সেনা অভ্যুত্থানে পার্লামেন্ট ভেঙে মালির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

  • Update Time : ০৫:৫৫:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০
  • / 152
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোবাকার কেইতা সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিদ্রোহী সেনাদের হাতে আটক হওয়ার পর বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

বিবৃতিতে কেইতা বলেন, আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনোরকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না। আজ সেনাবাহিনীর কিছু অংশ মনে করছে হস্তক্ষেপ জরুরি। আমার কি সত্যি অন্য কোনো উপায় আছে? এখন থেকেই দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে দেশটির রাজধানী বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে গুলি ছোঁড়ার মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের শুরু হয়। সারাদিন বিক্ষিপ্তভাবে রাজধানীতে বিদ্রোহী সেনারা সরকারি ভবনে আগুন দেন। রাতের দিকে সামরিক বাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেন।

এদিকে, মালিতে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট বুবাকার কেইতা ও অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। তাদের জরুরি ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

এক বিবৃতিতে এইউ কমিশনের চেয়ারম্যান মোসা ফাকি মাহামাত বলেছেন, মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা, প্রধানমন্ত্রী (বুবু সিসি) ও মালিয়ান সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের জোর করে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান করছি।

প্রসঙ্গত, বেতন-ভাতা এবং জিহাদিদের সঙ্গে চলমান সংঘাত নিয়ে মালির সেনা সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল বলে জানা গেছে। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন কেইতা। তবে মালিতে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কারণে জনরোষের মুখে পড়েন তিনি।

মালিতে এর আগে ২০১২ সালে বড় ধরনের বিদ্রোহ হয়। সেই সময় থেকেই দেশটিতে জিহাদিদের প্রভাব বাড়তে থাকে। শুরু হয় সাম্প্রদায়িক সমস্যা। মালির তিন প্রতিবেশী দেশ আলজেরিয়া, নাইজার এবং মৌরিতানিয়াও কয়েক বছর ধরে একই সমস্যায় ভুগছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সেনা অভ্যুত্থানে পার্লামেন্ট ভেঙে মালির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

Update Time : ০৫:৫৫:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোবাকার কেইতা সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিদ্রোহী সেনাদের হাতে আটক হওয়ার পর বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

বিবৃতিতে কেইতা বলেন, আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনোরকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না। আজ সেনাবাহিনীর কিছু অংশ মনে করছে হস্তক্ষেপ জরুরি। আমার কি সত্যি অন্য কোনো উপায় আছে? এখন থেকেই দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে দেশটির রাজধানী বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে গুলি ছোঁড়ার মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের শুরু হয়। সারাদিন বিক্ষিপ্তভাবে রাজধানীতে বিদ্রোহী সেনারা সরকারি ভবনে আগুন দেন। রাতের দিকে সামরিক বাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেন।

এদিকে, মালিতে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট বুবাকার কেইতা ও অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। তাদের জরুরি ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

এক বিবৃতিতে এইউ কমিশনের চেয়ারম্যান মোসা ফাকি মাহামাত বলেছেন, মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা, প্রধানমন্ত্রী (বুবু সিসি) ও মালিয়ান সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের জোর করে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান করছি।

প্রসঙ্গত, বেতন-ভাতা এবং জিহাদিদের সঙ্গে চলমান সংঘাত নিয়ে মালির সেনা সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল বলে জানা গেছে। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন কেইতা। তবে মালিতে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কারণে জনরোষের মুখে পড়েন তিনি।

মালিতে এর আগে ২০১২ সালে বড় ধরনের বিদ্রোহ হয়। সেই সময় থেকেই দেশটিতে জিহাদিদের প্রভাব বাড়তে থাকে। শুরু হয় সাম্প্রদায়িক সমস্যা। মালির তিন প্রতিবেশী দেশ আলজেরিয়া, নাইজার এবং মৌরিতানিয়াও কয়েক বছর ধরে একই সমস্যায় ভুগছে।