পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি এইচআরপিবির

  • Update Time : ১০:৪৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১
  • / 162

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।

শনিবার (৫ জুন) এক ভার্চুয়াল সভায় এ দাবির কথা জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া, অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইমরুল কাওসার, অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ, ডিএজি কাজী মাইনুল হাসান, এএজি সামিউল আলম, কে এম সবুজ, অ্যাডভোকেট মামুন আলিম, অ্যাডভোকেট মো. তাজউদ্দিন, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক প্রমুখ।

সভায় বক্তারা পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতিসাধন ও আইন অমান্যের বিষয় তুলে ধরে সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে পরিবেশের ক্ষতি পুনঃরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। বক্তারা পরিবেশ সংক্রান্ত শত শত জনস্বার্থের মামলায় আদালতের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহামারি করোনায় মানবজাতি যখন ভযাবহ দুঃসময় অতিবাহিত করছে সেরকম সময় বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং ইকোসিস্টেমের ওপর বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পরিবেশের যে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে তা পুনরুদ্ধার ছাড়া মানবজাতি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব পরিবেশ দিবস আরও গুরুত্ব বহন করে। খাল,নদী, বিল, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, পশু-পাখি, প্রকৃতির এমন সমাহার আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বায়ু দূষণে আমাদের রাজধানী ঢাকা প্রথম স্থানে থাকছে। অজ্ঞতা, অসতর্কতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর বাংলাদেশ আজ অনেকটা খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রকৃতি ও পরিবেশের এ ক্ষতির সঙ্গে বিত্তশালী, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ক্ষমতাশালীরা জড়িত।

সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে সরকারকে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয় বলে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান।

দাবিগুলো হলো-

১. পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে জড়িত যেকোনো সংসদ সদস্য বা অন্য যেকোনো জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে অপসারণ ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আইন প্রনয়ণ করতে হবে।

২. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করে তাকে ক্ষমতায়ন এবং কমিশনকে ক্যাবিনেটের আওতায় পরিচালনা করতে হবে।

৩. সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে (প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাতীত) সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ করার আইন পাস করতে হবে।

৪. পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদী, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সব ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পরিবেশ অধিদফতরের লোকবল বৃদ্ধি, সব জেলায় পর্যাপ্ত লোকবলসহ অফিস স্থাপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

৬. নদীর পাশে যেকোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সি এস রেকর্ড অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. পরিবেশের ক্ষতি করার কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক বন্ধ ঘোষণার আইন প্রনয়ন করতে হবে।

৮. পরিবেশ সংক্রান্ত সব বিভাগে দক্ষ, সৎ, কমিটেড এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে হবে।

৯. পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট তিনগুণ বাড়িয়ে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media


পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি এইচআরপিবির

Update Time : ১০:৪৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।

শনিবার (৫ জুন) এক ভার্চুয়াল সভায় এ দাবির কথা জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া, অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইমরুল কাওসার, অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ, ডিএজি কাজী মাইনুল হাসান, এএজি সামিউল আলম, কে এম সবুজ, অ্যাডভোকেট মামুন আলিম, অ্যাডভোকেট মো. তাজউদ্দিন, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক প্রমুখ।

সভায় বক্তারা পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতিসাধন ও আইন অমান্যের বিষয় তুলে ধরে সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে পরিবেশের ক্ষতি পুনঃরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। বক্তারা পরিবেশ সংক্রান্ত শত শত জনস্বার্থের মামলায় আদালতের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহামারি করোনায় মানবজাতি যখন ভযাবহ দুঃসময় অতিবাহিত করছে সেরকম সময় বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং ইকোসিস্টেমের ওপর বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পরিবেশের যে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে তা পুনরুদ্ধার ছাড়া মানবজাতি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব পরিবেশ দিবস আরও গুরুত্ব বহন করে। খাল,নদী, বিল, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, পশু-পাখি, প্রকৃতির এমন সমাহার আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বায়ু দূষণে আমাদের রাজধানী ঢাকা প্রথম স্থানে থাকছে। অজ্ঞতা, অসতর্কতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর বাংলাদেশ আজ অনেকটা খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রকৃতি ও পরিবেশের এ ক্ষতির সঙ্গে বিত্তশালী, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ক্ষমতাশালীরা জড়িত।

সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে সরকারকে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয় বলে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান।

দাবিগুলো হলো-

১. পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে জড়িত যেকোনো সংসদ সদস্য বা অন্য যেকোনো জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে অপসারণ ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আইন প্রনয়ণ করতে হবে।

২. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করে তাকে ক্ষমতায়ন এবং কমিশনকে ক্যাবিনেটের আওতায় পরিচালনা করতে হবে।

৩. সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে (প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাতীত) সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ করার আইন পাস করতে হবে।

৪. পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদী, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সব ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পরিবেশ অধিদফতরের লোকবল বৃদ্ধি, সব জেলায় পর্যাপ্ত লোকবলসহ অফিস স্থাপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

৬. নদীর পাশে যেকোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সি এস রেকর্ড অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. পরিবেশের ক্ষতি করার কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক বন্ধ ঘোষণার আইন প্রনয়ন করতে হবে।

৮. পরিবেশ সংক্রান্ত সব বিভাগে দক্ষ, সৎ, কমিটেড এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে হবে।

৯. পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট তিনগুণ বাড়িয়ে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।