মোট কত বছর সাজা ভোগ করবেন ইমরান, জানালেন বিশেষজ্ঞরা

  • Update Time : ০৩:৪৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / 114

তোশাখানা মামলায় ৩১ জানুয়ারি ১৪ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে। এর আগেরদিন অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি সাইফার মামলায় ইমরানের ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয়।এই দুই মামলার রায়ের পর ইমরান খান মোট কত বছর জেলে কাটাবেন? ১৪ বছর না ২৪ বছর? পাকিস্তানভিত্তিক গণমাধ্যম জিও টিভি এই সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আইন বিশেষজ্ঞ এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারকগণ মনে করেন, দুই রায় মিলিয়ে ইমরান খানের কারাদণ্ড সমবর্তী হবে। আইন বিশ্লেষকরা মনে করেন, কারাদণ্ডটি সমবর্তী হবে নাকি সমন্বিত হবে তা বিচারক রায়ে উল্লেখ করবেন।

সমবর্তী দণ্ডতে একাধিক শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হয়। আর সমন্বিত দণ্ডের ক্ষেত্রে পূর্বের দণ্ড শেষ হওয়ার পর নতুন দণ্ড কার্যকর হয়।

আইনি বিশেষজ্ঞ ওয়াজিহুদ্দিন আহমেদ বলেন, শাস্তি সমবর্তী হবে নাকি সমন্বিত হবে তা আদালতের আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। ইমরান খানের মামলায় যদি আদালত সমবর্তী দণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে, তবে তাকে সর্বাধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এই মামলায় ইমরান খান কত দ্রুত জামিন পাবে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ওয়াজিহ বলেন, যদি দেশে কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলমান থাকে এবং যেকোনো জাতীয় নেতার বিচার প্রক্রিয়াধীন থাকে, তবে তার মামলার আপিলের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে হয় মামলার শুনানি দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে অথবা দণ্ড আপাতত স্থগিত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই মামলাগুলোর বিচারিক পদ্ধতি হতাশাজনক। এভেনফিল্ড মামলার মতো ইমরান খানের মামলায়ও অনেক বেশি তড়িঘড়ি দেখা গেছে।

প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির প্রেসিডেন্ট সিনেটর কামরান মুর্তাজা বলেন, যখন একাধিক দণ্ডাদেশ বা দণ্ড হয়, তখন আদালত দণ্ড সমবর্তী না সমন্বিত হবে তা সর্বশেষ রায়ে পরিষ্কার করে। সাধারণত, নিয়ম হলো আদালত বড় অপরাধ বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সমন্বিত শাস্তি দিয়ে থাকে। ইমরান খানের মামলায়, এটি সমবর্তী দণ্ড হবে এবং তিনি কেবল সর্বাধিক দণ্ডটি ভোগ করবেন।

মুর্তাজা আরো বলেন, যদি কোন কারণে শাস্তি সমবর্তী না সমন্বিত হবে তা আদালত পরিষ্কার না করে, তাহলে সিআরপিসির ৫৬১ নম্বর ধারার অধীনে অভিযুক্তের আইনজীবী সমবর্তী সাজার আবেদন করতে পারবেন।

এনএবি আইনে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় তোশাখানা মামলায় ইমরান খান কত তাড়াতাড়ি জামিন পেতে পারেন সে সম্পর্কে সিনেটর কামরান মুর্তজা বলেন, যদি এক বছরের মধ্যে তার আপিল নিষ্পত্তি না হয়, তবে তার আইনী দলকে সিআরপিসির ধারা ৪২৬ এর অধীনে জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে। কিন্তু যেহেতু এটি সর্বোচ্চ শাস্তি, সেক্ষেত্রে আইনজীবীরা কখনোই আগাম জামিনের নিশ্চয়তা দেন না। ইমরানের আবেদন তার পালা না আসা পর্যন্ত সারিতে থাকবে যাতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মোট কত বছর সাজা ভোগ করবেন ইমরান, জানালেন বিশেষজ্ঞরা

Update Time : ০৩:৪৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তোশাখানা মামলায় ৩১ জানুয়ারি ১৪ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে। এর আগেরদিন অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি সাইফার মামলায় ইমরানের ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয়।এই দুই মামলার রায়ের পর ইমরান খান মোট কত বছর জেলে কাটাবেন? ১৪ বছর না ২৪ বছর? পাকিস্তানভিত্তিক গণমাধ্যম জিও টিভি এই সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আইন বিশেষজ্ঞ এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারকগণ মনে করেন, দুই রায় মিলিয়ে ইমরান খানের কারাদণ্ড সমবর্তী হবে। আইন বিশ্লেষকরা মনে করেন, কারাদণ্ডটি সমবর্তী হবে নাকি সমন্বিত হবে তা বিচারক রায়ে উল্লেখ করবেন।

সমবর্তী দণ্ডতে একাধিক শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হয়। আর সমন্বিত দণ্ডের ক্ষেত্রে পূর্বের দণ্ড শেষ হওয়ার পর নতুন দণ্ড কার্যকর হয়।

আইনি বিশেষজ্ঞ ওয়াজিহুদ্দিন আহমেদ বলেন, শাস্তি সমবর্তী হবে নাকি সমন্বিত হবে তা আদালতের আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। ইমরান খানের মামলায় যদি আদালত সমবর্তী দণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে, তবে তাকে সর্বাধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এই মামলায় ইমরান খান কত দ্রুত জামিন পাবে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ওয়াজিহ বলেন, যদি দেশে কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলমান থাকে এবং যেকোনো জাতীয় নেতার বিচার প্রক্রিয়াধীন থাকে, তবে তার মামলার আপিলের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে হয় মামলার শুনানি দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে অথবা দণ্ড আপাতত স্থগিত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই মামলাগুলোর বিচারিক পদ্ধতি হতাশাজনক। এভেনফিল্ড মামলার মতো ইমরান খানের মামলায়ও অনেক বেশি তড়িঘড়ি দেখা গেছে।

প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির প্রেসিডেন্ট সিনেটর কামরান মুর্তাজা বলেন, যখন একাধিক দণ্ডাদেশ বা দণ্ড হয়, তখন আদালত দণ্ড সমবর্তী না সমন্বিত হবে তা সর্বশেষ রায়ে পরিষ্কার করে। সাধারণত, নিয়ম হলো আদালত বড় অপরাধ বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সমন্বিত শাস্তি দিয়ে থাকে। ইমরান খানের মামলায়, এটি সমবর্তী দণ্ড হবে এবং তিনি কেবল সর্বাধিক দণ্ডটি ভোগ করবেন।

মুর্তাজা আরো বলেন, যদি কোন কারণে শাস্তি সমবর্তী না সমন্বিত হবে তা আদালত পরিষ্কার না করে, তাহলে সিআরপিসির ৫৬১ নম্বর ধারার অধীনে অভিযুক্তের আইনজীবী সমবর্তী সাজার আবেদন করতে পারবেন।

এনএবি আইনে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় তোশাখানা মামলায় ইমরান খান কত তাড়াতাড়ি জামিন পেতে পারেন সে সম্পর্কে সিনেটর কামরান মুর্তজা বলেন, যদি এক বছরের মধ্যে তার আপিল নিষ্পত্তি না হয়, তবে তার আইনী দলকে সিআরপিসির ধারা ৪২৬ এর অধীনে জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে। কিন্তু যেহেতু এটি সর্বোচ্চ শাস্তি, সেক্ষেত্রে আইনজীবীরা কখনোই আগাম জামিনের নিশ্চয়তা দেন না। ইমরানের আবেদন তার পালা না আসা পর্যন্ত সারিতে থাকবে যাতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।