নিখোঁজের একদিন পর: রাণীশংকৈলে নদী থেকে মা ও দু’শিশুর মরদেহ উদ্ধার

  • Update Time : ০১:৪৩:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 216

হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল( ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের তীরনই নদী থেকে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক সকাল ৭:৩০ মিনিটে নাসিমা বেগম(৩৩) ও তার দুই শিশুপুত্র সাফায়েত (৪) ও শাওন (৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত নাসিমা ওই ইউনিয়নের কাশুয়াডাঙ্গা (কাশিডাঙ্গা) গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুর রহিমের স্ত্রী। সরেজমিনে গিয়ে পারিবারিক ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে নাসিমা ও তার দুই শিশু সন্তানসহ তীরনই নদীর ধারে ছাগল চড়াতে যায়। সেখানেই (নদীতে) তারা দুপুরের গোসল করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। পরে সন্ধা হলেও নাসিমাসহ তার দুই শিশুপুত্র বাড়ীতে না ফেরায় নাসিমার স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন খুঁজাখুঁজি করেন। অনেক রাত পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যানসহ নদী এলাকাসহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে খোঁজাখুঁজি শেষে পরের দিন বুধবার সকালে নাসিমার শ্বশুর সামসুল হক তীরনই নদীর ধারে নাসিমাসহ দুই শিশু সন্তানকে বালু’র মধ্যে আটকা থাকা অবস্থায় তাদের দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় তাদের মরদেহ নদী থেকে তুলে। নাসিমার মা খালেদা ও বোন এটিকে হত্যা বলছেন। খালেদা বেগম বলেন, তার জামাই একজন জুয়া খেলোয়াড় জুয়ার টাকার জন্য আমার মেয়েকে প্রায় অত্যাচার করতো। অপরদিকে নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম ও শ্বশুর সামসুল হক ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবী করছেন। দুই পক্ষের ভিন্ন ভিন্ন দাবী হওয়ায় তিনটি মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। আসলে এটি কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা?
এ বিষয়ে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল জানান, গত মঙ্গলবার বিকালে নাসিমা ও তার দুই শিশুপুত্রকে লোকজন তীরনই নদী তীরে ছাগল চরাতে দেখে। বিকাল ৪ টার পর তাদেরকে আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে তাদেরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে সন্ধ্যার পরে আমি ওই নদীতে লোকজন নামিয়ে দিয়ে তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। ইতোমধ্যে থানায় খবর দিই। প্রায় সারারাত নদীতে তাদেরকে খোঁজা হয়। সকাল ৭:৩০ মিনিটে লোকজন তাদের তিন জনেরই লাশ তীরনই নদী থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের সময় শিশু দুটির হাত মায়ের শাড়ির আঁচল দিয়ে বাঁধা ছিল। তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বকুল এর পেছনে পারিবারিক ঝামেলা থাকতে পারে বলে অনুমান করেন।
রাণীশংকৈল থানার ওসি গুলফামুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে এএসপি সার্কেল স্যার রেজাউল হকসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে আছেন। এএসপি রেজাউল হক মুঠোফোনে জানান, আমরা এখনো ঘটনাস্থলে তদন্তে আছি। লাশের সুরতহাল শেষে যথারীতি পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানো হবে । সে রিপোর্টের পর এ মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নিখোঁজের একদিন পর: রাণীশংকৈলে নদী থেকে মা ও দু’শিশুর মরদেহ উদ্ধার

Update Time : ০১:৪৩:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল( ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের তীরনই নদী থেকে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক সকাল ৭:৩০ মিনিটে নাসিমা বেগম(৩৩) ও তার দুই শিশুপুত্র সাফায়েত (৪) ও শাওন (৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত নাসিমা ওই ইউনিয়নের কাশুয়াডাঙ্গা (কাশিডাঙ্গা) গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুর রহিমের স্ত্রী। সরেজমিনে গিয়ে পারিবারিক ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে নাসিমা ও তার দুই শিশু সন্তানসহ তীরনই নদীর ধারে ছাগল চড়াতে যায়। সেখানেই (নদীতে) তারা দুপুরের গোসল করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। পরে সন্ধা হলেও নাসিমাসহ তার দুই শিশুপুত্র বাড়ীতে না ফেরায় নাসিমার স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন খুঁজাখুঁজি করেন। অনেক রাত পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যানসহ নদী এলাকাসহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে খোঁজাখুঁজি শেষে পরের দিন বুধবার সকালে নাসিমার শ্বশুর সামসুল হক তীরনই নদীর ধারে নাসিমাসহ দুই শিশু সন্তানকে বালু’র মধ্যে আটকা থাকা অবস্থায় তাদের দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় তাদের মরদেহ নদী থেকে তুলে। নাসিমার মা খালেদা ও বোন এটিকে হত্যা বলছেন। খালেদা বেগম বলেন, তার জামাই একজন জুয়া খেলোয়াড় জুয়ার টাকার জন্য আমার মেয়েকে প্রায় অত্যাচার করতো। অপরদিকে নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম ও শ্বশুর সামসুল হক ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবী করছেন। দুই পক্ষের ভিন্ন ভিন্ন দাবী হওয়ায় তিনটি মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। আসলে এটি কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা?
এ বিষয়ে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল জানান, গত মঙ্গলবার বিকালে নাসিমা ও তার দুই শিশুপুত্রকে লোকজন তীরনই নদী তীরে ছাগল চরাতে দেখে। বিকাল ৪ টার পর তাদেরকে আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে তাদেরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে সন্ধ্যার পরে আমি ওই নদীতে লোকজন নামিয়ে দিয়ে তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। ইতোমধ্যে থানায় খবর দিই। প্রায় সারারাত নদীতে তাদেরকে খোঁজা হয়। সকাল ৭:৩০ মিনিটে লোকজন তাদের তিন জনেরই লাশ তীরনই নদী থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের সময় শিশু দুটির হাত মায়ের শাড়ির আঁচল দিয়ে বাঁধা ছিল। তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বকুল এর পেছনে পারিবারিক ঝামেলা থাকতে পারে বলে অনুমান করেন।
রাণীশংকৈল থানার ওসি গুলফামুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে এএসপি সার্কেল স্যার রেজাউল হকসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে আছেন। এএসপি রেজাউল হক মুঠোফোনে জানান, আমরা এখনো ঘটনাস্থলে তদন্তে আছি। লাশের সুরতহাল শেষে যথারীতি পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানো হবে । সে রিপোর্টের পর এ মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।