লামা পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে   

  • Update Time : ০১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
  • / 130
বিপ্লব দাশ,নিজস্ব প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামায় দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। তাফসিলি ঘোষণার পর সরগম হয়ে উঠেছে লামা পৌর এলাকা।
.
জমজমাট চলছে ভোট প্রার্থনা। ইতোমধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণা তুঙ্গে। আগামি (১৬ জানুয়ারি’২১) পৌর নির্বাচনকে ঘিরে চলছে চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁ সহ বিভিন্ন জায়গায় পক্ষ বিপক্ষ প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা।
.
আসন্ন পৌর নির্বাচনে লামায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একজন করে মোট ৩জন। প্রার্থীরা হলেন লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক মো. শাহিন, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদার।
.
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই মেয়র প্রার্থীই সাবেক ছাত্র নেতা। গ্রহণযোগ্যতায় কারো চাইতে কেউ কম নয়। তবে তরুণদের কাছে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন নৌকার প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম। তরুণদের মুখে মুখে শুধুই যেন জহির ভাই ।
.
স্থানীয়রা জানান, আসন্ন পৌর নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোমর কষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে চলছে তার প্রচারণা। তিনি আধুনিক লামা পৌরসভা গড়ার অঙ্গিকার সহ চলমান বাকি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
.
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহিন ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিগত সময়ে পৌরবাসীর নানা বঞ্চনার কথা তুলে ধরে ভোট চাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে বিএনপি প্রার্থী শাহিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একই সাথে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন আরেক মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদার। তিনিও দলের সমর্থন নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। “শান্তির জন্য পরিবর্তন – পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ লামা পৌরসভা নির্বাচনের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন তিনি।
.
জানা যায়, লামা পৌরসভার মেয়র পদে ৩দল থেকে ৩প্রার্থী প্রচারণায় উঠেপড়ে লেগেছে। দলগুলোর ভিতরে প্রার্থী নিয়ে বড় ধরনের কোনো দ্বন্দ্ব বা কোন্দলের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপি সমর্থিত সাবেক মেয়রকে দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে নবীন একজনকে সুযোগ দেয়ায় দুই গ্রুপে বিভক্ত পৌর বিএনপি। জড়িয়ে পড়েছে পাল্টা অভিযোগ ও মামলা মোকাদ্দামায়। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচনের সময় দলের এমন অবস্থা দেখে হতাশ সাধারণ ভোটাররা। তাসত্ত্বেও দলের উপরের নির্দেশ মান্যকরণে ভেদাভেদ ভুলে সবাই মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন বলে জানাগেছে।
.
এদিকে আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র প্রার্থীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠক, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। তারা এখন লামা পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা, আধুনিকায়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সেই সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময়, কর্মিসভা, লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ নানা প্রচারণা চালাচ্ছেন।মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ওয়ার্ডভিত্তিক সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সরব প্রচারণা চোখে পড়েছে। তারাও প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন কোমর বেঁধে। প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় পোস্টারিং, ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে চালাচ্ছেন প্রচারণা। ভোটারের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছাবিনিময় করছেন। নানান ওয়াদা দিয়ে ভোট চাইছেন নিজের জন্য। যোগ দিচ্ছেন উঠান বৈঠকে। বসে নেই নারী প্রার্থীরাও। পাড়া-মহল্লা-বাজারের পাশাপাশি বাসা-বাড়িতে গিয়েও নারী ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত তারা।
.
লামা পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। প্রত্যেক ওয়ার্ডেই একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। কিন্তু ২নং ওয়ার্ডে মো. হোসেন বাদশা ও ৪নং ওয়ার্ডে মো. রফিক একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করেছে। সব মিলিয়ে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে ২৬জন তার মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯জন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে পুরনো ছাড়াও নতুন অনেক প্রার্থী রয়েছেন। যারা নতুন করে প্রার্থী তারা উন্নয়ন করবেন বলে অঙ্গীকার করছেন ভোটারদের কাছে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


লামা পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে   

Update Time : ০১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
বিপ্লব দাশ,নিজস্ব প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামায় দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। তাফসিলি ঘোষণার পর সরগম হয়ে উঠেছে লামা পৌর এলাকা।
.
জমজমাট চলছে ভোট প্রার্থনা। ইতোমধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণা তুঙ্গে। আগামি (১৬ জানুয়ারি’২১) পৌর নির্বাচনকে ঘিরে চলছে চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁ সহ বিভিন্ন জায়গায় পক্ষ বিপক্ষ প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা।
.
আসন্ন পৌর নির্বাচনে লামায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একজন করে মোট ৩জন। প্রার্থীরা হলেন লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক মো. শাহিন, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদার।
.
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই মেয়র প্রার্থীই সাবেক ছাত্র নেতা। গ্রহণযোগ্যতায় কারো চাইতে কেউ কম নয়। তবে তরুণদের কাছে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন নৌকার প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম। তরুণদের মুখে মুখে শুধুই যেন জহির ভাই ।
.
স্থানীয়রা জানান, আসন্ন পৌর নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোমর কষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে চলছে তার প্রচারণা। তিনি আধুনিক লামা পৌরসভা গড়ার অঙ্গিকার সহ চলমান বাকি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
.
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহিন ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিগত সময়ে পৌরবাসীর নানা বঞ্চনার কথা তুলে ধরে ভোট চাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে বিএনপি প্রার্থী শাহিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একই সাথে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন আরেক মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদার। তিনিও দলের সমর্থন নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। “শান্তির জন্য পরিবর্তন – পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ লামা পৌরসভা নির্বাচনের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন তিনি।
.
জানা যায়, লামা পৌরসভার মেয়র পদে ৩দল থেকে ৩প্রার্থী প্রচারণায় উঠেপড়ে লেগেছে। দলগুলোর ভিতরে প্রার্থী নিয়ে বড় ধরনের কোনো দ্বন্দ্ব বা কোন্দলের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপি সমর্থিত সাবেক মেয়রকে দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে নবীন একজনকে সুযোগ দেয়ায় দুই গ্রুপে বিভক্ত পৌর বিএনপি। জড়িয়ে পড়েছে পাল্টা অভিযোগ ও মামলা মোকাদ্দামায়। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচনের সময় দলের এমন অবস্থা দেখে হতাশ সাধারণ ভোটাররা। তাসত্ত্বেও দলের উপরের নির্দেশ মান্যকরণে ভেদাভেদ ভুলে সবাই মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন বলে জানাগেছে।
.
এদিকে আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র প্রার্থীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠক, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। তারা এখন লামা পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা, আধুনিকায়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সেই সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময়, কর্মিসভা, লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ নানা প্রচারণা চালাচ্ছেন।মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ওয়ার্ডভিত্তিক সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সরব প্রচারণা চোখে পড়েছে। তারাও প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন কোমর বেঁধে। প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় পোস্টারিং, ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে চালাচ্ছেন প্রচারণা। ভোটারের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছাবিনিময় করছেন। নানান ওয়াদা দিয়ে ভোট চাইছেন নিজের জন্য। যোগ দিচ্ছেন উঠান বৈঠকে। বসে নেই নারী প্রার্থীরাও। পাড়া-মহল্লা-বাজারের পাশাপাশি বাসা-বাড়িতে গিয়েও নারী ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত তারা।
.
লামা পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। প্রত্যেক ওয়ার্ডেই একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। কিন্তু ২নং ওয়ার্ডে মো. হোসেন বাদশা ও ৪নং ওয়ার্ডে মো. রফিক একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করেছে। সব মিলিয়ে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে ২৬জন তার মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯জন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে পুরনো ছাড়াও নতুন অনেক প্রার্থী রয়েছেন। যারা নতুন করে প্রার্থী তারা উন্নয়ন করবেন বলে অঙ্গীকার করছেন ভোটারদের কাছে।