শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া নিয়ে যা ভাবছে ভারত

  • Update Time : ০৭:০৩:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / 4

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন প্রায় আড়াই মাস হয়েছে। এই সময়জুড়ে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন বলেই জানা গেছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত যাওয়া ছোট বোন রেহানা দিল্লিতে নামার পর থেকে কীভাবে আছেন, কোথায় আছেন তা নিয়ে ভারত সরকারের মুখপাত্র, মন্ত্রী বা নীতি-নির্ধারকরা আজ পর্যন্ত একটি শব্দও খরচ করেননি।

তবে গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন। এর ফলে শেখ হাসিনার আরব আমিরাতে যাওয়ার যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল। তা সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে দেশটির সরকার সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রাখতে সফল হয়েছে এটা যেমন ঠিক, তাকে কতদিন ভারতে রাখতে হবে সে ব্যাপারে দিল্লি এখনও পুরোপুরি অন্ধকারে।

দিল্লির সাউথ ব্লকের একজন শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা মনে করছেন, বেশ লম্বা সময়ের জন্যই শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকতে দিতে হবে। সেভাবেই সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তাহলে অতীতে যেভাবে তিব্বতি ধর্মগুরু দালাই লামা বা আফগান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহর স্ত্রী-সন্তানদের ভারত ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’ বা রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে? এক্ষেত্রে সরাসরি কোনো উত্তর পাওয়া না গেলেও বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-

ভারতের চোখে এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা হলেন একজন ‘গেস্ট, বাট আন্ডার কমপালশন!’ অর্থাৎ তিনি রাষ্ট্রের একজন সম্মানিত অতিথি– যাকে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ভারতে চলে আসতে হয়েছে। এখন এই ‘অতিথি’র স্ট্যাটাসেই তাকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এ দেশে রেখে দেয়া যেতে পারে– ভারতের তাতে কোনো অসুবিধা নেই। দেশের পুরনো বন্ধু ও অতিথি হিসেবে তিনি সব প্রাপ্য সম্মানই পাবেন।

দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি অন্যরকম হলে অন্য কিছু ভাবা যাবে– কিন্তু এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম দেয়ার কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি নিজেও অ্যাসাইলামের জন্য কোনো আবেদন করেননি। কিন্তু যদি সত্যিই পরে সেরকম কোনো প্রস্তাব আসে, ভারত সরকার জানে এ ব্যাপারে দেশের সব দলই একমত হবে এবং শেখ হাসিনাকে অ্যাসাইলাম দেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করা কোনো সমস্যাই হবে না। কিন্তু এখনই আগ বাড়িয়ে এরকম কোনো পদক্ষেপ দিল্লি নিতে চাইছে না।

ফলে এক কথায় বলতে গেলে, আপাতত ভারত শেখ হাসিনাকে ‘আতিথেয়তা’ দিতে চাইছে – ‘আশ্রয়’ নয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া নিয়ে যা ভাবছে ভারত

Update Time : ০৭:০৩:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন প্রায় আড়াই মাস হয়েছে। এই সময়জুড়ে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন বলেই জানা গেছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত যাওয়া ছোট বোন রেহানা দিল্লিতে নামার পর থেকে কীভাবে আছেন, কোথায় আছেন তা নিয়ে ভারত সরকারের মুখপাত্র, মন্ত্রী বা নীতি-নির্ধারকরা আজ পর্যন্ত একটি শব্দও খরচ করেননি।

তবে গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন। এর ফলে শেখ হাসিনার আরব আমিরাতে যাওয়ার যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল। তা সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে দেশটির সরকার সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রাখতে সফল হয়েছে এটা যেমন ঠিক, তাকে কতদিন ভারতে রাখতে হবে সে ব্যাপারে দিল্লি এখনও পুরোপুরি অন্ধকারে।

দিল্লির সাউথ ব্লকের একজন শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা মনে করছেন, বেশ লম্বা সময়ের জন্যই শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকতে দিতে হবে। সেভাবেই সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তাহলে অতীতে যেভাবে তিব্বতি ধর্মগুরু দালাই লামা বা আফগান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহর স্ত্রী-সন্তানদের ভারত ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’ বা রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে? এক্ষেত্রে সরাসরি কোনো উত্তর পাওয়া না গেলেও বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-

ভারতের চোখে এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা হলেন একজন ‘গেস্ট, বাট আন্ডার কমপালশন!’ অর্থাৎ তিনি রাষ্ট্রের একজন সম্মানিত অতিথি– যাকে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ভারতে চলে আসতে হয়েছে। এখন এই ‘অতিথি’র স্ট্যাটাসেই তাকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এ দেশে রেখে দেয়া যেতে পারে– ভারতের তাতে কোনো অসুবিধা নেই। দেশের পুরনো বন্ধু ও অতিথি হিসেবে তিনি সব প্রাপ্য সম্মানই পাবেন।

দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি অন্যরকম হলে অন্য কিছু ভাবা যাবে– কিন্তু এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম দেয়ার কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি নিজেও অ্যাসাইলামের জন্য কোনো আবেদন করেননি। কিন্তু যদি সত্যিই পরে সেরকম কোনো প্রস্তাব আসে, ভারত সরকার জানে এ ব্যাপারে দেশের সব দলই একমত হবে এবং শেখ হাসিনাকে অ্যাসাইলাম দেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করা কোনো সমস্যাই হবে না। কিন্তু এখনই আগ বাড়িয়ে এরকম কোনো পদক্ষেপ দিল্লি নিতে চাইছে না।

ফলে এক কথায় বলতে গেলে, আপাতত ভারত শেখ হাসিনাকে ‘আতিথেয়তা’ দিতে চাইছে – ‘আশ্রয়’ নয়।