ওয়ান ব্যাংক থেকে সাঈদ হোসেনকে অপসারণের নির্দেশ

  • Update Time : ১২:৫০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 24

ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে বেসরকারি ওয়ান ব্যাংক পিএলসির উদ্যোক্তা পরিচালক পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।

ঋণ খেলাপের অভিযোগে মামলায় শুনানি শেষে এ আদেশ দেন চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সাঈদ ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও তিনি এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও তিনি। এ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেড ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের ঋণখেলাপি হন। খেলাপি পাওনা আদায়ে সাউথ-ইস্ট ব্যাংক চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছিল।

চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত সূত্র জানিয়েছে, ২০০১ সালে এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সাউথ-ইস্ট ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নেন সাঈদ হোসেন চৌধুরী। পরে ২০২২ সালে ঋণখেলাপিতে পরিণত হন। সাউথ-ইস্ট ব্যাংক ২০২২ সালে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। বর্তমানে ব্যাংকটির সুদসহ খেলাপি পাওনার পরিমাণ ১৫ কোটি তিন লাখ টাকার বেশি। মামলায় বিবাদী করা হয় এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেড, সাঈদ হোসেন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীকে।

এ ছাড়াও সাঈদ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৭১ কোটি ৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকার ঋণ খেলাপের অভিযোগে আরও একটি মামলা রয়েছে। সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের মামলায় ব্যাংকের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তাকে ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত এক আদেশে সোমবার আদালত বলেছেন, ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় সাঈদ হোসেন চৌধুরী ওয়ান ব্যাংকের একজন পরিচালক। একজন ঋণ খেলাপি ব্যক্তি ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনও ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকার যোগ্য নন। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সাঈদ ওয়ান ব্যাংকের ওই পদে নিয়োজিত আছেন, যা ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসনের ঘাটতি স্পষ্ট করে তোলে। ঋণ খেলাপি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) নাম অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পরও ওয়ান ব্যাংকে সাঈদ হোসেন চৌধুরীর ডিরেক্টরের পদ বহাল থাকায় খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাকে ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস্ থেকে অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদেশের কপি গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর পাঠানোর জন্য বলা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ওয়ান ব্যাংক থেকে সাঈদ হোসেনকে অপসারণের নির্দেশ

Update Time : ১২:৫০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে বেসরকারি ওয়ান ব্যাংক পিএলসির উদ্যোক্তা পরিচালক পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।

ঋণ খেলাপের অভিযোগে মামলায় শুনানি শেষে এ আদেশ দেন চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সাঈদ ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও তিনি এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও তিনি। এ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেড ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের ঋণখেলাপি হন। খেলাপি পাওনা আদায়ে সাউথ-ইস্ট ব্যাংক চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছিল।

চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত সূত্র জানিয়েছে, ২০০১ সালে এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সাউথ-ইস্ট ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নেন সাঈদ হোসেন চৌধুরী। পরে ২০২২ সালে ঋণখেলাপিতে পরিণত হন। সাউথ-ইস্ট ব্যাংক ২০২২ সালে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। বর্তমানে ব্যাংকটির সুদসহ খেলাপি পাওনার পরিমাণ ১৫ কোটি তিন লাখ টাকার বেশি। মামলায় বিবাদী করা হয় এইচআরসি সিন্ডিকেট লিমিটেড, সাঈদ হোসেন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীকে।

এ ছাড়াও সাঈদ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৭১ কোটি ৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকার ঋণ খেলাপের অভিযোগে আরও একটি মামলা রয়েছে। সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের মামলায় ব্যাংকের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তাকে ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত এক আদেশে সোমবার আদালত বলেছেন, ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় সাঈদ হোসেন চৌধুরী ওয়ান ব্যাংকের একজন পরিচালক। একজন ঋণ খেলাপি ব্যক্তি ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনও ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকার যোগ্য নন। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সাঈদ ওয়ান ব্যাংকের ওই পদে নিয়োজিত আছেন, যা ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসনের ঘাটতি স্পষ্ট করে তোলে। ঋণ খেলাপি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) নাম অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পরও ওয়ান ব্যাংকে সাঈদ হোসেন চৌধুরীর ডিরেক্টরের পদ বহাল থাকায় খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাকে ওয়ান ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস্ থেকে অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদেশের কপি গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর পাঠানোর জন্য বলা হয়।