরিফ ইমামও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা জাহানারা ইমামকে সকল মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন। এক সন্তান হারিয়ে সারাদেশের সব মুক্তিযোদ্ধার জননী হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গোলাম আযম এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে ঐতিহাসিক ‘গণআদালত’। এতে শহীদ জননীর সভাপতিত্বে লাখ লাখ বিচারপ্রার্থীর উপস্থিতিতে ঘাতকদের হোতা গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়।

জাহানারা ইমামের লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল।